রাতভর বৃষ্টিতে জলমগ্ন কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চল। মঙ্গলবার দুর্যোগের সকালে কলকাতায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একের পর এক মৃত্যুর খবর আসছে। পুরসভার কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়েছে, গঙ্গার জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। সে কারণে শহরের খালগুলিও কানায় কানায় পূর্ণ। ফলে জলমগ্ন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লাগবে। এমন অবস্থায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহরবাসীকে বাইরে না বেরোনোরই পরামর্শ দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তবে যদি বাইরে বেরোতেই হয়, তা হলে জমা জল পেরোনোর সময়ে সতর্ক থাকতে হবে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে কী কী নিয়ম মানবেন, তা জেনে রাখা ভাল।
জমা জলে সাবধান
১) জমা জলে ই্লেক্ট্রিকের তার ছিঁড়ে পড়ে থাকার আশঙ্কা প্রবল। শহরের নানা জায়গায় এমন ছেঁড়া বিদ্যুতের তার থেকে বিপদ ঘটেছে ইতিমধ্যেই। তাই ভুলেও খালি পায়ে জল পেরোবেন না। যে দিকে বিদ্যুতের তার পড়ে আছে দেখবেন, সে দিকে যাবেন না। পায়ে প্লাস্টিক বা রাবারের জলরোধী জুতো থাকলেই ভাল।
২) বৃষ্টির সময় লাইটপোস্ট বা ট্রান্সফর্মারে ত্রুটি দেখা দিতে পারে, যার ফলে বিপদ ঘটতে পারে। তাই এগুলি থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন। ছিঁড়ে যাওয়া বা ঝুলে থাকা বৈদ্যুতিক তার দেখলে সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা অথবা পুলিশকে খবর দিন।
৩) মানবদেহ তড়িতের সুপরিবাহী। তাই বিদ্যুৎপ্রবাহ আছে, এমন কোনও খোলা তার বা বোর্ডের সংস্পর্শে এলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে। ভাবে কেউ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলে কোনও ভাবেই তাঁর গায়ে হাত দেবেন না। গায়ে জলও দেবেন না। বরং ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিন। ধাক্কা দেওয়ার সময় শুকনো উলের পশাক, কাঠের টুকরো, খবরের কাগজ অথবা রবার জাতীয় তড়িতের অপরিবাহী বস্তু দিয়ে সজোরে আঘাত করে সরান। তাতে বিদ্যুতের উৎস থেকে সেই ব্যক্তির ছিটকে যাওয়া সম্ভব হবে।
৪) প্রবল বৃষ্টিতে অনেকের বাড়িতেই জল ঢুকে গিয়েছে। জমা জল সরানোর আগে বাড়ির মেন সুইচ বন্ধ করে দিন। শিশু বা বয়স্কেরা থাকলে সেই জলে পা রাখতে দেবেন না।
৫) কেউ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জ্ঞান হারালে তাঁর বুকের উপর চাপ দিয়ে সিপিআর দেওয়ার চেষ্টা করুন। রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন। বিদ্যুতের উৎস থেকে সরাতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে গরম দুধ ও গরম জল খাওয়ান আক্রান্ত ব্যক্তিকে। এতে শরীরের রক্ত সঞ্চালন দ্রুত স্বাভাবিক হবে।