সুস্থ থাকার জন্য ভাজাভুজি, মশলাদার স্ন্যাকস এড়িয়ে যেতে বলা হয়। পুষ্টিবিদেরা আবার আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেন, অসময়ে মুখ চালানোর ইচ্ছে হলে ফল খেতে। কিন্তু তেলেভাজা খাওয়ার সাধ হলে কারই বা তার বদলে ফল খেতে ভাল লাগে!
সারা দিন স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়েও বিকেল হলেই মুচমুচে ঝালঝাল বা নোনতা খাবার খাওয়ার ইচ্ছে পেয়ে বসে, এমন মানুষ নেহাত কম নেই আশপাশে। আকাশে সূর্য ঢলার সঙ্গেসঙ্গেই তাঁদের ফুচকা, চপ, তেলেভাজা, রোল, শিঙাড়া খাওয়ার ইচ্ছে চেপে বসে। এক পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, বিকেলে খাওয়া ওই ভাজাভুজি খাওয়ার জের থাকতে পারে নৈশাহারের সময় পর্যন্ত। কারণ, শিঙাড়া-কচুরি-চপ-কাটলেট ধাঁচের খাবার হজম হতে একটা গোটা বেলা লেগে যেতে পারে।
দিল্লির পুষ্টিবিদ পুনম দুনেজা একটি পডকাস্টে জানিয়েছেন, একটি শিঙাড়া হজম করতে কম ৪-৬ ঘণ্টা লেগে যেতে পারে। তেলে ভাজা পুরভরা ওই ধরনের যেকোনও খাবারই হজম করতে পরিপাক তন্ত্রের সময় লাগে অনেক বেশি। অন্য দিকে, একটি ফল, যেমন আপেল হজম করতে সময় লাগে আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা।
এতটা তফাত কেন? প্রথমত, আপেলে রয়েছে প্রাকৃতিক ‘চিনি’। যা সহজেই হজম হয়। কাজ করার শক্তিও জোগায়। পাশাপাশি ফলে থাকা ফাইবার অন্ত্রকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। যে কারণে ফল খাওয়ার ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই আবার খিদে পেয়ে যায়।
আরও পড়ুন:
অন্য দিকে, শিঙাড়ায় ময়দার খোলে মশলা মাখা আলুর পুর দেওয়া, তারপরে তা ডুবো তেলে ভাজা। তার পরতে পরতে অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট জমা হয়। বাইরের বহু ব্যবহৃত তেলে ভাজা হলে সেই ফ্যাটের সঙ্গে জোড়ে বিষাক্ত পদার্থও। পাকস্থলীতে খাবার হজম করতে সাহায্য করে যে সমস্ত এনজ়াইম, ওই ফ্যাট ভাঙতে তাদের অনেক বেশি সময় লাগে। সে জন্যই একটি মাত্র শিঙাড়া হজম করতে অনেকটা সময় লেগে যায়। অনেক সময় হজম হয় না-ও ফলে গ্যাস, অম্বলের সমস্যা হয়। পেট ভার হয়ে থাকে।
পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, যাঁদের বয়স কম, হজম ক্ষমতা বেশি, তাঁদের ক্ষেত্রেই এমনটা হতে পারে। আর যাঁদের বয়স বেশি অথবা যাঁরা স্বাস্থ্যকর খাওয়া দাওয়া করেন না, শরীরে অন্যান্য জটিলতা রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে শিঙাড়ার মতো গুরুপাক তেলে ভাজা খাবার খেলে আরও অন্য সমস্যাও হতে পারে। তাই খাবার খাওয়ার আগে কী খাচ্ছেন, আর শরীরে তার কী প্রভাব পড়তে পারে তা জেনে খাওয়াই ভাল।