ডেঙ্গির ভাইরাস দাঁত-নখ বার করে ঘরে ঘরে হানা দিতে শুরু করেছে। রোজই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। কলকাতা ও সংলগ্ন জেলাগুলিতে ডেঙ্গি জ্বর নিয়ে বিশেষ করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে শিশুদের অভিভাবকদের মধ্যে। ডেঙ্গি হলে শুধুই যে জ্বর বা গায়ে র্যাশ হচ্ছে, তা নয়, আরও নানা রকম উপসর্গ দেখা দিচ্ছে ছোটদের। সেই সব লক্ষণ না চিনতে পারলে, চিকিৎসা দেরিতে হবে এবং বিপদও বাড়বে।
বর্ষার সময়ে ডেঙ্গির এডিস ইজিপ্টাই মশার বাড়বাড়ন্ত হয়। ভোরের দিকে ও সন্ধ্যার সময়ে ডেঙ্গির মশার উপদ্রব বাড়ে। সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা আর বিকেল ৪টে থেকে সন্ধ্যা ৭টা এডিস ইজিপ্টাই সবচেয়ে বেশি সক্রিয়। ওই সময়টাতে ছোটদের সাবধানে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পালের মতে, দেয়। জ্বর যদি বেশি হয়, তখন মাথায় জলপট্টি দিতে হবে এবং ঈষদুষ্ণ জলে গা-হাত-পা স্পঞ্জ করিয়ে দেওয়া দরকার। সেই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে, জ্বরের সঙ্গে আরও কিছু উপসর্গ দেখা দিচ্ছে কি না। অনেক সময়েই ভাইরাল জ্বর আর ডেঙ্গির মধ্যে তফাত করা যায় না।
ছোটদের কী কী লক্ষণ চিনে সতর্ক হতে হবে?
বাবা-মায়েরা খেয়াল করবেন, শিশুদের সর্দি-কাশি নেই, এ দিকে জ্বর ও গা-হাত-পায়ে ব্যথা হচ্ছে, তা হলে সাবধান হতে হবে।
ডেঙ্গি জ্বরে চোখে ব্যথা, গায়ে র্যাশ ছাড়াও পেটে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হতে পারে। ইদানীং দেখা যাচ্ছে, ছোটদের পেট ব্যথা, ডায়েরিয়া, ঘন ঘন বমি হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
ডেঙ্গিতে গাঁটে গাঁটে ব্যথা খুব ভোগাবে। পেশির খিঁচুনি হতে পারে ছোটদের। সেই সঙ্গে শরীরের গ্রন্থিগুলি ফুলে উঠবে।
হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসা ডেঙ্গি জ্বরের একটি লক্ষণ। অভিভাবকদের খেয়াল করতে হবে, শিশুর মাড়ি ও নাক থেকে রক্ত বার হচ্ছে কি না। বমির সঙ্গে যদি রক্ত বেরোয়, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। মলের সঙ্গেও রক্ত বার হতে পারে।
ডেঙ্গি জ্বরে শ্বাসের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। জ্বর ও শ্বাসকষ্টের লক্ষণ দেখলে সাবধান হতে হবে।
চিকিৎসক জানাচ্ছেন, শিশুকে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল ও জলীয় খাবার দিতে হবে। আর নিয়ম করে রক্তের প্লেটলেটের সংখ্যা পরীক্ষা করাতে হবে। যদি জ্বরের মধ্যে শিশুদের প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়, তা হলে ঝুঁকি না নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে। ডেঙ্গি আক্রান্ত শিশুর প্লেটলেট কাউন্টের সঙ্গে সঙ্গে পিসিভি বা প্যাকড সেল ভলিউম টেস্ট করিয়ে নেওয়াও জরুরি। এর সঙ্গে যদি শিশুটি জানায় যে, বুকে বা পেটে ব্যথা করছে, তা হলে আরও বেশি সতর্ক হতে হবে। ডেঙ্গিতে বুকে বা পেটে জল জমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। জ্বর হলে কোনও অবস্থাতেই নিজে চিকিৎসা করা বা শিশুকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো উচিত হবে না।