Advertisement
E-Paper

হার্টের রোগের মতোই উপসর্গ, কী সমস্যায় ভুগছেন সৃজিত? কাদের হতে পারে এই রোগ?

বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়। শুরুতে মনে করা হয়েছিল, হার্টের রোগ। তবে পরে জানা যায়, হার্টের কোনও সমস্যাই হয়নি। তা হলে কী হয়েছে পরিচালকের?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:১০
Srijit Mukherjee is suffering from Gastroesophageal Reflux Disease, what are the symptoms

কী রোগে ভুগছেন সৃজিত? —ফাইল চিত্র।

বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট হওয়ার পরে হার্টের সমস্যা বলেই ধরে নিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। শ্বাসকষ্ট নিয়ে শুক্রবার রাতে কলকাতার একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল চলচ্চিত্র পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়কে। শনিবার সকাল থেকেই নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলে। হার্টের রোগ হয়েছে কি না, সে সংক্রান্ত পরীক্ষাও হয়। তার পর বেলার দিকে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, সৃজিতের হার্টে কোনও সমস্যা নেই। বাকি মেডিক্যাল টেস্টের রিপোর্টও স্বাভাবিক। তবে যে সমস্যা হয়েছে সৃজিতের, তার নাম ‘জিইআরডি’ অর্থাৎ, ‘গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজ়িজ়’। এটি এক ধরনের হজমের ব্যাধি, যাতে প্রচণ্ড রকম গলা-বুক জ্বালা হয়। আর এর উপসর্গও অনেকটাই হার্টের রোগের মতো।

হার্টের চিকিৎসক শুভানন রায়ের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন সৃজিত। আগামিকাল তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হতে পারে। চিকিৎসকেরাই জানিয়েছেন, ‘জিইআরডি’-এর কারণেই বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল তাঁর। শরীরে অস্বস্তিও শুরু হয়। যদিও এখন তিনি স্থিতিশীল।

‘জিইআরডি’ কী ধরনের রোগ?

ভারী খাবার খাওয়ার পরে অনেকেরই চোঁয়া ঢেকুর ওঠে। গলা-বুক জ্বালা করতে থাকে। মনে হয় গলার কাছে খাবার দলা পাকিয়ে রয়েছে। বুকে ব্যথাও হয়। এই সবই ‘জিইআরডি’-র লক্ষণ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে খাবার পাকস্থলী থেকে খাদ্যনালি হয়ে উপরে উঠে আসতে থাকে। ফলে পাচকরসও ঠেলে উপরের দিকে উঠতে থাকে। তখনই গলা-বুক জ্বালা, বুকে ব্যথার মতো সমস্যা শুরু হয়। বুকে এতটাই ব্যথা বা প্রদাহ শুরু হয় যে মনে হতে পারে, এই বুঝি হার্ট অ্যাটাক হয়ে গেল।

মুখ ও খাদ্যনালির সংযোগস্থলকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলে ইসোফেগাস, আর যখন পাকস্থলীর খাদ্যবস্তু ইসোফেগাসে ফিরে আসে তখন তাকে বলে ‘গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজ়িজ়’। এমনটাই জানালেন কলকাতার এক হাসপাতালের মেডিসিনের চিকিৎসক রণবীর ভৌমিক। তিনি বুঝিয়ে বললেন, “যখন খাবার খাওয়া হয়, তখন খাদ্যনালি দিয়ে সেই খাবার নীচের দিকে নেমে পাকস্থলীতে গিয়ে পৌঁছোয়। খাবার চলাচলে সাহায্য করে একটি পেশির বলয়, যার নাম ‘লোয়ার ইসোফেজিয়াল স্ফিঙ্কটার’ বা ‘এলইএস’। খাবার খাওয়ার সময়ে এই পেশি শিথিল হয় ও খুলে যায়। তখন খাবার খাদ্যনালিতে প্রবেশ করে। যদি পেশির গঠনে অস্বাভাবিকতা থাকে, তা হলে কিন্তু সেটি ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। তখন উল্টোটাই হয়। খাবার মুখগহ্বর ও পাকস্থলীর সংযোগকারী খাদ্যনালি দিয়ে উপরের দিকে উঠতে থাকে। গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স রোগে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে এই পেশি আবার খাবার খাওয়ার সময় ছাড়া অন্যান্য সময়ও খুলে যায়। ফলে পাকস্থলী থেকে অম্লরস যখন-তখন উপরে উঠে আসে। ফলে বুকে-গলায় জ্বালার অনুভূতি হয়।”

জিইআরডি ওষুধ খেয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, তবে যদি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছোয়, তখন অস্ত্রোপচার করার প্রয়োজন হতে পারে। সেই সঙ্গে কিছু নিয়মও মানতে হয়। কী কী সেই নিয়ম?

১) জিইআরডি থাকলে ভারী খাবার খেয়েই শুয়ে পড়া যাবে না। খাবার খাওয়ার পর ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা বসে থাকতে হবে বা হাঁটাহাঁটি করতে হবে।

২) ভাজাভুজি বা বেশি তেল-মশলা দেওয়া খাবার খাওয়া চলবে না। কারণ অম্বল হলেই অ্যাসিড রিফ্লাক্স আরও বেড়ে যাবে।

৩) রাতে শোয়ার অন্তত ঘণ্টা তিনেক আগে খাওয়া সেরে নিতে হবে।

৪) সপ্তাহে দু’বারের বেশি এমন সমস্যা হলে অ্যান্টাসিড না খেয়ে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

Srijit Mukherji GERD Symptoms acidity
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy