ঘুম থেকে উঠে কেউ কাঁচা আমলকি খান। কেউ আবার রাতভর আমলকি ভিজিয়ে সেই জলটি পান করেন। কেউ খান প্যাকেটবন্দি আমলকির রস।
ভিটামিন, খনিজে ভরপুর ছোট্ট ফলটির পুষ্টিগুণ টেক্কা দিতে পারে অন্য যে কোনও ফলকেই। শরীরে ভিটামিন সি-র ঘাটতি মিটিয়ে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আমলকির জুড়ি নেই। পেয়ারা, কাগজিলেবু, কমলালেবুর চেয়েও বেশি ভিটামিন সি রয়েছে এই ফলে। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর আমলকি শরীরকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে। তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। আমলকি ভেজানো জল শরীর থেকে টক্সিন বার করে দিতেও সাহায্য করে। পুষ্টিবিদেরা বলেন, ‘‘আমলকির রস, আমলকি ভেজানো জল, স্যালাড, আচার— যে ভাবেই খাওয়া হোক না কেন, উপকার মেলে।’’
আমলকি ভেজানো জল উপকারী নিঃসন্দেহে। তবে এর কোনও ক্ষতিকর দিক নেই, সেটা ভাবাটা বোধহয় ঠিক নয়। পুষ্টিবিদেরা মনে করিয়ে দেন, উপকারী হলেও, সব খাবার বা পানীয় সকলের শরীরে সহ্য হয় না। সবচেয়ে বড় কথা, পরিমিত বোধটা খুব জরুরি। অতিরিক্ত কোনও কিছুই স্বাস্থ্যের জন্য ভাল নয়।
সমস্যা কাদের হতে পারে?
· আমলকিতে রয়েছে অ্যাসিড জাতীয় উপাদান। এতে মেলে অ্যাসকরবিক অ্যাসিড। তাই অম্বলের ধাত থাকলে একটু সাবধান হওয়া প্রয়োজন। আমলকি কুচিয়ে রাতভর জলে ভিজিয়ে রাখার পরে সেই জলটি খেলে খুব সমস্যা হওয়ার কথা নয়, তবে সরাসরি আমলকির রস কারও কারও সহ্য না-ও হতে পারে। শরীর বুঝে তা ডায়েটে জুড়তে হবে।
· কারও যদি রক্তচাপ নীচের দিকে থাকে, তা হলে নিয়মিত আমলকি খাওয়ার আগে চিকিৎক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া দরকার। কারণ, আমলকির রস রক্তচাপ কমাতে সহায়ক।
· আমলকি ডায়াবেটিক-বান্ধব। তবে যিনি নিয়ম করে ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খান, খাওয়া-দাওয়া করেন নিয়মমতো, তাঁর পক্ষে রোজের আমলকি জল খাওয়া সমস্যার কারণ হতে পারে। কারণ, ওষুধ-আমলকির জল অথবা রসের যুগ্ম প্রভাবে রক্তে শর্করার মাত্রা নামতে পারে। এই বিষয়ে সতর্ক থাকা দরকার।
অম্বলের ধাত থাকলে, কিডনি-লিভারের ক্রনিক অসুখে, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নিয়মিত আমলকির জল খাওয়া সঠিক না-ও হতে পারে। রোজের কোনও খাবার বা পানীয় ডায়েটে যুক্ত করার আগে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। উপকারিতা পেতে হলে বেশি নয়, খেতে হবে মাপমতো।