সকালে খালিপেটে ‘ডিটক্স ওয়াটার’-এ চুমুক দেওয়ার চল বেড়েছে। নানাবিধ সব্জি, ফল বা মশলাপাতি ভিজিয়ে রেখে সেই জল পান করেন অনেকে। সে রকমই ঢেঁড়শ ভেজানো জলের উপকারিতার কথা জানেন অনেকেই। সেই জলেই আর একটি উপাদান মিশিয়ে খেতে পারেন। তাতে এই পানীয়ের গুণ বৃদ্ধি পাবে অনেকখানি। তা হল, হলুদ। ঢেঁড়শ আর হলুদের মিশ্রণ অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্যে ভরপুর। সকালে নির্দিষ্ট এই ‘ডিটক্স ওয়াটার’ খেলে কী কী উপকারিতা মিলতে পারে?
শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ: ঢেঁড়শের দ্রবণীয় ফাইবারগুলি পাচনতন্ত্রে শর্করার শোষণের গতি কমিয়ে দিতে পারে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এই সব্জি। কারণ, ইনসুলিনের কার্যকারীতা বাড়াতে পারে। ফলে ডায়াবিটিসের রোগীদের জন্য এই পানীয় স্বাস্থ্যকর হতে পারে।
হজমশক্তি বাড়ানো: ডায়েটারি ফাইবার উপস্থিতির কারণে মলত্যাগের প্রক্রিয়াকে মসৃণ করা এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করার ক্ষমতা রয়েছে ঢেঁড়শের। উপকারী ব্যাক্টেরিয়াকে পুষ্টির জোগান দিতে পারে বলে পাচনক্রিয়া ভাল হয়। আর এই জলে হলুদ যোগ করে দিলে এর প্রদাহনাশী বৈশিষ্ট্য পরিপাক নালির জ্বালা কমায়, আরাম দেয়। ফলে পেট ফাঁপা এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।
আরও পড়ুন:
ওজন নিয়ন্ত্রণ: ঢেঁড়শের ফাইবারগুলি পেট ভরিয়ে রাখে অনেক ক্ষণ। তাই অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমিয়ে দিতে পারে। হলুদ হজমক্ষমতা বাড়াতে পারে। ক্যালোরি কম থাকায় ওজন কমানোর জন্য এই পানীয় বেশ কার্যকরী হতে পারে।
ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ফেরানো: ভিটামিন এ, কে এবং সি ভরা ঢেঁড়শ-জল ত্বক আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। হলুদের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ব্রণের সমস্যা দূর করে ঔজ্জ্বল্য ফেরায় চেহারায়। রোজ এই পানীয় খেলে ত্বকের কোলাজেন বাড়তে পারে। ত্বক ধীরে ধীরে নরম, কোমল এবং টানটান হয়ে যায়, যেটিকে ‘কোরিয়ান গ্লাস স্কিন’-এর বৈশিষ্ট্য বলা হয়। সুতরাং কোরিয়ার মানুষদের মতো কাচসম ঝকঝকে ত্বক পেতে এই দুই উপকরণ মেশানো জল পান করতে পারেন।
ঢেঁড়শ আর হলুদের মিশ্রণ অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্যে ভরপুর। ছবি: সংগৃহীত।
হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যরক্ষা: ঢেঁড়শ এবং হলুদের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ধমনীর ভিতরে জ্বালাপোড়া ভাব থাকলে, তা দূর করে। সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতির পাশাপাশি হার্টের রোগের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে।
সকালের রুটিনে ঢেঁড়শ আর হলুদ মেশানো জলে ভরসা রেখে দেখতে পারেন। যদি উপকারি মেলে, তা হলে সেটিই আপনার রোজের ‘ডিটক্স ওয়াটার’ হয়ে উঠতে পারে। তবে একই সঙ্গে সতর্ক থাকতে হবে, কারণ এই পানীয় কখনও সখনও অম্বলের সমস্যার অনুঘটক হয়ে যেতে পারে।
(এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। সকালে খালিপেটে ঢেঁড়শ এবং হলুদ মেশানো জল আপনি খেতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।)