Advertisement
E-Paper

সমাজমাধ্যমের নেশা দাম্পত্য জীবন নষ্ট করছে? ডিজিটাল উপোস শুরু করুন, হবে মু‌শকিল আসান

ডিজিটাল দুনিয়ার ঘোর থেকে বেরিয়ে সুস্থ জীবন যাপন করার চাবিকাঠি নিজের হাতেই তুলে নিতে হবে। এর জন্য করতে হবে ডিজিটাল উপোস। তবে এই ডিজিটাল উপোস করা অত সোজা নয়। শুরু করতে হবে ধীরে ধীরে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৫ ১৪:৪০
ডিজিটাল উপোস করলেই দাম্পত্য়ে ফিরতে পারে সুখ।

ডিজিটাল উপোস করলেই দাম্পত্য়ে ফিরতে পারে সুখ। ছবি: এআই।

যা খাচ্ছেন, যা করছেন এমনকি কোন দিন কী পরছেন, দিনের নানা মুহূর্তগুলি ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে ভাগ করেন অনেকেই। সুয়োগ পেলেই সমাজমাধ্যমের পাতায় নজর, কার জীবনে কী ঘটে চলেছে তা দেখার আগ্রহ। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে সর্ব ক্ষণ বুঁদ হয়ে আছেন। সমাজমাধ্যমের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি এবং দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করার অভ্যাস মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব তো ফেলছেই, ক্ষতি করছে কাছের সম্পর্কগুলিরও।

সমাজমাধ্যমের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি প্রতি দিনের জীবনে, এমনকি পারিবারিক সম্পর্কেও কুপ্রভাব ফেলছে। ভুক্তভোগীদের বড় অংশ চাপ কমানোর জন্য বিজ্ঞাপন দেখে পণ্য ব্যবহার করছেন, কেউ কেউ মদ বা তামাকজাত দ্রব্যের উপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন। ভার্চুয়াল বন্ধুর দামি গাড়ি বা সাজানো বাড়ির ছবি মনে ঈর্ষা জাগাচ্ছে, স্নায়ুজনিত উত্তেজনাও তৈরি করছে। অন্যের সঙ্গে তুলনা টানতে টানতে কাছের সম্পর্কগুলি অনেক দূরে চলে যাচ্ছে।

হাত-পা, মন, মস্তিষ্ক সব যেন বন্দি এই ডিজিটাল হাতকড়ায়। পাশে বন্ধু বসে থাকলেও নজর চলে যা ডিজিটাল বন্ধু কী করছে সেই দিকে। ডিজিটাল দুনিয়ার ঘোর থেকে বেরিয়ে সুস্থ জীবন যাপন করার চাবিকাঠি নিজের হাতেই তুলে নিতে হবে। এর জন্য করতে হবে ডিজিটাল উপোস। তবে এই ডিজিটাল উপোস করা অত সোজা নয়। শুরু করতে হবে ধীরে ধীরে।

১) ভাবতে শুরু করুন

সারা দিনে কত বার ফোন দেখেন? টিভি পর্দার দিকে কত ক্ষণ তাকিয়ে থাকেন? ক’ঘণ্টা কম্পিউটার স্ক্রিনের সামনে বসে থাকেন? আর কত ক্ষণ বাড়ির লোকদের সঙ্গে গল্প করেন? ভার্চুয়াল বন্ধুদের ছেড়ে পাড়ার কিংবা স্কুল কলেজের বন্ধুদের সঙ্গে কবে শেষ আড্ডা দিয়েছিলেন? এই প্রশ্নগুলি নিজেকে করে দেখুন। ডিজিটাল উপোস চলছে যখন, অন্য কিছু দিয়ে মন ভরাতে হবে। সে ক্ষেত্রে ভাল সঙ্গী হতে পারে বই। দীর্ঘ ক্ষণ বইয়ে মন না বসলে শুরু করুন রহস্য উপন্যাস বা ছোট গল্পের বই দিয়ে। বাড়ির সদস্যদের ডেকে দাবা বা লুডোর বোর্ড সাজিয়ে বসে পড়তে পারেন। একটু চেষ্টা করে দেখুন। ফোনের ক্যামেরায় না দেখে মনের ক্যামেরায় আশপাশের মানুষের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো বন্দি করে রাখুন। জীবনটা সুন্দর হবে, হতাশাও কাটবে। নতুন নস্ট্যালজিয়া তৈরি হবে।

২) সময় বাঁধুন

প্রত্যেক দিন মোবাইল, টিভি, কম্পিউটার বা ল্যাপটপে কতটা করে সময় দেবেন, সেটা আগে ঠিক করতে হবে। প্রয়োজন ছাড়া মোবাইল ব্যবহার থেকে দূরে রাখুন নিজেকে। রাতে ঘুমের আগে ফোন ব্যবহার বন্ধ রাখুন। ঘুমোনোর অন্তত এক ঘণ্টা আগে থেকেই ফোন নির্দিষ্ট স্থানে রেখে দিন। মুঠোফোনই বেশির ভাগ সময় কেড়ে নেয়। হাতের কাছে ফোন থাকলেই, ফোন নাড়াচাড়া করতে ইচ্ছে করে।

৩) ছাঁটাই অভিযান

দরকারি অ্যাপ ছাড়া বাকি অ্যাপগুলি ডিলিট করে দিন। মানে ধরুন, গাড়ি ধরার, লোকেশন দেখার মতো দরকারি অ্যাপ রেখে সোশ্যাল নেটওয়র্কিং ও চ্যাট করার অ্যাপ ছাঁটাই করুন। দেখবেন আর ফোনের দিকে তাকাতেও ইচ্ছে করছে না। উপোস শুরু করার সময়ে একটু কড়া তো হতেই হবে।

৪) সঙ্গী খুঁজুন

একা উপোস না করে এক জন সঙ্গী খুঁজুন। তা হলে নিজে যদি কখনও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না-ও পারেন, সে আপনাকে আটকাবে। আর সময় মতো একই সাহায্য আপনিও বন্ধুকে করতে পারেন। ফোন, কম্পিউটার ছেড়ে সেই বন্ধুর সঙ্গে গল্প করে সময়ও কাটাতে পারবেন অনেকটা। বন্ধুবান্ধব, অফিস, বাড়িতে ঘোষণা করে দিন নিজের ডিজিটাল উপোসের কথা। কখনও ভুলে কোনও নিয়ম ভাঙলে আশপাশের লোকজন সতর্ক করতে পারেন।

৫) ফোন ছাড়া ছুটিতে যান

দু’দিনের জন্য ফোন বন্ধ করে ঘুরতে চলে যান। পরবর্তী কালে ছুটি কাটানোর জন্য এমন জায়গা বাছাই করুন যেখানে ফোনের নেটওয়ার্ক ধরে না। তা হতে পারে কোনও জঙ্গল, হতে পারে কোনও পাহাড়ি নির্জন গ্রাম। কাল্পনিক ডিজিটাল জগতে স্বাদ-গন্ধ-স্পর্শ কিছুই নেই। বাস্তব জীবনে বাঁচতে শিখুন। দেখবেন বাস্তবটা অনেক বেশি সুন্দর।

Digital Detox Tips Digital Detoxification
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy