কোষ্ঠকাঠিন্য মানেই যন্ত্রণা। দীর্ঘ সময় ধরে যিনি ভুগছেন, তিনিই জানেন কষ্ট কতটা। কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে খাবার মেপে খেতে হয়, তেলমশলা দেওয়া খাবার একেবারে ছেঁটে ফেলতে হয়। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার যত বেশি খাওয়া যাবে, ততই ভাল। চিকিৎসকেরা বলেন, কোষ্ঠকাঠিন্যের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে হলে জীবনযাপনে নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। সেখানে খাওয়াদাওয়ারই সবচেয়ে বড় ভূমিকা রয়েছে। তবে শুধু খেলেই হবে না, নিয়ম মেনে খেতে হবে। কোন খাবারের সঙ্গে কোন খাবারটি খেলে উপকার হবে, তা নিয়ে স্বচ্ছ ধারণা নেই অনেকেরই। কোষ্ঠকাঠিন্য যদি নির্মূল করতে হয়, তা হলে কিছু বিশেষ খাবার মিলিয়ে মিশিয়ে খেতে হবে। অর্থাৎ, সঠিক ‘ফুড কম্বিনেশন’ জরুরি।
খেজুরের সঙ্গে সিসিএফ পানীয়
খেজুরকে বলা হয় রাজকীয় ফল। শুধু অতুলনীয় স্বাদ আর গন্ধের জন্য নয়, খেজুরের খ্যাতি তার অসাধারণ রোগ নিরাময় ক্ষমতার জন্যও। প্রতি একশো গ্রাম খেজুরে মেলে ২৮২ কিলো ক্যালরি শক্তি, ৭৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ২.৫ গ্রাম প্রোটিন এবং ০.৪ গ্রাম ফ্যাট। তা ছাড়া খেজুরে রয়েছে কিছু অপরিহার্য অ্যামাইনো অ্যাসিড। খেজুরের সঙ্গে খেতে হবে সিসিএফ পানীয়। সেটি হল জিরে, ধনে ও মৌরি ভেজানো জল। এক গ্লাস পরিমাণ জলে জিরে, ধনে ও মৌরি নিয়ে অল্প আঁচে ফোটাতে হবে। ছেঁকে নিয়ে ঈষদুষ্ণ জল পান করতে হবে, সঙ্গে খেতে হবে খেজুর।
কখন খাবেন: সন্ধ্যার সময়ে বা রাতে শুতে যাওয়ার আগে এটি খেলে, হজম ভাল হবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা অনেক কমে যাবে।
পেয়ারার সঙ্গে অ্যালো ভেরা জুস
অ্যালো ভেরাতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ই, বি১২, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও আয়রনের মতো খনিজ ও প্রায় ১৮-২০ রকম অ্যামাইনো অ্যাসিড। অ্যালো ভেরার জুস বিপাকক্রিয়ায় সাহায্য করে, হজমশক্তি ভাল করে। এর সঙ্গে ফাইবার সমৃদ্ধ পেয়ারা খেলে তা আরও বেশি উপকারী হবে। ফাইবার, ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ পেয়ারা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোমের মতো রোগও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।
আরও পড়ুন:
কখন খাবেন: পেয়ারার সঙ্গে অ্যালো ভেরার জুস খেতে হবে দুপুরে খাওয়ার আগে। দু’টি মিলের মাঝে। ওই সময়ে পেট যেন খুব ভর্তি না থাকে।
পাকা পেঁপের সঙ্গে ঈষদুষ্ণ লেবুর জল
পাকা পেঁপের গন্ধে নাক সিঁটকান অনেকেই। কিন্তু এর অনেক গুণ। বিভিন্ন ভিটামিন এবং খনিজের প্রাকৃতিক উৎস পাকা পেঁপে পেটের জন্য খুবই ভাল। ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর খিদে বাড়ায়, পেট পরিষ্কার রাখে। পেট পরিষ্কার থাকলে গ্যাস অম্বলের সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে থাকে। কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতে এর জুড়ি মেলা ভার। তবে পাকা পেঁপে শুধু খেলে হবে না, এর সঙ্গে লেবু ও মধুর জল মিশিয়ে খেতে হবে। তবেই উপকার বেশি হবে।
কখন খাবেন: সকালে খালি পেটে খাওয়াই সবচেয়ে ভাল। এই ‘কম্বিনেশন’ শরীর ডিটক্স করবে, পেট ভার, পেট ফাঁপা ও অম্বলের সমস্যাও দূর করবে। তবে ডায়াবিটিস থাকলে মধু বাদ দিতে পারেন।