অনলাইন হোক বা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, গেলেই দেখা যাবে নানা সংস্থার প্রোটিন পাউডার তাকে থরে থরে সাজানো। এমনকি কোনও কোনও জিমেও বিক্রি হয় প্রোটিন পাউডার। তা দেখেই উদ্বুদ্ধ তরুণ প্রজন্ম। শরীর ভাল রাখতে, নায়কদের মতো পেশিবহুল শরীর পেতে প্রোটিন জরুরি। সে জন্যই সহজ উপায় প্রোটিন পাউডারে চুমুক দেওয়া মনে করেন তরুণ প্রজন্মের অনেকেই। তার ভাল-খারাপ দিক নিয়ে ভাবার আগেই ডায়েটে জুড়ছে সে সব। কিন্তু যে জিনিসটি খাচ্ছেন, তা খাঁটি কি না, জানেন তো?
পুষ্টিবিদ অনন্যা ভৌমিক বলছেন, ‘‘ প্রোটিন পাউডার সাপ্লিমেন্ট হিসেবে আমরা তাঁদের খেতে বলি, যাঁদের পু্ষ্টির বা প্রোটিনের ঘাটতি হয়েছে। যিনি খাবারে প্রোটিন পাচ্ছেন না। তার মানে কখনও এটা নয়, জিম করলেই তা খেতে হবে বা সাপ্লিমেন্টের প্রয়োজন পড়বে। অনেকেই নিজের সিদ্ধান্তে প্রোটিন পাউডার খেতে গিয়ে বিপদে পড়ছেন। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে আমাদের কাছে আসছেনও।’’
আরও পড়ুন:
পনির, রসুনে যেমন ভেজাল জুড়ছে, অভিযোগ, প্রোটিন পাউডারেও তেমনটা হচ্ছে। আর এতেই হতে পারে সমস্যা। পুষ্টিবিদ নীতা প্রদীপ জানাচ্ছেন, ক্রেতারা ব্যবসায়িক দিকটি বুঝতে পারেন না। অনেক সময় সস্তার জিনিস গ্লাইসিন, টরাইন, বিটা-অ্যালাইন ইত্যাদি মিশিয়ে প্রোটিন স্পাইক তৈরি করে পণ্যটি পরীক্ষায় পাশ করানো হয়। দাবি করা হয়, উচ্চমানের প্রোটিন রয়েছে এতে, যা শরীরে প্রোটিনের চাহিদা পূরণে সক্ষম।
প্রোটিন পাউডার ভেজাল না খাঁটি, বোঝার উপায় কী?
প্রোটিন পাউডার কতটা খাঁটি, তা সহজে বোঝা সম্ভব নয়। তবে নীতা কয়েকটি বিষয় লক্ষ করার পরামর্শ দিচ্ছেন।
লোগো পরীক্ষা: লাইসেন্স ছাড়া কেউ প্রোটিন পাউডার বিক্রি করতে পারেন না। তাই প্রথমেই দেখা প্রয়োজন লোগো এবং এতে লাইসেন্স নম্বর রয়েছে কি না। পণ্যটির মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, কোন কোন উপাদান তাতে যোগ করা হয়েছে, তা উল্লেখ করা নিয়মমাফিক দিক থেকে জরুরি। সেগুলি দেখে কেনা দরকার।
সিল দেখা: প্রোটিন পাউডার কেনার সময় সিল ঠিক আছে কি না, দেখা জরুরি। সিল খোলা হলে বা আলগা থাকলে তাতে কিছু মেশানোর সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। তা ছাড়া পণ্যটি হাওয়া লেগে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।
জলের পরীক্ষা: ঘরের তাপমাত্রায় থাকা জলে এক চামচ প্রোটিন পাউডার মিশিয়ে নিন। ৩০ সেকেন্ড ধরে মিশিয়ে নেওয়ার পর পাউডার দলা পাকিয়ে গেলে বা থিতিয়ে গেলে বুঝতে হবে, এতে ভেজাল থাকতে পারে।
স্বাদ: প্রোটিন পাউডারের স্বাদ দিয়েও বোঝা যেতে পারে। প্যাকের গায়ে অনেক সময় স্বাদ কেমন লেখা থাকে। খেয়ে যদি সন্দেহ হয়, উপকরণ যাচাই করা দরকার।
পুষ্টিবিদ অনন্যা বলছেন, ‘‘অনলাইন বা জিম থেকেও অনেকে প্রোটিন পাউডার কিনে খান। সেগুলি কতটা খাঁটি, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। আমরা চিকিৎসকদের দ্বারা পরীক্ষিত প্রোটিন পাউডার খাওয়ার পরামর্শ দিই। বাকি কোথায়, কী বিক্রি হচ্ছে, তা বলাটা কঠিন। তবে এটা ঠিক, অনেকেই না বুঝে প্রোটিন পাউডার খেয়ে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে আসেন। তাই আমরা ওষুধ কোম্পানির সিলমোহর যুক্ত জিনিসই খেতে বলি।’’