শীতের দিনে খুদে বরফ, আইসক্রিমের বায়না করলেই শুরুতেই অভিভাবকেরা থামিয়ে দেন, ঠান্ডা লেগে যাওয়ার ভয়ে। তবে বরফ খেয়ে ঠান্ডা লেগে যাওয়ার মতো সমস্যাও আটকানো যেতে পারে। সম্প্রতি এমনই বরফ নিয়ে সমাজমাধ্যমে চর্চা।
আরও পড়ুন:
আমেরিকান নেটপ্রভাবী নিকোল কেসিসিয়ান বানিয়েছেন এমন এক বরফ যার মধ্যে রয়েছে রোগ প্রতিরোধক উপাদান। দীর্ঘ দিন ধরে ইনস্টাগ্রামে রয়েছেন নিকোল। খাবার সংক্রান্ত ব্লগ, ভিডিয়ো পোস্ট করেন তিনি। কমলা রঙের এমন একটি বরফখণ্ড বানিয়েছেন তিনি, যা নিয়ে হইচই।
বরফ কী ভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে, এ প্রশ্ন যে কোনও মানুষের মনেই আসা স্বাভাবিক। নিকোল বরফ তৈরিতে ব্যবহার করেছেন গাজর, পাতিলেবুর রস, আদা এবং মধু। প্রতিটি উপাদানই স্বাস্থ্য ভাল রাখতে উপযোগী। চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদেরাও সে কথা বলেন।
গাজর: ভিটামিন এ, ভিটামিন কে, পটাশিয়াম, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর গাজর। দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে সাহায্য করে ভিটামিন এ। ফাইবার পেটের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে শরীর তরতাজা রাখতে কার্যকর। গাজরে থাকা ফাইবার, পটাসিয়াম এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
পাতিলেবুর রস: পাতিলেবুর রসে রয়েছে ভিটামিন সি। ছোটখাটো সংক্রমণ ঠেকাতে যা বিশেষ ভাবে কার্যকর। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মজবুত করতে হলে ভিটামিন সি অত্যন্ত জরুরি, বলেন চিকিৎসকেরা।
আদা: আদার মধ্যে আছে ব্যাক্টেরিয়া ও নানা ধরনের জীবাণুর সঙ্গে লড়াইয়ের ক্ষমতা। এতে মেলে জিঞ্জেরল এবং শোগোল। এই দুই উপাদানই ফুসফুসের প্রদাহ কমায়। আদা হজমে সহায়ক।
মধু: সর্দি-কাশিতে মধু খাওয়ার চলও দীর্ঘ দিনের। খাঁটি মধুতে যথেষ্ট পরিমাণে থাকে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, বেশ কিছু ভিটামিন ও খনিজ— যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। মধু হার্টের স্বাস্থ্যও ভাল রাখে। শরীরের যে কোনও প্রদাহ কমাতেও মধু উপকারী।
হলুদ: হলুদে রয়েছে কারকিউমিন নামে অত্যন্ত শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। এতে রয়েছে প্রদাহনাশক উপাদান।
প্রদাহনাশক, রোগ প্রতিরোধকারী ক্ষমতার বরফটি বানানোর প্রক্রিয়াও শিখিয়েছেন নিকোল।
উপকরণ
একটি গাজর
আধখানা পাতিলেবু
এক টুকরো আদা
১ টেবিল চামচ হলুদ
১/৩ কাপ মধু
১ টেবিল চামচ গোলমরিচের গুঁড়ো
৩ কাপ ডাবের জল
পদ্ধতি: সমস্ত উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে মিক্সারে ঘুরিয়ে নিন। মিশ্রণটি ছাঁকার দরকার নেই। বরফ জমানোর ট্রে-তে তা জমতে দিন। দিনে এক বার কিংবা সকালে ২-৩টি কিউব বার করে গরম জলে মিশিয়ে তা খেয়ে নিন।
শীতের দিনে সরাসরি বরফ খেলে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। তা ছাড়া এই মরসুমে গরম কিছু খেতে ভাল লাগে। তাই গরম জলেই এগুলি মিশিয়ে নিন। তবে চাইলে রোদ থেকে ফিরে ঘরের তাপমাত্রার জলেও ৪-৫টি বরফ খণ্ড মিশিয়ে খেতে পারেন।