Advertisement
E-Paper

বসন্তে প্রথম পাতে থাকুক নিম-উচ্ছের মতো তেতো পদ, উপকারিতা নিয়ে বলছেন চিকিৎসক

বসন্তের খাদ্যতালিকায় তেতো পদের গুরুত্ব অপরিসীম। স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। কিন্তু কেন স্বাস্থ্যকর? কোন কোন তেতো এই সময়ে খাওয়া ভাল? সব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন চিকিৎসক।

food

ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২৫ ১৬:৫৪
Share
Save

জাপানে একটি প্রবাদ রয়েছে— ‘বসন্তে খাবার থালায় তেতো পরিবেশন করো’। এই প্রবাদের জন্মের কারণ, বসন্তে খাদ্যতালিকায় তেতোর গুরুত্ব অপরিসীম। স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। কিন্তু কেন স্বাস্থ্যকর? কেন গুরুজনেরা বিশেষ করে এই সময়ে খাবার পাতে তেতো পদ খেতে বলেন? কোন কোন তেতো এই সময়ে খাওয়া ভাল? সব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন মধুমেহর চিকিৎসক অভিজ্ঞান মাঝি।

আনন্দবাজার অনলাইনকে চিকিৎসক বললেন, ‘‘বসন্তকাল মানেই এক ঋতু থেকে অন্য ঋতুতে যাত্রা। এই সময়ে আবহাওয়া বদলায়। সেই সঙ্গে পরিবেশে ভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনাও বাড়ে। চিকেন পক্স, ফ্লু, ডায়েরিয়ার মতো একাধিক রোগ এই সময় হয়। তেতো খাবার এই সব রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে প্রাকৃতিক উপায়েই।’’

বাঙালির খাবার পাতে তেতো মানে নিম, উচ্ছে, করলা, সজনে ডাঁটা, সজনে ফুল, হেলেঞ্চা শাক, ব্রাহ্মীশাক, মেথি, থানকুনি ইত্যাদি। কিন্তু তেতো শুনলেই সিংহভাগ বাঙালি নাক সিঁটকিয়ে ওঠেন। সে কারণে গৃহস্থবাড়িতে ফোড়ন, মশলাপাতি দিয়ে যথাসম্ভব সুস্বাদু করে রান্না করা হয় তেতো সব্জিগুলি। তবে কেবল সব্জি নয়, কালমেঘও শরীরের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী।

food

ছবি: সংগৃহীত।

কী কী উপকারিতা রয়েছে তেতো খাবারের?

চিকিৎসকের কথায়, “তেতো খাবারের স্বাস্থ্য উপকারিতার তালিকা প্রস্তুত করলে শেষ হবে না। ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স রয়েছে এই খাবারগুলিতে। তেতোর মধ্যে প্রদাহরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তেতো খাবারগুলি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টও বটে। শরীরে ক্যালশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়ামের পরিমাণের ঘাটতি হলে তেতো খাবার সবচেয়ে কার্যকরী পথ্য। তা ছাড়া রক্তে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে এই ধরনের খাবার। হজমশক্তির উন্নতি হয়। এবং তেতো যত বেশি খাওয়া যায়, মুখের স্বাদ তত বাড়ে।''

ডিটক্সিফিকেশন: তিক্ত খাবার শরীর থেকে বর্জ্য এবং বিষাক্ত পদার্থ বার করতে বেশ কার্যকরী। তেতো খেলে লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়ে।

হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি: তেতো স্বাদ হজমশক্তি বাড়ায়। এর ফলে পাচনক্রিয়াও উন্নত হয়। তেতো খাবার পাতে শুরুতে দেওয়া হয়, কারণ তা খিদের বোধ এবং খাবারের প্রতি রুচি বাড়াতে সাহায্য করে।

রক্ত পরিশোধন: তিক্ত খাবার রক্তকে শুদ্ধ করতে সাহায্য করে এবং শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত মেদ বা টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে।

অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি: প্রদাহজনিত রোগের উপশম ঘটায় তেতো খাবার। এর ফলে স্নায়ুতন্ত্রের জন্যও তা উপকারী হিসেবে গণ্য করা হয়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: তিক্ত খাবার শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, বিশেষত ঋতু পরিবর্তনের সময়। তাই বসন্তের সময়ে তেতোর কোনও বিকল্প নেই।

এ ছাড়াও, বসন্তে তেতো খাবার খাওয়ার অভ্যাস শরীরকে সতেজ রাখে। বিশেষ করে শীতকালের শেষে যখন শরীরে অতিরিক্ত বর্জ্য জমে থাকে, সেই সময় তেতো অপরিহার্য। তাই যে কোনও একটি তেতো পদ খাবারের প্রথম পাতে রাখার চেষ্টা করা উচিত প্রত্যেকের।

kid

শিশু কিছুতেই তেতো খাবার খেতে চায় না? ছবি: সংগৃহীত।

তেতো খাবারে অভক্তি কেন?

তবে তেতো খাবার দেখেই মুখ সরিয়ে নেয় শিশুরা। কারণ তাদের স্বাদকোরক অনেক বেশি সক্রিয় থাকে বয়স্কদের তুলনায়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাদকোরকগুলির সংবেদনশীলতা কমতে থাকে। তাই প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে তেতো খাবার খাওয়া খুব কষ্টের নয়। কিন্তু শিশুদের তেতো খাওয়ানোর জন্য এই সমস্ত পদ খানিক উপাদেয় করলে লাভবান হতে পারেন বাবা-মায়েরা। এ ছাড়া যাঁদের স্বাদকোরকের সংখ্যা বেশি, তাঁদের জন্যেও তেতো খাওয়াটা কঠিন। স্বাদকোরকের সংখ্যা কম থাকলে তেতো খাবারে সেই পরিমাণ অভক্তি দেখা যায় না। রান্নায় গোলমরিচ, গরমমশলা, ধনে, আদা, রসুন অথবা লেবুর রস দিলে অনেক সময়ে খাবারে তিক্ততা খানিক কমে যায় এবং খেতেও সুবিধা হয়।

bitter food bitter food benefits heath benefits of bitter food bitter gourd benefits Neem benefits

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}