চা হল এমন একটি পানীয়, যা ছাড়া অনেকের দিনের কাজ শুরু হয় না। আবার কাজ সারতে সারতে কত বার যে চা খাওয়া হয়, তার হয়তো কোনও হিসাবই থাকে না। আর তাতেই বাড়ে গোলমালের আশঙ্কা। তাই এই পানীয়ের প্রতি টান যতই থাকুক, বেশি খাওয়া কিন্তু মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। তবে সারা দিন কত বার চা খাওয়া নিরাপদ?
পুষ্টিবিদ রুজুতা দিবেকরের মতে, সীমিত মাত্রায় দু’ থেকে তিন কাপ চা সারা দিনে খাওয়া যেতেই পারে। তবে শুধু কাপের হিসেব রাখলেই চলবে না, শরীরের কথা ভেবে চা খেতে হবে নিয়ম মেনে।
১) অনেকেই ভাবেন, দুধ-চিনি ছাড়া চা মানে তা খুবই স্বাস্থ্যকর। অতএব যত খুশি খেয়ে ফেললেও ক্ষতি নেই। তা কিন্তু একেবারেই নয়। লিকার চায়ের পুষ্টিগুণ অনেক। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ লাল চায়ে ফ্ল্যাভোনয়েড, ফাইটোকেমিক্যাল, অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি উপাদান থাকে, যা শরীরের জন্য ভাল। যদি লিকার চায়ে আদা, দারচিনি বা মধু মিশিয়ে খাওয়া যায়, তা হলে এর পুষ্টিগুণ আরও বাড়ে। তবে এতে কিন্তু ক্যাফিনও থাকে। তাই অতিরিক্ত খেয়ে ফেললে তা শরীরে ক্ষতিই করবে।
২) সকালে খালি পেটে কখনওই চা খাওয়া যাবে না। চায়ে ক্যাফিন নামক যৌগ আছে। খালি পেটে এই যৌগ পাকস্থলীতে প্রবেশ করলে অম্লের পরিমাণ বাড়তে পারে। এর ফলে অনেক সময়ে আকস্মিক বমি বমি ভাব, বুক জ্বালার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। গ্যাসের সমস্যারও সূত্রপাত ঘটে। দীর্ঘ দিন ধরে খালি পেটে চা পানের অভ্যাস গ্যাসের সমস্যাকে আরও মারাত্মক করে তুলতে পারে। চায়ে থিয়োলিন নামে আর এক যৌগ থাকে। এই যৌগ শরীরে জলের পরিমাণ হ্রাস করে। ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় শরীরে জলের পরিমাণ নিজে থেকেই হ্রাস পায়। ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে চা খেলে সেই পরিমাণ আরও কমে যায়। এর প্রভাব পড়ে বৃক্কে। তাই খালি পেটে চা খাওয়ার বিষয় সতর্ক হোন। এ ছাড়া যাঁদের অনিদ্রার সমস্যা আছে, বিকেল ৪টের পর তাঁদের চা খেতে বারণ করছেন পুষ্টিবিদ।
৩) চায়ের সঙ্গে ‘টা’-এর সম্পর্ক গভীর। চা খেলেই সঙ্গে কেক বা বিস্কুট খাওয়ার অভ্যাস কমবেশি সকলেরই থাকে। তা ছাড়া অনেকেই পকোড়া, শিঙাড়া, ভাজাভুজি খেতে ভালবাসেন। তবে শরীরের কথা ভেবে এই সব ‘টা’-এর বিষয়েও সচেতন থাকতে হবে। রুজুতা বলেন, চায়ের সঙ্গে মাখানা ভাজা, ছোল ভাজা, রোস্টেড বীজ খাওয়া যেতে পারে।