শীতের সময়ে অ্যালার্জির সমস্যা হয় অনেক শিশুর। হাঁচি-কাশি থামতে চায় না, নাক দিয়ে অনবরত জল পড়া, সারা গায়ে র্যাশ বেরিয়ে যাওয়ার সমস্যাও হয়। শ্বাসনালি ও ত্বক— মূলত এই দুই জায়গাতেই অ্যালার্জি বেশি হয় ছোটদের। ঠান্ডা লেগে শ্বাসনালিতে মিউকাস জমে গিয়ে সর্দি, গলা বসে যাওয়ার সমস্যাও খুব ভোগায়। সেই সঙ্গেই চোখ জ্বালা, কনজাঙ্কটিভাইটিসও হয় এই সময়ে। তাই ঠান্ডা পড়লে কিছু নিয়ম অবশ্যই মানতে হবে মা-বাবাকে।
অ্যালার্জির রকমফের রয়েছে। অ্যালার্জির কিছু উৎস ঘরের ভিতরেই রয়েছে, অন্যগুলি বাইরে। সারা বছরই ঘরে জমা ধুলো, কোনও বিশেষ খাবার, পোকামাকড়ের উপদ্রব অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। পোষ্যের লোম থেকেও ছড়াতে পারে অ্যালার্জি। এ ছাড়া বাতাসে ভাসমান ফুলের রেণু, ধূলিকণা থেকে অ্যালার্জির কোপে পড়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। শিশুর যদি আগে থেকেই অ্যালার্জিক রাইনাইটিস থাকে, তা হলে শীতকালে তা আরও বাড়বে।
আরও পড়ুন:
এই বিষয়ে শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পাল জানান, অনেকের ধারণা, অ্যালার্জি হলে শুধু ত্বকে র্যাশ বার হয়। তা নয়। অ্যালার্জির নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন সর্দি-জ্বর আসতে পারে, ক্রমাগত হাঁচি হতে থাকবে, হালকা শ্বাসের সমস্যাও হবে শিশুর। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলে ‘হে ফিভার’। আবার অনেকের সমস্যা দেখা দেয় শুধু চোখে।
সমাধানের উপায় কী?
ঠান্ডা লাগানো যাবে না। অনেক শিশুর কম বয়সে গরমের ধাত ও ঠান্ডা লেগে যাওয়ার ধাত একসঙ্গে থাকে। ঠান্ডা পড়ার এই সময়টাতে পাখা বন্ধ রাখুন বা গতি কমিয়ে রাখুন। কোনও ভাবেই এসি চালানো যাবে না।
হাঁপানি বা অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের সমস্যা থাকলে ইনহেলার রাখতেই হবে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের নির্দেশ মাফিক ইনহেলারই নিতে হবে।
ভিটামিন সি যুক্ত ফল, মরসুমি সব্জি শিশুকে খাওয়ান। জাঙ্ক ফুড বা তেলমশলার খাবার বাদ দিন ডায়েট থেকে। সকালে ঈষদুষ্ণ জলে মধু মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন। দারচিনি, ছোট এলাচ, আদা, লবঙ্গ ফুটিয়ে সেই জল ছেঁকে খাওয়ান। এতে সর্দি-কাশির প্রকোপ কমবে।
শিশু যে ঘরে আছে সেখানে ধূমপান করবেন না। এতেও সমস্যা বাড়বে।
ছোট থেকেই শিশুকে বেশি করে জল খাওয়ার অভ্যাস করান। খাবারে আদা, গোলমরিচ, হলুদের মতো মশলার ব্যবহার বেশি করে করুন।
শিশুর শ্বাসকষ্ট বা ধুলো থেকে আলার্জি হলে রাস্তায় বেরোনোর সময় মাস্ক পরান অবশ্যই। তার পরেও হাঁচি-কাশি শুরু হলে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
শিশুর অ্যালার্জির ধাত বেশি হলে বাড়িতে হেপা ফিল্টারযুক্ত এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন। যা ধূলিকণা ও অ্যালার্জেন দূর করে বাতাস পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।