আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কি প্রায়ই নিজের চেহারা দেখে হতাশ হন?
হয়তো ভাবলেন, পেটের চর্বির ভার কিছুটা কমলে ভাল হত। কিংবা ভাবলেন, কোমরের দু’পাশ আরও একটু ঝরঝরে হতে পারত না কি? চেহারায় একটা টানটান ভাব থাকলে নির্দ্বিধায় ফিটেড পোশাক পরতে পারতেন, ইচ্ছেমতো সাজতে কোনও বাধা থাকত না! কিন্তু ভেবে রোগা হওয়া যায় না (বরং দুশ্চিন্তা থেকে আরও ওজন বাড়তে পারে)। অতএব সম্বল হয় মনখারাপ। আর সেই মনখারাপ ধীরে ধীরে গড়ায় হতাশায়। চেহারা নিয়ে হতাশার শিকার এমন মানুষজন চারপাশে নেহাত কম নেই। সম্প্রতি বলিউড অভিনেত্রী নেহা ধুপিয়া জানালেন, তিনিও এই ধরনের হতাশার মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন। তবে সেই অন্ধকার থেকে তিনি বেরোতেও পেরেছেন, আর তার জন্য রাত দিন পরিশ্রম করে নেহাকে ওজন কমাতে হয়নি। নেহা নিজের ভাবনা বদলেছেন। এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেছেন, কী ভাবে নিজের প্রতি ওই খারাপ লাগাকে নিজেকে ভালবাসায় বদলাতে পেরেছেন তিনি।
বলিউডের নায়িকাদের যে ছকে বাঁধা চেহারার ধারণা অনুরাগীদের মনে গাঁথা আছে, নিজেকে সেই জায়গায় নিয়ে যাননি নেহা।
নেহা অভিনেত্রী হিসাবে কাজ করেছেন দীর্ঘ দিন। তাঁর ঝুলিতে কিছু হিট ছবিও রয়েছে। অথচ তার পরেও একটা সময় এসেছিল, যখন অভিনেত্রীর হাতে কোনও কাজ ছিল না। চেনা প্রযোজকেরাও সেই সময়ে কাজ দেননি তাঁকে। নেহা বলছেন, ‘‘চেহারা ভারী হয়ে গিয়েছিল হঠাৎ। রাস্তায় বেরোলেই সমালোচিত হতাম। পুরনো কোনও জামা আর গায়ে হচ্ছিল না। নিজেকে নিজেরই খারাপ লাগতে শুরু করেছিল। চরম হতাশায় ডুবে গিয়েছিলাম। কিন্তু অনেক পরে নানা অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে উপলব্ধি করলাম, চেহারায় সত্যিই কিছু আসে-যায় না! নিজেকে ভালবাসলে অনেক কিছু বদলে যায়। তাই নিজে যেমন, সেই ভাবেই ভালবাসতে হবে।’’
তখন সদ্য মা হয়েছেন নেহা। চেহারা ভারী হয়ে গিয়েছিল। জানিয়ছেন, রাস্তায় বেরোলেই সমালোচিত হতেন তিনি।
নেহা এখন এমটিভি রোডিজ়ের বিচারক। তাঁর অনুরাগীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়। দুঃসময় কাটিয়ে উঠলেও জীবনের কঠিন সময় অনেক কিছু শিখিয়েছে তাঁকে। নেহা বলছেন, ‘‘সন্তানের জন্ম দেওয়ার পরে চেহারা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। আমার স্বামী অঙ্গদ বেদি সেই সময় আমাকে প্রচণ্ড সমর্থন করেছে। আমার ওজন যখন অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে, ‘শেপ’-এ নেই। আমি নিজেই নিজেকে নিয়ে বিরক্ত। অঙ্গদ কিন্তু এক বারও আমাকে বুঝতে দেয়নি। ও সব সময় আমার প্রশংসা করেছে। বরং ওকে দেখে আমিই অবাক হতাম!’’
অঙ্গদ বেদি নেহার শারীরিক পরিবর্তনকে গুরুত্ব দেননি কখনও। বরাবর পাশে থেকেছেন।
নেহার ওজন এখন অনেকটাই কমেছে। তাঁকে প্রায়ই ফ্যাশনদুরস্ত জামাকাপড় পরতে দেখা যায়। তবে তিনি বলিউডের নায়িকাদের যে ছকে বাঁধা চেহারার ধারণা, সেই জায়গায় নিজেকে নিয়ে যাননি। নেহা বলেছেন, ‘‘ব্যাপারটা আমার কাছে সহজ ছিল না। আমি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় জিতে এই জায়গায় পৌঁছেছিলাম। মডেলিং করেছি। আমার কাছে সুন্দর চেহারার গুরুত্ব ছিল। কিন্তু ৪০ পার করার পরে আমি উপলব্ধি করলাম, চেহারায় কিছু যায়ৃ আসে না। নিজেকে আমি ভালবাসতে পারছি কি না, সেটাই সবচেয়ে জরুরি। সেটা যদি হয়, তবে আপনি এমনিই সুস্থ থাকবেন। ভাল থাকবেন। অকারণ ছোটখাট বিষয় নিয়ে হতাশায় ভুগবেন না।’’