চোখ থেকে জল পড়ার সমস্যা কেন বাড়ছে? ছবি: শাটারস্টক।
অফিসে ল্যাপটপের সামনে বসে কাজ করছেন, হঠাৎই চোখ চুলকাতে শুরু করে দিল? এর কারণ কিন্তু হতে পারে অফিসের এসি। শুনতে অবাক লাগলেও বিষয়টি কিন্তু সত্যি। অফিসে দিনে আট থেকে দশ ঘণ্টা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরেই থাকতে হয় অনেককে। দীর্ঘ সময় ধরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকলে চোখের গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র বাতাসের আর্দ্রতা শুষে নেয়। বদ্ধ ঘরে দীর্ঘ সময় এসি চললে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ একেবারে কমে যেতে পারে। আর বাতাসের আর্দ্রতা কমে গেলে তার প্রভাব পড়ে চোখের উপর। বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘ইভাপোরেটিভ ড্রাই আইজ’।
চোখের পাতায় থাকে কয়েকটি গ্রন্থি যেগুলি থেকে জলীয় পদার্থ ক্ষরিত হয়। স্নেহপদার্থেরও ক্ষরণ হয়। দীর্ঘ সময় ধরে এসিতে থাকলে চোখের পাতায় থাকা এই লিপিড উৎপাদক গ্রন্থিগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর প্রভাব পড়তে পারে অশ্রুগ্রন্থির উপরেও। সব মিলিয়ে চুলকাতে থাকে চোখ। তার উপর দীর্ঘ ক্ষণ স্ক্রিন টাইম সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়।
কোন কোন লক্ষণ দেখে বুঝবেন যে ‘ড্রাই আইজ’-এর সমস্যা হচ্ছে?
১) মাঝেমাঝে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া ড্রাই আইজ-এর একটি লক্ষণ।
২) কোনও কারণ ছাড়াই চোখ থেকে অনবরত জল পড়ে? এ ক্ষেত্রেও সতর্ক হন। চোখ থেকে জল পড়ার অর্থ হল ‘টিয়ার ফিল্ম’ চোখকে আর্দ্র রাখতে পারছে না। এই সমস্যাও কিন্তু ড্রাই আইজ-এর কারণে হয়।
৩) চোখের ক্লান্তিও কিন্তু এর একটি লক্ষণ।
৪) চোখে আলো পড়লেও সমস্যা হচ্ছে? রাতে গাড়ি চালাতে পাছেন না? এ ক্ষেত্রেও সতর্ক হওয়া জরুরি।
৫) সারা ক্ষণ চোখে কিছু ঢুকেছে মনে হলেও, তা ড্রাই আইজের সমস্যা হতে পারে।
সমাধান কোন পথে?
১) ধুলো থেকেই সংক্রমণ ছড়াতে পারে। সেই কারণে চোখ সব সময়ে পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন। বাইরে থেকে ফিরে ভাল করে চোখ ধুয়ে নিতে হবে। চোখে-মুখে জল দেওয়ার আগে ভাল করে ত্বক পরিষ্কার করে নিন।
২) চোখে লেন্স ব্যবহার করেন? দীর্ঘ সময় লেন্স পরে থাকলেও কিন্তু এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকরা জানান, দিনে ৫-৬ ঘণ্টার বেশি লেন্স পরে না থাকাই ভাল।
৩) মাঝেমাঝে চোখে গরম ভাব দিতে পারেন। চোখ শুষ্ক হয়ে গেলে কিন্তু এই টোককা বেশ কাজে দেয়। দিনে দু’ থেকে তিন বার চোখে কাপড়ের শেঁক দিতে পারলে আরাম পাবেন।
৪) দীর্ঘ সময় স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে না থাকাই ভাল। অফিসে থাকলেও মাঝেমাঝে বিরতি নিন। বাড়ি ফিরে খুব প্রয়োজন না হলে মোবাইল ঘাঁটবেন না। এতে ভাল থাকবে চোখ।
৫) সারা দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়া প্রয়োজন। জল খেলে শরীর আর্দ্র থাকে। এ ছাড়াও তরমুজ, শসার মতো জলযুক্ত ফল বেশি করে খান। এতে শরীরে জলের ঘাটতি তৈরি হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy