একবারে কতগুলি পুশ-আপ করতে স্বচ্ছন্দ আপনি? ১০, ২০, ৩০ না কি ৪০, ৫০? জানেন, এগুলি নিছক সংখ্যা নয়, বরং আপনার স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে ইঙ্গিত দিতে সক্ষম। হার্টের স্বাস্থ্য কেমন আছে, তা বলে দিতে পারে পুশ-আপ সংখ্যা। স্মার্টওয়াচ, হেল্থ ট্র্যাকার অ্যাপের জমানায় নাকি একটি ব্যায়ামই বলে দিচ্ছে হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের কথা। গবেষণায় জানা যাচ্ছে, পুশ-আপ হয়ে উঠতে পারে হার্ট-স্বাস্থ্যের মাপকাঠি।
২০১৯ সালের একটি গবেষণার কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। ‘জামা নেটওয়ার্ক ওপেন’-এ প্রকাশিত হয় ওই জার্নাল। সেই সময় ওই গবেষণার ফলাফল বেশ আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা ১,১০০ জন পুরুষ দমকলকর্মীকে ১০ বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করেছেন। তাঁদের পুশ-আপ করার ক্ষমতার সঙ্গে হার্টের স্বাস্থ্যের কোনও সম্পর্ক রয়েছে কি না, সে বিষয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছিলেন তাঁরা। ফলাফলে জানা যায়, সম্পর্ক রয়েছে। দেখা যায়, যে পুরুষেরা ৪০টি বা তার বেশি পুশ-আপ করতে পারেন, তাঁদের হার্ট সংক্রান্ত যে কোনও রোগের ঝুঁকি, যে পুরুষেরা ১০ বা তার কম ব্যায়াম করতে সক্ষম, তাঁদের তুলনায় ৯৬ শতাংশ কম।
৪০টি পুশ-আপ না করতে পারলেই কি বিপদের আশঙ্কা? ছবি: সংগৃহীত।
পুশ-আপ কেবল বুকের পেশির জোর বাড়ানোর জন্য সুপারিশ করা হয় না। শরীরের উপরের অংশ, কোরের শক্তিবৃদ্ধি এখানে খুব জরুরি। একই সঙ্গে পুশ-আপে শরীরের নীচের অংশের সক্রিয়তাও প্রয়োজন। মোটামুটি সন্তোষজনক পরিমাণে পুশ-আপ করতে পারলে জানবেন, আপনার পেশির স্বাস্থ্য, ওজন সঠিক জায়গায় রয়েছে। তা ছাড়া হৃদ্রোগ ও হার্ট সংক্রান্ত অন্যান্য রোগের ঝুঁকি কম।
‘জামা নেটওয়ার্ক ওপেন’-এর ওই গবেষণার প্রধান লেখক এবং হার্ভার্ডের চিকিৎসক জাস্টিন ইয়াংয়ের মতে, ট্রেডমিল পরীক্ষার চেয়েও পুশ-আপ ক্ষমতা যাচাই করা হার্টের স্বাস্থ্যর মাপকাঠি হিসেবে বেশি বিশ্বাসযোগ্য। হার্টের সমস্যা থাকলে আগে থেকে সতর্ক করে দেওয়ার জন্য প্রয়োজন এই ব্যায়াম।
আরও পড়ুন:
অর্থাৎ ৪০টি পুশ-আপ না করতে পারলেই কি বিপদের আশঙ্কা?
না, ৪০টি করত না পারলে, অথবা ১০-এরও কম করা মানে এই নয় যে, আপনি অসুস্থ এবং বিপদ ঘনিয়ে আসছে। ধরা যাক, ১০টি পুশ-আপ করতে গিয়ে আপনার খুব কষ্ট হয়। হাত-পা কাঁপে, বা দমের কষ্ট হয়, এর অর্থ হল, স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে আপনাকে। প্রয়োজনীয় পরীক্ষানিরীক্ষা করাতে হবে। হয়তো রক্তচাপ একটু বেশি, বা ওজন বেড়ে গিয়েছে ইত্যাদি বিভিন্ন কারণ হতে পারে। যা-ই হোক না কেন, স্বাস্থ্যের প্রতি যে যত্নবান হতে হবে, তা বোঝা যাবে। বরং ধীরে ধীরে অনুশীলনের মাধ্যমে ৪০টি পুশ-আপ করার লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাওয়া উচিত। শুরুতে বেঞ্চ বা দেওয়ালে ভর দিয়ে, পরবর্তী কালে মেঝেতে ভর দিয়ে চেষ্টা করতে হবে। শরীর বুঝে ধীরে ধীরে সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। তবে প্রথম বারে মাপকাঠিতে যদি ভাল ফল না আসে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
(এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। আপনি পুশ-আপ করে এই পরীক্ষা করতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।)