হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো সমস্যা আগে থেকে বুঝে ওঠা কার্যত অসম্ভব। বর্তমানে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যাটা দিন দিন বাড়ছে। অনেকেই মনে করেন যে, বয়সের সঙ্গে বোধ হয় হৃদ্রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। তবে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা কিন্তু সে ধারণাকে নস্যাৎ করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। সঙ্গীতশিল্পী কেকে-র মৃত্যু আচমকাই ঘটেছে হার্ট অ্যাটাকে। বাঁচানোর সময়টুকু পাওয়া যায়নি। আসলে সাধারণ মানুষের পক্ষে সব উপসর্গ খেয়াল করা সম্ভব নয়। তা হলে উপায়? ইসিজি বা ইকোকার্ডিয়োগ্রামেই যে বিপদের আভাস পাওয়া যাবে, তা নয়। বরং দু’টি এমন রক্ত পরীক্ষা আছে, যেগুলি করালে বছরখানেক আগেই ধরা পড়বে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি আছে কি না।
হিমোসিস্টিন ব্লাড টেস্ট
হিমোসিস্টিন টেস্টে হার্ট অ্যাটাকের আগাম খবর পাওয়া সম্ভব। এটি এক ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড, যা খাবারের বিপাকের সময়ে তৈরি হয়। ভিটামিন বি-এর সঙ্গে মিশলে হিমোসিস্টিন বদলে গিয়ে বি৬, বি১২ ও ফোলিক অ্যাসিড তৈরি করে। কিন্তু গোলমালটা বাধে, যখন এই অ্যামাইনো অ্যাসিডের মাত্রা অনেকটা বেড়ে যায়। তখন এটি ধমনীর ভিতরে জমা হতে থাকে ও রক্তপ্রবাহে বাধা তৈরি করে। দিনের পর দিন যদি রক্তে হিমোসিস্টিন জমা হতে থাকে, তা হলে ধমনীতে তা ‘প্লাক’-এর মতো জমতে থাকবে ও হার্ট ব্লকেজের কারণ হয়ে উঠবে।
আরও পড়ুন:
কারা করাবেন এই পরীক্ষা?
বংশগত ভাবে হার্ট অ্যাটাকের ইতিহাস আছে, এমন লোকজন এই পরীক্ষা করিয়ে রাখতে পারেন।
ভাজাভুজি বা মশলাদার খাবার বেশি খান যাঁরা।
অতিরিক্ত ধূমপান ও মদ্যপান করলে এই টেস্ট করানো খুব জরুরি।
অটোইমিউন রোগ থাকলে অথবা স্নায়ুর রোগ থাকলে এই টেস্ট করিয়ে রাখা প্রয়োজন।
সি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন টেস্ট (সিআরপি)
হৃদ্রোগের হদিস পেটে সিআরপি টেস্ট করানো খুব জরুরি। ‘সিআরপি’ এক ধরনের প্রোটিন। রক্তে এই প্রোটিন বৃদ্ধি পেলে প্রদাহ বাড়ে। সিআরপি টেস্ট করালে বোঝা যায়, শরীরে কী পরিমাণ প্রদাহ হচ্ছে। যার থেকে বোঝা সম্ভব হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি আছে কি না।
‘সিআরপি’-র মাত্রা সাধারণত ২ মিলিগ্রাম বা তার নীচে থাকা স্বাভাবিক। তবে এর মাত্রা যদি ১০-১৫ মিলিগ্রাম থাকে, তা হলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়বে। সিআরপি টেস্টে প্রায় বছর তিনেক আগে থেকে জেনে নেওয়া সম্ভব যে, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে কি না। থাকলেও তা কতটা।