বয়সকে হাতের মুঠোয় রাখতে কমবেশি সকলেই চান। কিন্তু, পারেন ক’জন? বার্ধক্যকে ঠেকিয়ে রাখার এই অদম্য বাসনা থেকেই নানা গবেষণা চলছে বিশ্ব জুড়ে। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন থেকে আমেরিকার ধনকুবের ব্রায়ান জনসন— বয়স কমানোর কৌশল খুঁজে বার করতে এই সব রথী-মহারথী বিভিন্ন রকমের পদ্ধতি বেছে নিয়েছেন। বয়সের চাকা উল্টো দিকে ঘোরাতে যেখানে ওষুধের উপর নির্ভর করছেন পুতিন, সেখানে ব্রায়ান আবার ওষুধের পাশাপাশি ভরসা রেখেছেন প্লাজ়মা থেরাপির উপর। প্রতি বছর এই থেরাপির জন্য ১৬ কোটি টাকা খরচ করেন তিনি। তবে এ সবের পাশাপাশি ডায়েটেও নজর দেওয়া বেশ জরুরি, এ কথা স্বীকার করেছেন তিনি।
সম্প্রতি ভারতীয় ইউটিউবার রণবীর আল্লাহবাদিয়ার একটি পডকাস্টে এসে বায়োটেকের সিইও ব্রায়ান তাঁর বয়স ধরে রাখার ডায়েটের রহস্য ফাঁস করেছেন। ব্রায়ান বলেছেন, ‘‘প্রত্যেকের শরীর আলাদা, তাই বয়স ধরে রাখার ডায়েটও প্রত্যেকের ক্ষেত্রে আলাদা রকম হওয়া স্বাভাবিক। নিজের শরীরের প্যাটার্নটা সবার আগে বোঝা দরকার। তার পরেই ডায়েট ঠিক করতে হবে।’’
বয়স ধরে রাখার ডায়েটে কী কী অবশ্যই থাকা উচিত? ব্রায়ানের জবাব, ‘‘ডাল, শাকসব্জি, বেরিজাতীয় ফল, বিভিন্ন ধরনের বাদাম আর এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল।’’ কোন ৫ খাবার ডায়েট থেকে বাদ দেওয়াই ভাল? ব্রায়ান বলেন, ‘‘অতিরিক্ত চিনি, রান্নার স্বাদবৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন রকম সস্, মশলাপাতি, প্রক্রিয়াজাত খাবার, ভাজাভুজি, আর যে উপকরণগুলির নাম আমরা ঠিকমতো উচ্চারণও করতে পারি না, সেগুলি ডায়েটে না রাখাই ভাল।’’
বয়স ধরে রাখার জন্য কী খাচ্ছেন, তার পাশাপাশি কখন খাচ্ছেন, সেটাও কিন্তু মাথায় রাখা জরুরি। ব্রায়ান বলেন, ‘‘আমি ছ’ঘণ্টার মধ্যে সারা দিনের খাবার খেয়ে নিই। সকাল ১১টায় আমি দিনের শেষ খাবার খাই। তার পর রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত ১৮ ঘণ্টা উপোস করে থাকি। আমি এমন খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত বলেই যে সকলের ক্ষেত্রে এতটা সময় খালি পেটে থাকা ভাল, তা না-ও হতে পারে।’’ এর পাশাপাশি সারা দিনে তিন লিটার জল খান তিনি। রাতের ঘুমে কোনও রকম ব্যাঘাত ঘটুক, চান না ব্রায়ান। তাই বিকেল চারটের পর আর জলও খান না তিনি। সারা দিনে ১২০ গ্রাম প্রোটিন খান তিনি।
বয়সের চাকা উল্টো দিকে ঘোরাতে আর কী কী জরুরি? ব্রায়ান মনে করেন, বয়স ধরে রাখতে ঘুমের সঙ্গে কোনও রকম আপস করলে চলবে না। তিনি বলেন, ‘‘তারুণ্য ধরে রাখতে ঘুম, ডায়েট আর শরীরচর্চার মধ্যে সঠিক ভারসাম্য রাখা জরুরি। রোজ শরীরচর্চার জন্য আধ ঘণ্টা সময় বার করতেই হবে। নিজেকে নিয়মে বাঁধতে পারলেই অনেকটা কাজ হয়ে যাবে।’’