ভারতের সব ক’টি রাজ্যের মধ্যে অধিকাংশেরই মূল খাবার হল ভাত। এ দেশে যেমন বিরিয়ানির-পোলাওয়ের মতো সুস্বাদু চালের পদ রয়েছে, তেমনই রয়েছে সুগন্ধে ভরপুর ছোট-মাঝারি-লম্বা দানার নানা রকমের চালও। সেই সব চালের দামও নেহাত কম নয়। কিন্তু বিরিয়ানির দেশকেও ভাতের দামে মাত দিয়েছে জাপান। কারণ, এ বিশ্বের সবচেয়ে দামি চাল পাওয়া যায় সুশির দেশেই।
নাম কিনমেমাই। গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে এই চালের নাম নথিভুক্ত রয়েছে। কারণ, এই চালই এখনও পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে দামি চাল। প্রতি কেজি বিক্রি হয় ১২ হাজার ৫০০ টাকায়। তবে দাম তো আর বিনা কারণে হয় না! কিনমেমাই চালেরও মহার্ঘ হওয়ার উপযুক্ত গুণ আছে। রয়েছে ব্যবহার করার নানা সুবিধাও।
১। ধুতে হয় না
সাধারণত ভাত রান্না করার আগে চাল ধুয়ে নেওয়া হয়। কারণ, তাতে চালে থাকা অতিরিক্ত স্টার্চ, ধুলো ধুয়ে বেরিয়ে যায়। সেই সঙ্গে চালও কিছুটা নরম হয়। ফলে ভাত সেদ্ধ হয় দ্রুত। কিনমেমাই চালে ওই ঝক্কির দরকার নেই। একটি বিশেষ ধরনের প্রক্রিয়াকরণের সাহায্যে, এই চালকে আগেই ধুয়ে তা থেকে অতিরিক্ত স্টার্চ বার করে দেওয়া হয়, ওই প্রক্রিয়াতেই বাদ যায় চালের খুদকুঁড়োও। তাই না ধুয়েই রান্না করা যায়।
২। রোগ প্রতিরোধ
ভাতে থাকে লাইপোপলিস্যাকারাইডস। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তিকে ভাল রাখতে সাহায্য করে। শরীরের ক্ষত মেরামতির ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি, তা অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্যও ভাল বলে জানাচ্ছে জাপানের টয়ো রাইস কর্পোরেশন। যারা এই চাল উৎপাদন করে তারা বলছে, ওই লাইপোপলিস্যাকারাইডস বা এলপিএস সাধারণ চালে যে পরিমাণে থাকে, তার থেকে পাঁচ গুণ বেশি থাকে কিনমেমাই চালে।
আরও পড়ুন:
৩। ‘চিনি’ কম
ডায়াবিটিসের রোগীরা ভাত কম খান শর্করা বেড়ে যাওয়ার ভয়ে। কিনমেমাই চালে শর্করার মাত্রা সাধারণ চালের থেকে অনেকটাই কম। এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্সও কম হওয়ায় রক্তে শর্করা এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে যায় না। এর পাশাপাশি, এই চালে ক্যালোরির মাত্রাও অনেকটা কম।
৪। পুষ্টিগুণ
কিনমেমাই চালে রয়েছে বি১, বি৬, ই ভিটামিন এবং নায়াসিন। রয়েছে ফাইবারও। তাই সাধারণ চালের থেকে এটি জরুরি পুষ্টিগুণেও অনেকখানি এগিয়ে।
৫। স্বাদ
খাওয়ার জিনিসে শেষ কথা বলে স্বাদ। এ চাল থেকে তৈরি ভাতে রয়েছে বাদামের মতো স্বাদ। ব্রাউন রাইস হওয়া সত্ত্বেও এর রং সাদাটেই। নরম ফুলোফুলো এই ভাত মুখে দিলে অনেকটা নরম ক্রিমের মতো স্বাদ লেগে থাকে, যা সাধারণ চালের থেকে অনেক বেশি সুস্বাদু।