রাত পোহালেই জামাইষষ্ঠী। জামাই নতুন হোক কিংবা পুরনো— জামাইকে পঞ্চব্যঞ্জন সাজিয়ে খাওয়ানোই এই অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ। শুক্তো থেকে মাছ-মাংস— নিত্যনতুন রান্নায় জামাইয়ের মন জয় করার চেষ্টা করবেন অনেক শাশুড়িই। আর বছরের একটা দিন ডায়েট ভুলে, শরীরের কথা ভুলে পাঞ্জাবির হাতা গুটিয়ে, কব্জি ডুবিয়ে খেতেই চাইবেন জামাইয়েরা। পছন্দের খাবার অবশ্যই খাবেন, তবে স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে। ভূরিভোজের পরেই পেটফাঁপা, অম্বলের সমস্যা যেন না হয়, সে জন্য কিছু নিয়ম মানতেই হবে। অনেকেই রক্ষাকবচ হিসাবে সকালে খালি পেটে গ্যাসের ওষুধ খেয়ে নেন। তবে গ্যাসের ওষুধ যে সব সময় রক্ষা করবে, তা কিন্তু নয়। তার চেয়ে কী করতে হবে, সে উপায় বলে দিলেন পুষ্টিবিদ।
তাড়াহুড়ো করে খাবেন না
মানুষের শরীরে যে অম্ল থাকে, তার অনেক গুণ। এই অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে অম্লের পরিমাণ বেড়ে গেলে তখন হয় অম্বল। খুব বেশি তেলমশলা দেওয়া খাবার খেলে তা আরও বেড়ে যায়। তাড়াহুড়োয় খাবার ভাল করে না চিবিয়ে খেলেও কিন্তু হজমের সমস্যা বাড়ে, আর তা থেকে ‘হাইপার অ্যাসিডিটি’ মাথাচাড়া দেয়। তাই খাবার খেতে হবে মেপে ও সঠিক সময়ে। এমনটাই বললেন পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী। তাঁর পরামর্শ, পার্বণের দিন মানেই বেলা করে খেতে হবে তা নয়। বরং সঠিক সময়েই দুপুরের খাওয়া সারুন। আর খাবার ভাল করে চিবিয়ে খান।
মাছ-মাংস খেয়েই মিষ্টি নয়
ভারী খাবার খাওয়ার পরেই নরম পানীয় বা দুধের কোনও খাবার খাবেন না। অনেকেই কব্জি ডুবিয়ে মাছ বা মাংস খেয়ে উঠেই দুধ, মিষ্টি বা রাবড়ি খেয়ে ফেলেন। এর থেকেই অম্বলের সমস্যা বাড়ে। তাই মিষ্টি খেতে হলে, তা ঘণ্টাখানেক পরে খাওয়াই ভাল। আর নরম পানীয়ের বদলে জল-জিরা বা জোয়ান খেলে উপকার বেশি হবে।
ভূরিভোজের পরে ভাতঘুম বিপজ্জনক
খেয়ে উঠেই সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়বেন না। দুপুরের ভূরিভোজের পরে ঘুম অবশ্যই পাবে, তবে না শুয়ে চেষ্টা করুন হাঁটাহাঁটি করার। বজ্রাসনে ৫ মিনিট বসে থাকতে পারলে খাবার সহজেই হজম হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন:
সকাল সকাল ডিটক্স পানীয়
জামাইষষ্ঠীর দিন সকালের জলখাবার থেকেই ভূরিভোজ শুরু হয়ে যায় অনেকের। সে ক্ষেত্রে সকালে উঠেই যে কোনও ডিটক্স পানীয় খেয়ে নিতে হবে। পুদিনাপাতা, ধনেপাতা, মশলার মধ্যে আদা, দারচিনি, গোটা হলুদ, লবঙ্গ ইত্যাদি ভিজিয়েও ডিটক্স পানীয় তৈরি করা যায়। এই পানীয় খেলে হজম খুব ভাল হয়। গ্যাস-অম্বল বেশি হলে মৌরি-মেথি ভেজানো জল খুবই কার্যকরী হতে পারে। আগের দিন রাত থেকে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
বার বার চা-কফি নয়
ভূরিভোজ যে দিন থাকবে, সে দিন বার বার চা-কফি খাবেন না। অতিরিক্ত ক্যাফেইন অম্বলের সমস্যা বৃদ্ধি করতে পারে। চা যদি খেতেই হয়, তাতে এক টুকরো আদা ফেলে খান। দিনে ২-৩ লিটার জল খান। জল শরীরের অম্লকে বার করে দেয়। দুশ্চিন্তা যথাসম্ভব কম করুন, মনকে তাজা ও আনন্দে রাখার চেষ্টা করুন।