আগে সুপার মার্কেটে গেলে চোখে পড়ত, এখন পাড়ার ফলের দোকানের ঝুড়িতেও উঁকি দেয় কিউয়ি। এই ফলকে কোনও মতেই ভারতীয় ফল বলা যায় না। মূলত নিউজ়িল্যান্ড, ইতালি, ইরান, গ্রিস, চিলি, তুরস্ক, ফ্রান্স, আমেরিকা, চিন দেশে এর উৎপাদন বেশি। তবে ইদানীং কিউয়ির চাহিদা বেড়েছে ভারতেও। ভারতের সিকিম, মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশ এমনকি, পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিঙেও কিউয়ি উৎপাদন হচ্ছে। কিউয়ির পুষ্টিগুণও প্রচুর। রোগপ্রতিরোধ করতেও কিউয়ির ভূমিকা অনেক। ভিটামিন এ, সি, বি ৬, বি ১২, ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং আয়রনের মতো খনিজ রয়েছে এই ফলে। নিয়মিত কিউয়ি খেলে শরীরের কোন কোন উপকারে হয়?
১) চোখের জন্য খুব ভাল কিউয়ি। টক-মিষ্টি স্বাদের এই ফল চোখের স্নায়ুজনিত সমস্যা রুখে দিতে পারে।
২) যাঁদের রোগ প্রতিরোধ শক্তি দুর্বল তাঁরাও নিয়মিত কিউয়ি খেতে পারেন। বর্ষায় সংক্রমণজনিত নানা ধরনের রোগের সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করবে এই ফল।
৩) কিউয়িতে পটাশিয়াম এবং ফাইবারের পরিমাণ বেশি। তাই এই ফল নিয়মিত খেলে হার্ট ভাল থাকে।
৪) কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন? রোজ দু-চার টুকরো কিউয়ি খেতে শুরু করুন।
৫) দীর্ঘ দিন ধরে ডায়াবিটিসের সঙ্গে ঘর করছেন? ডায়েটে রাখুন কিউয়ি। রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই ফলের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
কিউয়ি খেলে ডেঙ্গি রোগীর প্লেটলেট বাড়ে?
চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীর মতে, কিউয়ি খেলেই যে ডেঙ্গি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে, এমন কিন্তু নয়। কিউয়ি প্লেটলেট বা অণুচক্রিকা সরাসরি বৃদ্ধি করতে পারে, কোনও গবেষণায় কিন্তু এখনও পর্যন্ত এই দাবি করা হয়নি। তবে চিকিৎসক জানান, কিউয়িতে ভিটামিন সি থাকে, তাই শরীর চাঙ্গা রাখতে রোগীকে এই ফল দেওয়াই যায়। তবে দাম দিয়ে কিউয়ি, অ্যাভোকাডো না কিনে যে কোনও সাধারণ মরসুমি ফল, মুসাম্বি লেবু, পেয়ারা, আপেল— এই সব খেলেও রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন।
চার দিকে ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তের সুযোগে বাজারে কিউয়ির দাম এখন আকাশছোঁয়া। কলকাতার ফলের বাজারে একেকটি কিউয়ি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকায়। অনলাইনে দাম আরও বেশি। ৩টি কিউয়ি বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকায়।
বেশি করে কিউয়ি খেলেই যে ডেঙ্গি থেকে দ্রুত মুক্তি পাবেন, এই ধারণা ভুল, এমনটাই মত পুষ্টিবিদ অর্পিতা রায়ের। অর্পিতা বলেন, ‘‘ডেঙ্গি থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে হলে শরীরে যেন জলের ঘাটতি না হয়, সে দিকে বেশি করে নজর রাখা জরুরি। এর জন্য ডায়েটে যে কোনও রসালো ফল, ফলের রস, ডাবের জল রাখা যেতে পারে। দাম দিয়ে কিউয়ি না কিনলেও চলবে।’’