ধূমপানের ফলে দেহের একাধিক ক্ষতি হতে পারে। সাধারণত ধূমপান থেকে ফুসফুসের ক্ষতির প্রসঙ্গে চর্চা হয় বেশি। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গিয়েছে, ধূমপানের ফলে চোখের ক্ষতিও হতে পারে। ‘জার্নাল অফ অপথালমোলজি’ থেকে জানা যাচ্ছে, বার্ধক্যজনিত নানা রোগের নেপথ্যে অন্যতম কারণ ধূমপান।
আরও পড়ুন:
ধূমপান এবং চোখের স্বাস্থ্য
বয়সের সঙ্গে ‘এজ রিলেটেড ম্যাকুলার ডি-জেনারেশন’ (এএমডি)-এর ঝুঁকি বাড়তে থাকে। এই রোগে রেটিনার কেন্দ্রস্থলে ম্যাকুলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তার ফলে দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে আসে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে তার ফলে দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণ লোপ পেতে পারে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই রোগের অন্যতম কারণ ধূমপান। ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ’-এ সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, এক-তৃতীয়াংশ এএমডির নেপথ্যে মানুষের জিনগত সমস্যা এবং ধূমপান দায়ী। এমনকি ধূমপানের ফলে এই রোগের চিকিৎসাপদ্ধতির গতিও কমে আসে।
কী ভাবে ক্ষতি হয়
সিগারেটের ধোঁয়ার মধ্যে অজস্র ক্ষতিকারক উপাদান মিশে থাকে, যার মধ্যে নিকোটিন এবং টার অন্যতম। লাগাতার সেই ধোঁয়া চোখের সংস্পর্শে এলে ড্রাই আইজ় হতে পারে। এ ছাড়াও চোখের উপরের পর্দায় সিগারেটের ধোঁয়া লাগলে চুলকানি শুরু হয়। দীর্ঘকালীন পরিস্থিতিতে তা থেকে চোখে ছানি পড়তে পারে। এমনকি আইরিসে প্রদাহ তৈরি হতে পারে।
অন্য কোনও ধূমপায়ীর থেকে ধোঁয়া চোখে প্রবেশ করাও ক্ষতিকারক। শিশুদের ক্ষেত্রে সিগারেটের ধোঁয়া থেকে চোখের শিরার ক্ষতি হতে পারে। আবার অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের ক্ষেত্রে এই ধোঁয়া অপটিক নার্ভের ক্ষতি করতে পারে।
কী করা উচিত
চোখ ভাল রাখতে ধূমপান ত্যাগ করা সবচেয়ে উপকারী। তবুও চোখ সুরক্ষিত রাখতে কয়েকটি পদক্ষেপ করা যেতে পারে—
১) চোখের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে ডায়েট যেন পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ হয়, তা খেয়াল রাখা উচিত।
২) চোখ ভাল রাখতে রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।
৩) নিয়মিত শরীরচর্চাও চোখ ভাল রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে দেহে রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখতে সাহায্য করে শরীরচর্চা।
৪) সিগারেটে ধোঁয়া থেকে সব সময় চোখকে আড়াল করার চেষ্টা করা উচিত।