বেরি জাতীয় ফল দারুণ উপকারী বলছেন পুষ্টিবিদেরা। ভিটামিন, খনিজ তো থাকেই, সেই সঙ্গে বেরিতে থাকে উচ্চ মানের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। যা রোগ প্রতিরোধের পাশাপাশি ত্বক ভাল রাখতে, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতেও দারুণ কাজের। সেই কারণে চেনা ফলের বদলে অনেকে বেছে নিচ্ছেন ব্লুবেরি। টাটকা ফল কলকাতায় বিশেষ একটা মেলে না। তবু গুণের কথা শুনে হিমায়িত ফলই কিনছেন লোকে।
আরও পড়ুন:
ব্লুবেরি পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ হলেও দাম যথেষ্ট। তবে ব্লুবেরির সঙ্গে পুষ্টিগুণে টক্কর দিতে পারে চেনা অনেক ফলই। সেই তালিকায় রাখতে পারেন আমলকিও।
পুষ্টিগুণে তফাত কতটা?
১০০ গ্রাম ব্লুবেরিতে ক্যালোরির পরিমাণ ৫৭ কিলোক্যালোরি, কার্বোহাইড্রেট ১৪.৫ গ্রাম, শর্করা ১০ গ্রাম, ফাইবার ২.৪ গ্রাম। এ ছাড়া রয়েছে ভিটামিন সি, কে, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম।
১oo গ্রাম আমলকিতে মেলে ৫০ কিলোক্যালোরি, প্রোটিন ০.৫ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১৩.৭ গ্রাম, ফাইবার ৪.৩ গ্রাম। এ ছাড়া রয়েছে ভিটামিন সি, আয়রন, ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম। অ্যান্টি অক্সিড্যান্টও ভরপুর আমলকি।
পুষ্টিগুণে টেক্কা দিতে পারে আমলকি?
১০০ গ্রাম আমলকিতে ৩০০ মিলিগ্রামের চেয়ে বেশি ভিটামিন সি মেলে, অথচ একই পরিমাণ ব্লুবেরিতে ভিটামিন সি-এর পরিমাণ কম। আমলকিতে ফাইবারের মাত্রাও ব্লুবেরির চেয়ে কিঞ্চিৎ বেশি।ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা নির্ধারনে সাহায্য করে। এতে থাকা পটাশিয়াম এবং ক্রোমিয়াম বিপাকহার ঠিক রাখতে কার্যকর।
অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট
ব্লুবেরিতে মেলে অ্যান্থোসায়ানিন যা শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। হার্ট থেকে কিডনি ভাল রাখতে সাহায্য করে ফলটি। কম ক্যালোরির ফাইবার পূর্ণ ফলটি খেলে চট করে পেট ভরে যায়, অথচ ক্যালোরি সে ভাবে শরীরে যায় না। যা ওজন কমানোর জন্য জরুরি। তবে আমলকিতেও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট কিছু কম নেই। গ্যালিক অ্যাসিড, এলাজ়িক অ্যাসিড-সহ নানা রকম অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট উপাদান রয়েছে এতে।
শরীরে নানা ধরনের ফ্রি র্যাডিক্যাল তৈরি হয়, যা ক্ষতিকর। অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট ফ্রি র্যাডিক্যালের ফলে তৈরি হওয়া অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে। স্বাস্থ্য ভাল রাখে। ত্বক এবং চুলেরে জেল্লা ধরে রাখে।সুতরাং বাড়তি টাকা দিয়ে ব্লু বেরি খেতে না পারলেও স্বাস্থ্য ভাল রাখতে আমলকি যথেষ্ট।
কী ভাবে খাবেন?
আমলকি বাজারে সস্তায় পাওয়া যায় এই মরসুমে। প্রতিদিন সকালে একটা করে আমলকি চিবিয়ে খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। এতে থাকা ভিটামিন সি সংক্রমণের হাত থেকে শরীরকে বাঁচাতে সাহায্য করে। আমলকির রসও খাওয়া যেতে পারে।
কাঁচা আমলকি কেটে রোদে শুকিয়ে খাওয়ার পরে খেলে হজমক্ষমতা বাড়ে। বমিভাব কমে। আমলকি শুকিয়ে গুঁড়ো করে রেখে জলে মিশিয়েও খাওয়া যায়।
আমলকি কুরিয়ে নুন দিয়ে মাখিয়ে রোদে শুকিয়ে নিতে পারেন। নিয়মিত খাওয়ার পরে খেলে শরীর ভাল থাকবে। বদহজমের সমস্যা কমবে।