Advertisement
E-Paper

ব্রাশ করেও যাবে না মুখের দুর্গন্ধ, যখন তখন কালশিটে পড়বে শরীরের নানা জায়গায়, কোন অসুখের লক্ষণ?

মুখের দুর্গন্ধ মানে দাঁত-মাড়ির সমস্যা না-ও হতে পারে। পেটের গোলমালের কারণে হচ্ছে ভেবে অ্যান্টাসিড খেতে শুরু করলে বিপদে পড়বেন। সমস্যার আসল কারণ কী, তা জেনে রাখা ভাল।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৫:২৬
What are the causes and symptoms of Fetor Hepaticus

মুখের কটু গন্ধের কারণ অনেকেই জানেন না, কী সেই অসুখ? ফাইল চিত্র।

মদ্যপান করেন না। ধূমপানের নেশাও নেই। এর পরেও মাঝেমধ্যেই মুখে এমন কটু গন্ধ, যা নিয়ে আর পাঁচজনের সামনে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়তে হয়। অনেককেই বলতে শুনবেন, পেটের সমস্যার জন্য মুখে গন্ধ হয়। তবে এর একটা অন্য কারণও আছে। মুখের দুর্গন্ধ অনেক ক্ষেত্রেই হতে পারে লিভারের রোগের পূর্বলক্ষণ। রক্তে সালফার ও অন্যন্য দূষিত পদার্থ জমতে থাকলে, তা থেকে এমন সমস্যা দেখা দেয় যার নাম চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ‘ফেটর হেপাটিকাস’।

নামটা শুনে জটিল কিছু মনে হলেও এই সমস্যা অনেকেরই আছে। মুখে গন্ধ হলে অনেকেই ভাবেন, দাঁত বা মাড়ির সমস্যা হচ্ছে। অথবা পেটের গোলমালের কারণে এমন হচ্ছে। লক্ষণ চেনা না থাকায় এড়িয়ে যান বেশির ভাগই। পরবর্তী সময়ে গিয়ে দেখা যায়, ফ্যাটি লিভার বা লিভার সিরোসিসের মতো অসুখ বাসা বেঁধেছে শরীরে। ফেটর হেপাটিকাস হল শ্বাসের সঙ্গে বেরোনো অতি তীব্র গন্ধ, যা দিনভরই থাকে। খাবার খাওয়ার পরে যে গন্ধ হয় মুখে, তার চেয়ে এই গন্ধ অনেকটাই আলাদা। গন্ধের ধরন পচা মাছ, পচে যাওয়া রসুন বা পচা ডিমের মতো। এই গন্ধ হয় সালফারের কারণে। লিভারের কাজ হল শরীর থেকে দূষিত পদার্থ ছেঁকে বার করে দেওয়া। কিন্তু যদি সালফার-সহ আরও কিছু বিষাক্ত পদার্থ রক্তে জমা হতে থাকে, তা হলে লিভার তা ছেঁকে বার করতে পারে না। এই পদার্থগুলি রক্তে বাহিত হয় এবং শ্বাসের মাধ্যমে বাইরে বেরিয়ে আসে।

চিকিৎসক রণবীর ভৌমিক জানাচ্ছেন, লিভারের ক্রনিক রোগ রয়েছে, এমন লোকজনের ফেটর হেপাটিকাস হতে দেখা যায়। আবার দীর্ঘ সময় ধরে লিভারে রোগ বাসা বাঁধছে বা তলে তলে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা হয়ে রয়েছে যাঁদের, তাঁদেরও ফেটর হেপাটিকাসের লক্ষণ দেখা দেয়। সেই সঙ্গে আরও কিছু উপসর্গ দেখা দিতে থাকে। যেমন, জন্ডিসের লক্ষণ দেখা দেয় অনেকের। পেট ফাঁপা, পেটে জল জমার মতো সমস্যা দেখা দেয়। পা ও গোড়ালি ফুলতে থাকে, ক্লান্তি বেড়ে যায়। শরীরের নানা জায়গায় কালশিটে পড়তে থাকে। কিছু ক্ষেত্রে হেপাটিক এনসেফেলোপ্যাথির উপসর্গও দেখা দেয়। সে ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি, মাথাঘোরা, রক্তচাপ আচমকা কমে যাওয়ার মতো সমস্যা তৈরি হয়। রোগীর কথাবার্তা অসংলগ্ন হয়ে যায়, ভুলে যাওয়ার সমস্যাও দেখা দেয়।

ফেটর হেপাটিকাস ধরা পড়া মানে লিভারের রোগ মাথাচাড়া দিয়েছে বা তা যে জটিল পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে, তা ধরেই নিতে হবে। কাজেই চিকিৎসার মধ্যেই থাকতে হবে। সচেতন থাকতে খাওয়াদাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ জরুরি, মদ্যপান ছাড়তে হবে, প্রক্রিয়াজাত যে কোনও রকম খাবার খাওয়া চলবে না এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এই রোগ খুব জটিল পর্যায়ে গেলে সিরোসিসের লক্ষণ দেখা দেয়। সে ক্ষেত্রে লিভার প্রতিস্থাপনের প্রয়োজনও পড়তে পারে।

liver diseases Fatty Liver
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy