সকালে শরীরের জড়তা কাটাতে অনেকেই কফির উপর নির্ভরশীল। কড়া এক কাপ পানীয় না হলে দিন শুরুই হতে চায় না যেন। কিন্তু অনেক পুষ্টিবিদ এবং চিকিৎসকের দাবি, সকালে খালিপেটে কফি খেলে স্বাস্থ্যের পক্ষে তা সব সময়ে ভাল নয়। অতিরিক্ত ক্যাফিনের নানাবিধ নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। কিন্তু যদি সকালের সেই এক কাপ পানীয় আপনার পেট এবং মস্তিষ্কের জন্য উপকারী হয়? এমন সুযোগ থাকলে নিশ্চয়ই হাতছাড়া করবেন না কেউই। এইমস প্রশিক্ষিত আমেরিকা নিবাসী এক ভারতীয় চিকিৎসক সৌরভ শেট্টি জানাচ্ছেন, ছোট ছোট কয়েকটি নিয়ম মেনে কফি বানালে তা স্বাস্থ্যকর পানীয়ের রূপ নিতে পারে। প্রদাহ নাশ করে পেট ও মস্তিষ্কের খেয়াল রাখতে পারবে সকালের এই কফি। রইল সেই ৫টি উপায়।
১. চিনি ছাড়া কালো কফি
প্রথমে চিনি এবং দুধ ছাড়া কালো কফি বানিয়ে নিন। এতে ক্যালোরি কম থাকে এবং শরীরে শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকে। এতে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের উপকারিতাও পাওয়া যায়। টাইপ ২ ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কমানোর পাশাপাশি ওজন ঝরাতে এবং লিভার ভাল রাখতেও উপকারী হতে পারে।
২. প্রয়োজনে সামান্য দুধ
যাঁরা দুধের স্বাদ পছন্দ করেন, কালো কফিতে মন ভরে না, তাঁরা চাইলে অল্প দুধ যোগ করতে পারেন। কিন্তু আমন্ডের দুধ বা সয়ামিল্ক হলেই ভাল। যদি ল্যাকটোজ়ে অ্যালার্জি না থাকে, তা হলে সাধারণ ডেয়ারি দুধ ব্যবহার করতে পারেন। এতে ক্যালসিয়াম ও প্রোটিনের পরিমাণ বাড়ে। তবে বেশি দিলে কফির গুণ কমে যেতে পারে। এই ধাপ যদিও ঐচ্ছিক।
দুধ কফি খেতে হলে অল্প মেশানো যায়। ছবি: সংগৃহীত।
৩. এক চিমটে দারচিনি
দারচিনি রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখে এবং প্রদাহ কমায়। কফির সঙ্গে মিশলে হজমশক্তি বাড়ে ও শরীরও গরম থাকে। কফির স্বাদও নষ্ট হয় না।
৪. কোকো পাউডার
এক চা চামচ কোকো পাউডার কফির স্বাদে অন্য মাত্রা যোগ করে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট মস্তিষ্কের কোষকে সুরক্ষা দেয়। মন-মেজাজ ভাল রাখার পাশাপাশি মনোযোগ বাড়ায়। পলিফেনলে ভরপুর বলে পেটের ভাল ব্যাক্টেরিয়াগুলিকে পুষ্টি জোগাতে পারে।
৫. শেষে এমসিটি অয়েল
এক চামচ এমসিটি তেল (মিডিয়াম চেন ট্রাইগ্লিসারাইড অয়েল, সাধারণত নারকেল এবং পাম কেরনেল অয়েল থেকে পাওয়া যায়) কফিতে মেশালে শরীরে শক্তি বাড়ে, ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং অন্ত্রের ভাল ব্যাক্টেরিয়ার ভারসাম্য বজায় থাকে।
এই ভাবে বানানো কফি সকালে শরীর ও মস্তিষ্ককে একসঙ্গে চাঙ্গা করে তোলে। এতে হজম ভাল হয়, ক্লান্তি কমে এবং সারা দিন মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হয়। অর্থাৎ, আপনার প্রতি দিনের সাধারণ কফিই হতে পারে স্বাস্থ্যকর দিনের সূচনা।