মুখগহ্বরের স্বাস্থ্যের সঙ্গে সামগ্রিক স্বাস্থ্যের যে যোগাযোগ আছে, তা আগেই প্রমাণিত। কিন্তু মনের সঙ্গেও যে দাঁত, জিভ ইত্যাদির সম্পর্ক রয়েছে, তা দাবি করল একটি গবেষণা। এর আগে একাধিক গবেষণায় বলা হয়েছে, মুখের মধ্যে অণুজীবের বৈচিত্রের বিভিন্ন গুরুত্ব রয়েছে, বিশেষ করে ব্যাক্টেরিয়ার। কারণ এটি সামগ্রিক স্বাস্থ্যে অবদান রাখে। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে, মুখগহ্বরে ব্যাক্টেরিয়ার বৈচিত্রের অভাব অবসাদ বা বিষণ্ণতার কারণ হতে পারে। যা একনাগাড়ে সব ক্ষেত্রে দুঃখ, হতাশার অনুভূতি তৈরি করে। মানসিক ব্যাধির সঙ্গে নাকি মুখের স্বাস্থ্যবিধির সম্পর্ক রয়েছে। এমনই দাবি করা হল নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির রোরি মেয়ার্স কলেজ অফ নার্সিংয়ের এক গবেষণায়।
মুখগহ্বর আসলে ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস এবং ছত্রাকের মতো বিভিন্ন অণুজীবের বাসস্থল। এইগুলি মুখের স্বাস্থ্য এবং সামগ্রিক সুস্থতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির রোরি মেয়ার্স কলেজ অফ নার্সিংয়ের ভাইস ডিন এবং গবেষণার অন্যতম প্রধান লেখক বেই উ বলছেন, ‘‘মুখের অণুজীব সমূহ এবং অবসাদের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পেলে এমন মানসিক অবস্থা তৈরি নেপথ্য কার্যকারণ বুঝতে পারব আমরা। পাশাপাশি, মনের রোগ সারানোর নতুন রাস্তাও মিলতে পারে।’’
আরও পড়ুন:
২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে গবেষকেরা আমেরিকার ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সের ১৫ হাজারেরও বেশি ব্যক্তির লালার নমুনা নিয়েছিলেন। যা ব্যবহার করে বিষণ্ণতার লক্ষণগুলি পর্যবেক্ষণ করা হয়। গবেষকেরা দেখেছেন, যাঁদের মুখে অণুজীবের বৈচিত্র কম, তাঁদের মধ্যে বিষণ্ণতার লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ধূমপান, মদ্যপান এবং মুখের স্বাস্থ্যবিধি পালন, ইত্যাদি মুখের ব্যাক্টেরিয়া কমানো বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
যদিও এই দুইয়ের সম্পর্ক নিয়ে বিশদ জানতে আরও গবেষণার প্রয়োজন বলে জানাচ্ছেন গবেষকেরা। এই গবেষণাটির উদ্দেশ্য মুখের অণুজীব সমূহ কী ভাবে কেবল মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে, তা দেখা নয়। এর ফলে চিন্তা ও সংবেদের অবক্ষয় এবং ডিমেনশিয়ার সূত্রপাত হচ্ছে কি না, তা-ও বোঝার চেষ্টা চলছে।