গলা ব্যথা, খুকখুকে কাশির সময় এক কাপ গরম আদা চা যেন তুলনাহীন। তাতে চা পাতা থাকা বা না থাক— গলায় গরম তরল গেলেই আরামবোধ হয়। আবার সর্দি, কাশি কমাতে তুলসীর গুরুত্বও কম নয়। সেই কবে থেকে জ্বরজারির সময়, কাশি হলে মা-ঠাকুরমারা শিশুদের তুলসীপাতার রস মধু মিশিয়ে খাওয়াতেন।
আদা না তুলসী— বর্ষার সময় সর্দি, কাশিতে কোনটি বেশি উপকারী?
আদা চা: পাবমেডে প্রকাশিত ২০২১ সালে আদার গুণাগুণ সংক্রান্ত একটি গবেষণাপত্রে প্রকাশ, এতে থাকা জিনজেরোলে রয়েছে প্রদাহনাশক উপাদান।এটি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট হিসাবেও কাজ করে।ফলে ঠান্ডা লেগে গলা খুসখুস করলে, কাশি হলে আদা দারুণ কাজ দেয়। তা ছাড়া, গা-বমি ভাব কাটাতেও আদা অব্যর্থ। হজমকারক উপাদান রয়েছে এতে। পেট ফাঁপা, হজমের সমস্যাতেও আদা চা উপকারী।
তুলসী চা: পাবমেডে ২০১৪ সালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে ভিটামিন, সি-তে ভরপুর তুলসীতে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান। ভাইরাস এবং ব্যাক্টেরিয়ার সঙ্গে প্রাথমিক ভাবে লড়াইয়ের ক্ষমতা রয়েছে এই ভেষজে।সর্দি-কাশিতে তুলসী চা-ও দারুণ উপকারী। তুলসী চা নিয়ম করে খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি পায়। বর্ষাকালে ভাইরাল, ব্যাক্টেরিয়াল সংক্রমণ থেকে রেহাই পেতে নিয়মিত তুলসী চা খাওয়া ভাল। তুলসীপাতা মুখগহ্বরের জীবাণু তাড়াতে সাহায্য করে। প্রতি দিন সকালে কয়েকটি তুলসীপাতা চিবিয়ে খেলে মুখের ক্ষতিকর ব্যাক্টিরিয়া ধ্বংস হয়। তাতেই কমে দুর্গন্ধ। র্দি-কাশি বাড়লে অনেক সময়ে তুলসীপাতা খেতে বলা হয়। এই পাতায় এমন কিছু উপাদান আছে, যাতে রয়েছে ফুসফুসের স্বাস্থ্যরক্ষা করার ক্ষমতা।
এগিয়ে কে?
তুলসী এবং আদা— পুষ্টিগুণ, উপকারিতায় কেউ কারও চেয়ে কম নয়। বর্ষার রোগ সংক্রমণ প্রতিরোধে আদা এবং তুলসী — দুই-ই সহায়ক। বর্ষা হোক বা শীত— আচমতা ঠান্ডা লেগে গলা ব্যথা, কাশি হলে আদা চা স্বস্তি দিতে পারে। তবে তুলসীতে রয়েছে রোগ প্রতিরোধকারী ক্ষমতা। ফলে এই ভেষজ ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাসের আক্রমণ প্রতিহত করার ক্ষমতা রাখে। বর্ষায় নিয়মিত তুলসী চা খেলে, সর্দি-কাশি বা ছোটখাটো সংক্রমণ ঠেকানো যেতে পারে।
কী ভাবে বানাবেন?
অনেকে চায়ের মধ্যে আদা এবং তুলসী পাতা ফেলে ফুটিয়ে নেন। তবে যথাযথ উপকারিতা পেতে হলে চা পাতা বাদ দিয়ে শুধু আদা থেঁতো করে জল ফুটিয়ে নিতে হবে। একই নিয়ম তুলসী চায়ের ক্ষেত্রও। তবে উপকারিতার কথা ভাবলে আদা এবং তুলসী জলে একসঙ্গে ফুটিয়ে, সেই চা-ও খাওয়া যায়।
মনে রাখা দরকার উপকারী হলেও, কোনওটি বেশি খাওয়া ঠিক নয়। দিনে বড়জোড় এক থেকে দু’বার আদা বা তুলসী চায়ে চুমুক দেওয়া যেতে পারে।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। ঘরোয়া টোটকা কাজের হলেও, অসুস্থ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।