হঠাৎ এক দিন দেখলেন চুল পড়তে শুরু করেছে। কিংবা খাওয়াদাওয়া কমিয়েও ওজন কমছে না। অথবা রাত হলেই শুরু হচ্ছে পায়ে যন্ত্রণা। কারও হাড়ে ব্যথা হচ্ছে। কারও পেশিতে টান ধরছে। আবার কেউ কেউ সব ভুলতে শুরু করেছেন। ক্লান্তিবোধে ধুঁকছেন সারাদিন। কেউ বা ভুগছেন শ্বাসকষ্টে! এই সবই জটিল রোগের লক্ষণ বলে মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে তা না-ও হতে পারে। কী ভাবে বুঝবেন?
প্রতি মুহূর্তে শরীরের নানা কাজ সুষ্ঠ ভাবে হয়ে চলেছে, তার একটা কারণ খাবারের মাধ্যমে শরীরে যাওয়া পুষ্টির জোগান। এই প্রতিটি পুষ্টিগুণের আলাদা আলাদা ভূমিকা রয়েছে। কোনওটি স্নায়ুকে ভাল রাখে। কোনওটি ভাল রাখে হাড়। কোনওটি মজবুত রাখে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতাকে। পুষ্টিবিদ রমিতা কৌর বলছেন, ‘‘এর মধ্যে কোনও একটি যদি শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে না পায়, তখনই শুরু হয় গন্ডগোল। নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে শুরু করে শরীরে।’’
পুষ্টির অভাব হলে শরীরে যে সমস্ত উপসর্গ দেখা দেয় তা আগে থেকে জানা থাকলে উপসর্গ দেখে চিন্তিত না হয়ে প্রতিকারের ব্যবস্থা করতে পারেন নিজেই। তাতেও না হলে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হতে পারেন। রমিতা তেমনই কিছু উপসর্গের কথা জানিয়েছেন।
১। আয়রনের অভাবে
ক্লান্তিবোধ, দুর্বলতা, ত্বকের রং ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, মাথাঘোরা, নখ ভেঙে যাওয়া, চুল পড়া, হাত- পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, মাথা ধরার মতো সমস্যা হতে পারে।
২। ভিটামিন ডি-র অভাবে
হাড়ের ব্যথা, পেশির ব্যথা, ক্লান্তিবোধ, ছোট খাট সংক্রমণ জনিত অসুখ, হতাশাবোধ আসতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে ছোটদের রিকেট এবং বড়দের অস্টিওম্যালেসিয়ার মতো রোগ হতে পারে।
৩। ভিটামিন বি১২-র অভাবে
ক্লান্তিবোধ, দুর্বলতা, হাতে-পায়ে শিরশিরানি, স্মৃতিভ্রম হওয়া, হাত-পা অসাড় হয়ে যাওয়া, ঘনঘন মেজাজ বদলে যাওয়া, ফ্যাকাশে ত্বক এমনকি জিভে প্রদাহও হতে পারে।
৪। ক্যালশিয়ামের অভাবে
পেশির ব্যথা, অস্টিয়োপোরোসিসের সমস্যা, দাঁত ক্ষয়ে যাওয়া, নখ ভেঙে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৫। ভিটামিন এ-র অভাবে
রাতে দেখার সমস্যা, চোখের শুষ্ক ভাব, ত্বকের সমস্যা, নানা ধরনের সংক্রমণজনিত রোগ হতে পারে।
৬। আয়োডিনের অভাবে
ক্লান্তি, ওজন বৃদ্ধি, চুলপড়া, মেধা এবং বুদ্ধি প্রয়োগে সমস্যা।