স্ক্যাবিস খুবই ছোঁয়াচে। শিশু ও বয়স্কদের এই রোগ বেশি হতে দেখা যায়। বিশেষ করে, ২ থেকে ৫ বছরের শিশুরা বেশি ভোগে এই রোগে। গরমের সময়ে শিশুর ত্বকে ক্ষত, র্যাশ, অস্বাভাবিক রকম চুলকানি দেখলে এড়িয়ে যাবেন না বাবা-মায়েরা। শুধু যে গরম থেকে ‘হিট র্যাশ’ হতে পারে তা নয়, স্ক্যাবিসের মতো চর্মরোগের আশঙ্কাও থাকে। যদিও সঠিক সময়ে চিকিৎসাতেই স্ক্যাবিস সেরে যায়। তবুও সাবধান থাকা জরুরি।
স্ক্যাবিস কতটা সংক্রামক?
‘সারকপটিস স্ক্যাবি’ নামক পরজীবীর সংক্রমণে স্ক্যাবিস হয়। এই রোগের ব্যাপারে সচেতনতা তেমন ভাবে নেই। অনেকেই ভাবেন হাজা-চুলকানি হয়েছে। দোকান থেকে চেনা কিছু ক্রিম কিনে লাগিয়ে দেন। এ ভাবে রোগ তো সারেই না, বরং সারা শরীর র্যাশে ভরে যায়। শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পাল জানাচ্ছেন, পরজীবী সংক্রান্ত যে কোনও অসুখই ছোঁয়াচে হয়। এ ক্ষেত্রে শিশুর দু’আঙুলের ভাঁজে, গায়ের চামড়ায় ক্ষতের দাগ দেখা যায়। সেখানে ক্রমাগত চুলকানি হতে থাকে। রাতের দিকে অস্বস্তি আরও বাড়ে।
এই ধরনের পরজীবীরা মানুষের শরীরে বসতি গড়ে তোলে। ত্বকে ছিদ্র করে গহ্বর তৈরি করে। সেখানে তারা ডিম পাড়ে। এই ভাবে খুব কম দিনেই সংখ্যায় বেড়ে যায়। ত্বকের যেখানে গহ্বর তৈরি করে পরজীবীরা সেখানে প্রদাহ শুরু হয়। ওই জায়গাটি ফুলে যায় ও র্যাশ বা ক্ষত তৈরি হয়। তখন সেখানে জ্বালা, চুলকানি হয়। সঠিক সময়ে স্ক্যাবিস শনাক্ত করতে না পারলে, পরজীবীরা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তখন শরীরের সব জায়গায় ক্ষত, র্যাশ বেরিয়ে যায়। বড় বড় ফোস্কা পড়তেও দেখা যায়।
আরও পড়ুন:
স্ক্যাবিসের পরজীবীরা সংস্পর্শ থেকে বেশি ছড়ায়। যিনি আক্রান্ত তিনি যদি শিশুর কাছাকাছি আসেন, তা হলে রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। তা ছাড়া গামছা, পোশাক, বিছানার চাদর ইত্যাদি ভাগাভাগি করে ব্যবহার করলেও রোগ হতে পারে। তাই শিশুর ব্যবহার করা জিনিসপত্র সব সময়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত।
স্ক্যাবিস থেকে বাঁচার উপায় কী?
খুব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। শিশু স্কুল থেকে ফিরলে স্নান করানো, হাত-পা সাবান দিয়ে ধোয়াতে হবে। রোজ ধোয়া জামাকাপড় ব্যবহার করতে হবে। বিছানার চাদর, বালিশের ঢাকনা নিয়মিত পাল্টাতে হবে।
বাড়ির বড়রাও পরিচ্ছন্নতা বিধি মেনে চললে ভাল হয়। সদ্যোজাত শিশু থাকলে হাত জীবাণুমুক্ত না করে তাকে ধরা উচিত নয়।
স্ক্যাবিস ধরা পড়লে শিশুকে আলাদা রাখাই ভাল। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেতে হবে। চুলকানির জ্বালা কমাতে অ্যান্টিহিস্টামিনিক জাতীয় ওষুধ দেওয়া হয়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া শিশুকে ওষুধ দেওয়া ঠিক হবে না।