কফির নাম বুলেটপ্রুফ। কাজ অবশ্য বুলেট নয়, শরীরে মেদ জমা আটকানো। সাধারণত চিনি ছাড়া কালো কফিতে ঘি বা নুনবর্জিত মাখন মিশিয়ে নিলে তাকেই বুলেটপ্রুফ কফি বা বুলেট কফি বলা হয়। যাঁরা মেদ ঝরানোর জন্য প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার খান এবং শর্করায় রাশ টানেন, তাঁদের অনেককেই এমন কফির গুণকীর্তন করতে শোনা যায়। বাদ যান না বলিউড তারকারাও। ডায়াবিটিসের রোগীদেরও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে বলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু তাঁরা কি ওজন কমানোর জন্য মাপা খাদ্যতালিকায় বুলেট কফিকে রাখতে পারেন?
সাদা চোখে বিচার করলে মনে হতে পারে ডায়াবিটিসের রোগীদের শর্করা খাওয়ার মাত্রায় বিধিনিষেধ রয়েছে। বুলেট কফিতেও শর্করা নেই। তাই অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু চিকিৎসক এবং পুষ্টিবিদেরা জানাচ্ছেন, বুলেট কফি ডায়াবিটিসের রোগীদের বুঝেশুনে খাওয়াই ভাল।
ছবি: সংগৃহীত।
চিকিৎসক কমলজিৎ সিংহ কথায়, ‘‘ডায়াবিটিসের রোগীদের বড় সমস্যা ওজন বৃদ্ধি, খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি এবং ভিটামিনের অভাব। যাঁরা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী তাঁদের অনেকেই বুলেট কফি খান প্রাতরাশ হিসাবে। কিন্তু ডায়াবিটিক রোগীরা তেমন করলে মুশকিল।’’ কমলজিৎ জানাচ্ছেন, ডায়াবিটিক রোগীদের যে কোনও খাবারেই পুষ্টি এবং ক্যালোরির ভারসম্য বজায় রাখতে বলা হয়। তাই তাঁরা যদি কোনও এক বেলার খাবারের পরিবর্ত হিসাবে বুলেট কফি খান, তবে পুরো পুষ্টি পাবেন না।
আরও পড়ুন:
তা ছাড়াও বুলেটপ্রুফ কফি ডায়াবিটিক রোগীদের কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে বলে জানাচ্ছেন কমলজিৎ। তিনি বলছেন, ‘‘বুলেটপ্রুফ কফিতে যেমন পুষ্টির পরিমাণ কম থাকে, তেমনই প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটও থাকে। ডায়াবিটিসের রোগীরা যদি সেই কফির পরিমাণ বুঝে না খান, তবে তাঁদের কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। এটি তাঁদের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল নয়।’’ চিকিৎসক বলছেন, বুলেট কফি চেখে দেখার ইচ্ছে হলে তা খেতেই পারেন ডায়াবিটিক রোগীরা। কিন্তু অন্তর্জালে জনপ্রিয় খাবারের বিকল্প পানীয় গ্রহণকে অভ্যাসে পরিণত না করাই হয়তো ভাল। বরং ডায়াবিটিক রোগীরা চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে স্বাস্থ্যকর খাদ্যতালিকা প্রস্তুত করে সেই খাবার খান।