জল কম খাওয়া, সঠিক সময়ে খাবার না খাওয়া, বাইরের খাবার বেশি পরিমাণে খাওয়া— এমন কিছু কারণে কিডনি সংক্রান্ত নানা সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। কিডনিতে সংক্রমণ, পাথর জমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। যে কোনও বয়সে ধরা পড়তে পারে এই রোগ। এক বার কিডনির সমস্যা ধরা পড়লে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া জরুরি। বিশেষ করে খাওয়াদাওয়ায়।
কিডনির সমস্যা থাকলে প্রথমেই জরুরি প্রস্রাব ও রক্ত পরীক্ষা করে প্রোটিন, ক্রিয়েটিনিন, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস, শর্করা ইত্যাদির পরিমাণ দেখে নেওয়া। অ্যাকিউট কিডনি ইনজুরি না কি ক্রনিক কিডনি ফেলিয়োর, তা জানা ভীষণ জরুরি। সেই অনুযায়ী পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে রোজের ডায়েট স্থির করতে হবে। অ্যাকিউট কিডনি ইনজুরির সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের প্রোটিন খাওয়ার বিষয়ে অতিরিক্ত কড়াকড়ি করা হয় না। তবে ক্রনিক কিডনি ডিজ়িজ়ে প্রোটিনের সীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। আবার রোগীর ডায়ালিসিস চললে তখন খাবারে প্রোটিনের মাত্রা বাড়ানো হয়।
জেনে নিন, কিডনির অ্যাকিউট সমস্যা ধরা পড়লে কী কী খাওয়া য়াবে না?
১) কিডনি রোগীদের সবার আগে কতটা জল খাবেন, তা জানা দরকার। চিকিৎসকের নির্দিষ্ট করে দেওয়া জলের চেয়ে বেশি পরিমাণ তরল কখনওই খাওয়া যায় না। যে কোনও রকম নরম বা অ্যালকোহল-যুক্ত পানীয়, এনার্জি ড্রিঙ্ক খাওয়াও বারণ।
২) কিডনি রোগীদের পক্ষে সবচেয়ে ক্ষতিকারক হল পটাশিয়াম আর ফসফরাস, এই দুই খনিজ। তাই যে সব খাবারে এই দুই উপাদান থাকে, সেগুলি এড়িয়ে চলাই ভাল কিডনিরোগীদের। উচ্চমাত্রায় পটাশিয়াম থাকে যে সব ফ্লে, যেমন কলা, আম, খেজুর, কমলালেবু ইত্যাদি এবং সব্জির মধ্যে আলু, টম্যাটো খাওয়া চলবে না। কিডনির রোগীদের জন্য সবুজ শাকসব্জি না খাওয়াই ভাল। খেতে হলেও মানতে হবে নিয়ম। প্রথমে শাক কেটে সেগুলিকে জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে, তার পর জল ফেলে খানিক ক্ষণ গরম জলে ডুবিয়ে রাখা জরুরি। শেষে গরম জল ছেঁকে ফেলে দিয়ে তার পরেই রান্না করা দরকার।
আরও পড়ুন:
৩) দুগ্ধজাত খাবার, যেমন পনির, ছানা, দই, ডাল বা বীজ জাতীয় খাবারে ভাল মাত্রায় ফসফরাস থাকে। তাই কিডনির রোগীদের জন্য এই সব খাবার এড়িয়ে চলাই ভাল।
৪) রোগীদের সাধারণত কম সোডিয়াম-যুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। রান্নায় নুনের পরিমাণ মেপে দেওয়া ছাড়াও সস্, আচার, চিপ্স বা চিজ়ের মতো প্রিজ়ারভেটিভ দেওয়া প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার একেবারেই চলবে না।
৫) মাথা ব্যথা, পায়ে ব্যথা হলে অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই বেদনানাশক ওষুধ খেতে শুরু করেন। এই অভ্যাস মোটেও ভাল নয়। কিডনির রোগীদের শরীরে ব্যথার ওষুধ মারাত্মক প্রভাব ভেলতে পারে। তাই সতর্ক হোন।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কিডনির রোগীদের এক এক জনের জন্য এক এক রকম ডায়েটের পরামর্শ দেওয়া হয়। পুষ্টিবিদ কিংবা নেফ্রোলজিস্টের পরামর্শ ছাড়া কিডনি রোগীদের ডায়েটে কোনও রকম বদল না আনাই ভাল।