Advertisement
E-Paper

পাতের ভাতেও মিশছে আর্সেনিক! ভারত-সহ এশিয়ার দেশগুলিই বিপদে, দাবি গবেষণায়

সেদ্ধ চালেও কি মিশছে আর্সেনিক? রোজের পাতে এই চালই রান্না হয় বেশির ভাগ বাড়িতে। নতুন গবেষণা হৃৎকম্পন বাড়িয়ে দেওয়ার মতোই।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:১০
New study says Arsenic level is rising in Rice increasing cancer risks for Asians

রোজের ভাতেও মিশছে আর্সেনিক! ছবি: ফ্রিপিক।

সবচেয়ে সহজপাচ্য ও নিরাপদ খাবারের মধ্যে সাদা ভাতের তুলনা নেই। যেমন চটজলদি হজম হয়, তেমন পেটও ঠান্ডা থাকে। কিন্তু ভাবুন তো, এই ভাতেও যদি মিশে থাকে আর্সেনিক বিষ, তা হলে? তেমনটা নাকি সত্যিই হচ্ছে! আর্সেনিকের থাবা এ বার পাতের ভাতেও।

শুধু জল নয়, রোজের অনেক খাবারেই মিশছে রাসায়নিক। ফসলের ফলন বাড়াতে যথেচ্ছ পরিমাণে কীটনাশকের ব্যবহার হচ্ছে, আর সেই বিষ সেচের জল বাহিত হয়ে মাটিতেও মিশছে দিনের পর দিন। তা ছাড়া চাষের কাজে ভূগর্ভস্থ আর্সেনিক যুক্ত জল ব্যবহারেও বিপদ বাড়ছে। ধানচাষের জমিও ভরে উঠছে আর্সেনিকে। এমনটাই দাবি নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীদের। সতর্ক করে গবেষকেরা জানিয়েছেন, এশিয়ার দেশগুলিই রয়েছে বিপদে। ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, তাইল্যান্ড, ভিয়েতনামের মতো দেশে চালের মধ্যেও পাওয়া গিয়েছে আর্সেনিক।

‘দ্য ল্যানসেট প্ল্যানেটারি হেল্‌থ’ জার্নালে এই গবেষণার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই উদ্বেগ বেড়েছে। মধ্যবিত্ত বা নিম্নবিত্ত পরিবার বলে নয়, সহজপাচ্য খাবার হিসেবে দেশের অধিকাংশ মানুষজন ভাত খেতেই অভ্যস্ত। তাতেও যদি আর্সেনিকের মতো বিষ মেশে, তা হলে বিপদ বাড়বে বই কমবে না। কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির পরিবেশবিজ্ঞানী লুইস জ়িসকা জানিয়েছেন, তাঁদের টিম গত ১০ বছর ধরে গবেষণা করছে। ভারত, বাংলাদেশ-সহ এশিয়ার আরও নানা দেশের ধানজমিগুলির নমুনা নিয়ে এসে পরীক্ষা করা হয়েছে। তাতে যা দেখা গিয়েছে, তা হৃৎকম্পন বাড়িয়ে দেওয়ার মতোই। অন্তত ২৮ রকমের চাল পরীক্ষা করে তাতে আর্সেনিক পাওয়া গিয়েছে। বিজ্ঞানীদের যুক্তি, একে তো জলবায়ু বদলের কারণে বাতাসে কার্বন-ডাই অক্সাইডের মাত্রা বাড়ছে, যা মাটি ও জলকে দূষিত করছে, তা ছাড়া কীটনাশকের এত বেশি ব্যবহার হচ্ছে চাষের জমিতে, যা বিপদের কারণ হয়ে উঠছে।

পানীয় জলে আর্সেনিক দূষণ নিয়ে সচেতনতার প্রচার চলছে। এ দিকে সেচের কাজে নির্বিচারে ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহারের ফলে ধানে-খড়েও যে আর্সেনিক ঢুকছে, সে খেয়ালই নেই। গবেষকেরা সতর্ক করে বলেছেন, আর্সেনিকের উপস্থিতি কিন্তু সেদ্ধ চালেই বেশি। প্রাত্যহিক আহারে সেদ্ধ চালের ব্যবহারই বেশি হয়। দেখা গিয়েছে, ভাতে অনেক ক্ষেত্রেই সহনমাত্রার থেকে বেশি থাকছে আর্সেনিক।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মান অনুযায়ী এক জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের শরীরের প্রতি কেজি ওজনে দুই মাইক্রোগ্রাম আর্সেনিক থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু যদি এই মাত্রা পেরিয়ে যায়, তখন হার্ট, কিডনি, ফুসফুসের রোগ তো হবেই, পাশাপাশি ক্যানসারের ঝুঁকিও বহু গুণে বেড়ে যাবে। সেই সঙ্গেই দেখা দেবে স্নায়ুর জটিল রোগ। আর্সেনিকের যে বিভিন্ন ধরন রয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক ‘আর্সেনিক-থ্রি’। যাকে সাধারণ ভাবে ‘আর্সেনাইড’ বলা হয়। চালে এই ধরনের আর্সেনিকের মাত্রাই বেশি। গবেষকদের বক্তব্য, কোনও ব্যক্তি যদি নিয়মিত এই চাল থেকে তৈরি ভাত, চিঁড়ে, খই, মুড়ি খেয়ে যান, তা হলে আর্সেনিকের প্রকোপে নানা রকম চর্মরোগের ঝুঁকিও বাড়বে। তাই ভূগর্ভস্থ জল সেচের কাজে ব্যবহার করা বন্ধ না হলে এই বিপদ থেকে রেহাই পাওয়ার উপায় নেই বলেই মনে করছেন গবেষকেরা।

Arsenic Soil Pollution
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy