Advertisement
E-Paper

জন্ম-বধিরতা সারবে, দিন কয়েকের মধ্যেই শুনতে পারবে শিশু, জিন থেরাপিতে অসাধ্যসাধন করছেন গবেষকেরা

জন্মগত বধিরতা হোক বা কমবয়সিদের শোনার সমস্যা, জিন থেরাপিতেই নিরাময় সম্ভব। জিনের এই থেরাপি আবার হবে ভাইরাস দিয়ে। নতুন কী গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৫ ০৯:০৩
Hearing improvements were both rapid and significant after patients received the gene therapy

জিন থেরাপিতে বধির শিশুও শুনতে পারবে, যন্ত্রের প্রয়োজন হবে না। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্রবণশক্তি কমে আসার বিষয়টি স্বাভাবিক ও খুবই পরিচিত ঘটনা। কিন্তু কমবয়সিদের বধিরতা বা কনজেনিটাল অর্থাৎ, জন্মগত বধিরতা খুবই চিন্তার বিষয়। জেনেটিক কারণে, মাতৃগর্ভে থাকাকালীন মায়ের কোনও সংক্রমণ হলে, কোনও দুর্ঘটনার কারণে, শিশুদের জন্ডিস বা মেনিনজাইটিসের মতো অসুখ হলে কমবেশি শ্রবণশক্তি চলে যেতে পারে শৈশবে। জন্মগত বধিরতার চিকিৎসা খরচসাপেক্ষ। তার নিরাময়ও যে সম্ভব, তা-ও বলা যায় না। কিন্তু এখন চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতিতে সবটাই সম্ভব বলে জানাচ্ছেন গবেষকেরা। জিন থেরাপিতে বধির শিশুও কয়েক দিনের মধ্যে শব্দ শুনতে পাবে স্পষ্ট।

বধিরতার কারণ যখন জিন

বধিরতা কেন আসে, তার কারণ অনেক। হবু মায়ের কোনও অসুখ যেমন মাম্পস, রুবেলা, হারপিস, চিকেন পক্স বা টক্সোপ্লাসমোসিসের মতো ভাইরাস ঘটিত সংক্রমণ হলে শিশু জন্মগত ভাবে শ্রবণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। মা যদি এমন কিছু ওষুধ খান, যার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে, তখন শিশু বধির হয়ে জন্মাতে পারে। আবার অন্তঃকর্ণের গঠনগত কোনও ত্রুটি থাকলেও শিশু বধির হতে পারে। শোনার জন্য প্রয়োজনীয় অডিটরি নার্ভ। এই স্নায়ুর আশপাশে কোনও টিউমার থাকলে শোনার সমস্যা হয়। আঘাত বা অন্য কোনও কারণে কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হলে এবং সময়মতো চিকিৎসা না হলেও বধিরতা আসতে পারে।

তবে এই সব কারণের নেপথ্যে আরও একটি কারণ থেকে যায়, তা হল জিন। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুল এবং চিনের ফুডান ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা দাবি করেছেন, বধিরতার জন্য দায়ী ‘ওটিওএফ’ নামে একটি বিশেষ জিন। এই জিন থেকে এক রকম প্রোটিন তৈরি হয়, যার নাম ‘অটোফার্লিন’ । এই প্রোটিনের কাজ হল মস্তিষ্ক থেকে সঙ্কেত অন্তঃকর্ণে পৌঁছে দেওয়া আবার সেখান থেকে মস্তিষ্কে পাঠানো। যদি এই প্রোটিনের তারতম্য হয় এবং সংশ্লিষ্ট জিনটিতে মিউটেশন বা রাসায়নিক বদল ঘটে যায়, তখনই মস্তিষ্ক ও কানের মধ্যে আদান-প্রদানের বিষয়টি ব্যাহত হয়। ফলে শ্রবণশক্তি কমতে শুরু করে। গবেষকেরা ওই জিনটি নিয়েই গবেষণা করে দেখছেন, কী ভাবে জিনের মেরামত করে শ্রবণশক্তি আবার ফিরিয়ে আনা যায়।

জিন সারাতে ভাইরাস থেরাপি

জন্মগত ক্ষেত্রে এবং ১ থেকে ৮ বছর বয়স অবধি শিশুর বধিরতা সারাতে জিন থেরাপি কাজে আসতে পারে বলে দাবি করেছেন গবেষকেরা। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে কী ভাবে তা সম্ভব হবে, সে চেষ্টাও চলছে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, ‘ওটিওএফ’ জিনটিতে গলদ থাকলে তার মেরামতির জন্য ভাইরাস থেরাপি কাজে আসতে পারে। গবেষণাগারে তৈরি বিশেষ এক রকম ভাইরাসকে অন্তঃকর্ণে পাঠানো হবে। সেই ভাইরাসকে এমন ভাবে তৈরি করা হবে, যাতে সে সটান কানে ঢুকে জিনের ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলির মেরামত করতে পারে।

ভাইরাস থেরাপি কার্যকরী হবে কি না, তার পরীক্ষাও শুরু হয়েছে। ১ থেকে ২৪ বছর বয়সিদের উপর এই থেরাপির প্রয়োগ করা হচ্ছে। তাতে দেখা গিয়েছে, থেরাপিটি ঠিকমতো কাজ করলে দিন তিনেকের মধ্যেই শব্দ শুনতে পাচ্ছে শিশু ও কমবয়সিরা। যাঁদের সমস্যা বেশি, তাঁদের আর একটু সময় লাগছে। এই থেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও সামান্য। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, জিন থেরাপি কার্যকর হলে বধিরতার সমস্যারও নিরাময় করা সম্ভব হবে। তা হলে আর কানে যন্ত্র লাগিয়ে ঘোরার প্রয়োজন হবে না।

gene therapy deafness Deaf and Mute
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy