ভারী খাওয়াদাওয়া করেই ঘরে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লেন! এ দিকে, চোখ বোজার কিছু ক্ষণ পরেই শুরু হল অস্বস্তি। আইঢাই ভাব। কী করবেন বুঝতে না পেরে কয়েক ঢোঁক জল খেলেন হয়তো। কিন্তু লাভ হল না তাতে। বরং বুকজ্বালা, চোঁয়া ঢেকুরের অত্যাচার শুরু হল! গ্যাস, অম্বল, অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা ‘জিইআরডি’ অর্থাৎ, ‘গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ’, সমস্যা যতই গুরুতর হোক না কেন, তার নিরাময় শুধু ওষুধে সম্ভব নয়। ওষুধ শুধু রোগের কষ্ট কমাতে পারে মাত্র। অম্বল, পেট ফাঁপা বা রিফ্লাক্সের মতো সমস্যা ভিতর থেকে নির্মূল করতে হলে, তার একমাত্র সহজ উপায় হল ব্যায়াম। তবে খুব কঠিন কিছু ব্যায়াম নয়। সহজ কিছু শরীরচর্চা পদ্ধতি ও যোগাসনেই পেটের যাবতীয় সমস্যার সমাধান হতে পারে।
কোন কোন ব্যায়ামে অম্বল নির্মূল হবে?
ব্রিস্ক ওয়াকিং
দুপুরের খাবার বা রাতের খাবার খাওয়ার পর ১৫ মিনিট হাঁটলে রক্তে শর্করা মাত্রা কমতে পারে। এমনকি, যাঁরা প্রত্যেক দিন ৪৫ মিনিট করে সকালে হাঁটছেন, তাঁরা যদি একটানা অত ক্ষণ না হেঁটে প্রত্যেকটা মিলের পর ১৫ মিনিট করে হাঁটতে পারেন, তা হলে বেশি উপকার পাবেন। ব্রিস্ক ওয়াক বা মিনিট ১৫ জোরে হাঁটলে গ্যাস-অম্বল তো কমবেই, হার্ট ও ফুসফুসের স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে।
ওজন তুলে ব্যায়াম
ওজন তুলে ব্যায়াম বা ‘ওয়েট ট্রেনিং’ বাড়িতেও করা যায়। উচ্চতা, ওজন ও শারীরিক অবস্থা বুঝে কার জন্য কতটা ওজন তোলা জরুরি, তা প্রশিক্ষকই ঠিক করে দেবেন। সাধারণত, দেড় কিলো থেকে তিন কিলো ডাম্বেলের ওয়ার্ক আউট করতে পারেন মহিলারা। পুরুষদের জন্য ৮-১০ কেজি ওজনের ডাম্বেল ভাল। তবে যাঁরা প্রথম শুরু করছেন, তাঁরা ৬-৮ কেজি তুলে অভ্যাস করতে পারেন। ডাম্বেল না কিনলে এক লিটারের দু’টি জলের বোতলকেও কাজে লাগাতে পারেন৷ প্রথমেই খুব ভারী ওজন তুলতে যাবেন না। প্রথম সপ্তাহে ২০ মিনিটের বেশি ব্যায়াম করবেন না। অভ্যস্ত হওয়ার পরে ও শরীরের জোর বাড়লে, তৃতীয় বা চতুর্থ সপ্তাহ থেকে সপ্তাহে তিন দিন ৪০ মিনিট করে ব্যায়াম করতে পারেন।
আরও পড়ুন:
যোগাসন
উষ্ট্রাসন
প্রথমে ম্যাটের উপর হাঁটু মুড়ে বসুন। এ বার পিছনের দিকে খানিকটা হেলে দুই হাত দিয়ে গোড়ালি ধরুন। মাথা পিছনের দিকে ঝুলিয়ে ধীরে ধীরে পেটের অংশটা সামনের দিকে এগিয়ে দিন। এর পরে ডান হাতের বুড়ো আঙুলটি ডান দিকের গোড়ালির ভিতর দিকে রেখে বাকি সব আঙুল বাইরের দিকে রাখুন। বাঁ দিকের ক্ষেত্রেও একই ভাবে রাখুন। পায়ের পাতা মাটিতে রাখুন।
বজ্রাসন
ম্যাটের উপর হাঁটু গেড়ে মেরুদণ্ড টানটান করে বসুন। নিতম্ব থাকুক গোড়ালির উপর। পায়ের আঙুলে বেশি চাপ দেবেন না। এ বারে হাঁটুর উপরে হাত রাখুন। এই অবস্থানে পিঠ ও মাথা একই সরলরেখায় রাখার চেষ্টা করুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। এই অবস্থায় দুই থেকে পাঁচ মিনিট পর্যন্ত থাকার চেষ্টা করুন। পরে সময় আরও বাড়ানো যেতে পারে।
কপালভাতি প্রাণায়াম
কপালভাতি খুব তাড়াতাড়ি হজমের সমস্যা দূর করতে পারে। প্রথমে পদ্মাসন বা সুখাসনে বসুন। শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হলে মুখ দিয়ে শ্বাস নিয়ে কিছু ক্ষণ ধরে রাখুন। ধীরে ধীরে নাক দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। খেয়াল রাখবেন, শ্বাস ছাড়ার সময়ে পেট যেন একটু করে ভিতরের দিকে ঢুকে আসে। এই পদ্ধতিতে ২০ বার শ্বাস নিন ও ছাড়ুন।