চল্লিশ পেরোলে যতই চালসে ধরুক না কেন, চশমা আর পরতেই হবে না। বই, খবরের কাগজ কাছে টেনে দিব্যি পড়া যাবে। বাড়ির বয়স্কদের সই করতে গেলে আর চশমা খুঁজতে হবে না। চশমা পরার ঝক্কি কমাবে একটি মাত্র আই ড্রপ— এমনটাই দাবি গবেষকদের। কয়েক ফোঁটা ড্রপ চোখে দিলেই ঝাপসা দৃষ্টি হবে স্পষ্ট। মূলত কাছের জিনিস দেখার সমস্যা মিটলেও, দূরের জিনিস দেখতেও খুব একটা কষ্ট হবে না। খুদে খুদে অক্ষরও দিব্যি পড়ে ফেলা যাবে।
কোপেনহেগেনের ইউরোপিয়ান সোসাইটি অফ ক্যাটারাক্ট অ্যান্ড রিফ্র্যাক্টিভ সার্জনস-এর গবেষকেরা এমন একটি চোখের ড্রপ তৈরি করে ফেলেছেন, যা নাকি প্রেসবায়োপিয়ার মতো দৃষ্টিজনিত সমস্যা সারিয়ে দেবে। দূরের দৃশ্য দেখার অসুবিধা হলে সে সমস্যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলে মায়োপিয়া। আর সেটিই কাছের দৃশ্যের ক্ষেত্রে হলে তাকে বলে প্রেসবায়োপিয়া। সহজ কথায়, চালসে। চল্লিশ পেরোলে দৃষ্টিজনিত এই সমস্যা অনেকের দেখা দেয়। তবে আজকাল ল্যাপটপ, মোবাইলের উপর যে ভাবে নির্ভরতা বেড়েছে তাতে চোখের দফারফা হচ্ছে কম বয়স থেকেই। প্রেসবায়োপিয়া এখন আর বার্ধক্যজনিত সমস্যা নয়, কমবয়সিদেরও হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
গবেষকেরা জানাচ্ছেন, কম বয়সে ছানি পড়া, দৃষ্টি ঝাপসা হওয়ার মতো সমস্যায় ভুগছেন অনেকেই। প্রেসবায়োপিয়া হলে সমস্যা আরও বাড়ে। তখন চোখের মণি শক্ত হয়ে যায়, তার স্থিতিস্থাপকতা হারিয়ে যেতে থাকে। চোখের পেশিগুলিতেও তার প্রভাব পড়ে। তখন খুব ছোট জিনিস কাছে থাকলেও দৃষ্টিতে তা ধরা দেয় না। সে কারণে সব সময়ে ‘রিডিং গ্লাস’ নিয়ে ঘুরতে হয়। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, নতুন ড্রপটি প্রায় ৭৬৬ জনের উপর পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, তাঁদের দৃষ্টিশক্তি উন্নত হয়েছে। মাস কয়েক ড্রপ ব্যবহারের পরে চশমা আঁটার প্রয়োজনও হয়নি।
নতুন কোনও ওষুধ বা চিকিৎসাপদ্ধতি এলে তার কার্যকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। নতুন চোখের ড্রপটিরও কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। যাঁদের উপর পরীক্ষা করা হয়েছে, তাঁদের হালকা মাথা ব্যথা, চোখে চুলকানি বা অস্বস্তি হতে পারে। তবে তা সাময়িক। দীর্ঘমেয়াদি কোনও সমস্যা বা সংক্রমণের ভয় এতে নেই বলেই দাবি করা হয়েছে।