কোন কথা কী ভাবে বললে তা শিশুর মনে আঘাত করবে না, তা জানতে হবে অভিভাবককেই। ছবি: সংগৃহীত।
কাজের চাপ এবং নিজেদের নানা সমস্যা সামলে সন্তান মানুষ করতে গিয়ে অনেক সময়েই মেজাজ হারিয়ে ফেলেন অভিভাবকরা। সন্তানের জেদ, আবদার সামাল দিতে গিয়ে না চাইতেই কখনও জিনিসে ভরিয়ে দিয়েছেন, আবার কখনও এমন কড়া শাসনে রেখেছেন, যে খুদের জেদ আরও বেড়ে গিয়েছে। শাসন করতে গিয়ে মেজাজ হারিয়ে এমন কিছু কথা বলে ফেললেন যে, তার জের চলল বহু দিন।
সম্প্রতি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা অনুযায়ী, শিশুদের কড়া শাসনে রাখলে তাঁদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি মানসিক সমস্যায় ভোগার প্রবণতা তৈরি হয়।
৭৫০০ জন শিশুকে নিয়ে করা ইউনিভার্সিটি অফ কেমব্রিজ এবং ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিনের যৌথ সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, তিন বছর বয়স থেকে অভিভাবকের কড়া শাসনে থাকা শিশুরা তাঁদের সমবয়সিদের তুলনায় মানসিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ১.৫ শতাংশ বেশি। ৯ বছর বয়সে তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখা যায়, অধিকাংশই মানসিক রোগে আক্রান্ত। তাঁরা কেউ উদ্বেগে ভুগছেন, কেউ সমাজের সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ করে বাড়িতে একা থাকতে পছন্দ করছেন।
মনোবিদরা বলছেন, সব শিশুর ক্ষেত্রেই যে এমনটা হবে, তা নয়। কিন্তু অনেক শিশুই সব কথা মন খুলে বলতে পারে না। সে ক্ষেত্রে অনেক কথাই তাদের মনের গভীরে ক্ষত সৃষ্টি করে। সন্তানকে মানুষ করতে গেলে শাসন অবশ্যই করতে হবে। কিন্তু কোন কথা কী ভাবে বললে তা শিশুর মনে আঘাত করবে না, তা জানতে হবে অভিভাবককেই।
বয়ঃসন্ধিকালীন অবস্থায় অবসাদে ভোগার আশঙ্কাও যথেষ্ট। বিশেষ করে কোনও শারীরিক বা আবেগজনিত জোরাল আঘাত (ট্রমা) বা হেনস্থার ফলে এমন হতে পারে। কখন বা কী অবস্থায় এক জন মনোবিদের কাছে যেতেই হবে, পরামর্শ নিয়ে সঠিক রোগ চিহ্নিত করতে হবে, তারও কিছু লক্ষণ রয়েছে। যেমন—
ঘুমের ধরনে পরিবর্তন: বেশি ঘুমোনো, খুব কম ঘুমোনো, ঘুমের মধ্যেও অস্থিরতা।
খাদ্যাভ্যাসে আমূল পরিবর্তন: খুব বেশি খাওয়া, কম খাওয়া, বার বার খাওয়া।
সামাজিক ব্যবহারে পরিবর্তন: রাগের সঙ্গে মারাত্মক আবেগপ্রবণতা, একটানা কান্না, আগ বাড়িয়ে ঝগড়া করা। বন্ধুবান্ধব এবং পরিবার থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখা।
সব কিছুতেই অনীহা: ক্লান্তি অনুভব করা, আশাহীনতা, অসহায়তায় ভোগা, দুশ্চিন্তায় ভোগা। পছন্দের কাজ, হবি, খাবার, খেলা, ক্লাস, বন্ধুদের সম্পর্কে উৎসাহ হারিয়ে ফেলা
পড়াশোনা খারাপ হতে থাকা: মনোযোগ কমা, আগের তুলনায় পড়াশোনার কাজে গতি কমে আসা, স্কুলে যেতে অনীহা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy