শীতের সব্জি হিসাবে মুলোর কদর থাকলেও, মুলোর সঙ্গে ডাঁটিতে লেগে থাকা কচিপাতা ফেলে দেওয়া হয় বহু বাড়িতেই। কেউ কেউ অবশ্য মুলোশাক ভেজে খান। কেউ আবার চচ্চড়িও করেন।কিন্তু ছোটদের তো এ ভাবে দিলে তারা শাক খাবে না।
অথচ মুলোশাকের পুষ্টিগুণ নেহাত কম নয়। ভিটামিন সি, কে, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, ফাইবার, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, আয়রনে ভরপুর মুলোশাক। মুলোশাক ঠিক মতো রান্না করলে তা উপাদেয় খাবার হতে পারে। শুধু তাই নয়, আয়রন থাকায় রক্তাল্পতা কমাতেও সব্জিটি সহায়ক। যাঁরা রক্তাল্পতায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য উপকারী মুলো শাক।
মুলোর শাকে রয়েছে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি, যা রক্তে শ্বেত কণিকার উৎপাদন বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে সাধারণ রোগ ব্যাধির সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা জোগায়। মুলোশাকে ক্যালোরির মাত্রা বেশ কম। আবার এটি পুষ্টিকরও। ফলে ওজন যাঁরা কমাতে চাইছেন তাঁরও এটি ডায়েটে জুড়তে পারেন। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রয়েছে মুলোশাকে যা শরীরকে ফ্রি র্যাডিক্যালসের হাত থেকে রক্ষা করে। তবে ভাজা বা তরকারি নয়, মুলোশাক খাওয়া যায় নানা ভাবে।
কী ভাবে মুলোশাক খেতে পারেন
স্যান্ডউইচ স্প্রেডার: মুলোশাক কেটে ধুয়ে নিন। মিক্সারে শাক, রসুন, কাজুবাদাম অলিভ অয়েল, স্বাদমতো নুন, পাতিলেবুর রস যোগ করে ঘুরিয়ে নিন। তৈরি হবে সবুজ মিশ্রণ। এটি টোস্টের সঙ্গে বা স্যান্ডউইচে পুর ভরার আগে পাউরুটিতে মাখিয়ে নিতে পারেন। ভাজাভুজির সঙ্গে চাটনি হিসাবেও এটি খাওয়া যেতে পারে।
অমলেট: মুলোশাক ধুয়ে মিহি করে কুচিয়ে নিন। কড়াইয়ে মাখন বা সাদা তেল দিয়ে রসুন কুচি, শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিয়ে, শাকটি হালকা নাড়াচাড়া করে নিন। স্বাদমতো নুন যোগ করুন। একটি পাত্রে ডিমের সঙ্গে অল্প দই, স্বাদমতো নুন দিয়ে গুলে নিন।কড়াইয়ে তেল দিয়ে অমলেট বানান। অমলেটের মধ্যে পুর হিসাবে যোগ করুন মুলো শাক, পেঁয়াজ, লঙ্কা। দিতে পারেন চিজ়ও। তার পর অমলেট আড়াআড়ি ভাঁজ করে দিন।
স্যুপ: মুলোশাক দিয়ে ক্রিমের মতো ঘন সবুজ স্যুপ বানানো যায়। বলে না দিলে কেউ বুঝতেই পারবে না, এটি কী দিয়ে তৈরি। কড়াইয়ে তেল দিয়ে রসুন কুচি নাড়াচাড়া করে নিন। পাতলা করে কাটা পেঁয়াজ, মুলো শাক, পাতলা করে কাটা মুলো, কড়াইশুঁটি হালকা নাড়াচাড়া করে নিন। যোগ করুন স্বাদমতো নুন। অল্প জল দিয়ে মিশ্রণটি সেদ্ধ করে নিন। তার পরে সেটি মিক্সারে ঘুরিয়ে নিন।
কড়াইয়ে অল্প মাখন এবং থেঁতো করা গোলমরিচ যোগ করুন। মুলোশাকের মিশ্রণটি দিয়ে নাড়াচাড়া করতে থাকুন। যোগ করুন অল্প জল এবং দুধ। ঘন হয়ে এলে নামিয়ে নিন। যোগ করতে পারেন ফ্রেশ ক্রিম।