Advertisement
E-Paper

ওজন কমাতে ভাত খাওয়া ছেড়ে দিচ্ছেন? মেদ ঝরাতে গিয়ে হাড়ের ক্ষতি করছেন না তো

ভাতে স্টার্চের মাত্রা বেশি, পুষ্টিগুণও তেমন নেই বললেই চলে। খুব বেশি মাত্রায় সাদা ভাত খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়, ওজনও বাড়ে। তাই বলে কি ডায়েট থেকে একেবারেই ভাত বাদ দিয়ে দেওয়া ভাল? টানা এক মাস ভাত না খেলে শরীরের ক্ষতি হয়, না কি লাভ?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৫ ০৯:০৩
ভাত খাওয়া বন্ধ করলে কী প্রভাব পড়ে শরীরের উপর?

ভাত খাওয়া বন্ধ করলে কী প্রভাব পড়ে শরীরের উপর? ছবি: সংগৃহীত।

ভাত আর মাছ পেলে বাঙালির আর কিছুই চাই না! এমন অনেকেই আছেন যাঁরা দিনে তিন থেকে চার বেলা ভাত খান। অফিসে বেরোনোর আগে ভাত, অফিসের টিফিনেও ভাত আবার রাতের খাবারেও ভাত। তবে ইদানীং স্বাস্থ্য সচেতন অনেকেই ভাত খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন। অনেকেই আবার দ্রুত ওজন ঝরানোর আশায় ভাত খাওয়া একেবারেই বন্ধ করে দেন। ভাত শরীরে অপরিহার্য কার্বোহাইড্রেট সরবরাহ করে। ভাতে স্টার্চের মাত্রা বেশি, পুষ্টিগুণও তেমন নেই বললেই চলে। খুব বেশি মাত্রায় সাদা ভাত খেলে রক্তের শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়, ওজনও বাড়ে। তাই বলে কি ডায়েট থেকে একেবারেই ভাত বাদ দিয়ে দেওয়া ভাল? এক মাস টানা ভাত না খেলে শরীরের ক্ষতি হয়, না কি লাভ?

পুষ্টিবিদদের মতে, এক মাসের জন্য ভাত ছেড়ে দিলে শরীরে ক্যালোরির মাত্রা কমতে শুরু করে, এই কারণে ভাত খাওয়া ছাড়লে ওজন কমে যায়। তবে সেটা তখনই সম্ভব, যখন ভাত ছেড়ে দিয়ে আপনি কার্বহাইড্রেট অন্য কোনও উৎসের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বেন না। যাঁদের রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি তাঁরাও এক মাস ভাত খাওয়া ছেড়ে দিলে শরীরে ইনসুলিন হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকবে। তবে আবার যখন আপনি ভাত খাওয়া শুরু করবেন, তখন কিন্তু শর্করার মাত্রা বেড়ে যাবে।

তাই এক মাসের জন্য ভাত ছেড়ে দেওয়াকে খুব বেশি সমর্থন করছেন না পুষ্টিবিদেরা। তাঁদের মতে, শরীরের পরিস্থিতি বুঝে কখনও কখনও রোগীকে এক মাস ভাত খেতে বারণ করা হয় বটে, তবে সেটা সবার ক্ষেত্রে করলে খুব বেশি লাভ হয় না। কিন্তু ভাত খেয়ে ফেলছেন বলেই যে রোগা হওয়া যাবে না, এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। রোগা হতে চাইলে সারা দিনে শরীর যতটা ক্যালোরি ঝরাচ্ছে, তার চেয়ে কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেতে হয়। যাঁরা ‘লো কার্ব ডায়েট’ করেন, তাঁদেরও ভাত বেশ অপছন্দের। তবে ওজন কমাতে চাইলে যে ভাত রোজের খাদ্যতালিকা থেকে একেবারে বাদ দিতে হবে, এমন ধারণা মন থেকে সরিয়ে ফেলুন। ভাত খাওয়ারও অনেক উপকারিতা রয়েছে। ভাত এমন এক ধরনের কার্বোহাইড্রেট, যা সহজেই হজম হয়ে যায়। পেট অনেক ক্ষণ ভর্তি থাকে, তাই বার বার খিদের মুখে উল্টোপাল্টা খেয়ে ফেলার আশঙ্কা কমে। ভাতে কোনও রকম গ্লুটেন নেই। এবং বাংলার মতো ভ্যাপসা গরমের আবহাওয়ায় ভাত খেলে শরীর অনেকটা ঠান্ডাও থাকে।

মুম্বইয়ের অস্থিচিকিৎসক মনন বোহ্‌রাও ডায়েট থেকে পুরোপুরি ভাত বাতিল করে দেওয়ার পক্ষপাতী নন। মনন বলেন, ‘‘হাড় মজবুত করতে প্রতিনিয়ত পেশির মেরামতের প্রয়োজন। আর পেশির মেরামতির জন্য চাই গ্লাইকোজেন। গ্লাইকোজেন পাওয়া যায় ভাতের মতো কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার থেকে। ভাত খাওয়া বন্ধ করে দিলে পেশিগুলি দুর্বল হয়ে পড়ে, হাড়ের চারপাশের টিস্যুগুলির উপর মাইক্রো স্ট্রেস তৈরি হয়। সব মিলিয়ে হাড়ের ক্ষয় শুরু হয়।’’

এক মাসের জন্য ভাত ছেড়ে দেওয়াকে খুব বেশি সমর্থন করছেন না পুষ্টিবিদেরা।

এক মাসের জন্য ভাত ছেড়ে দেওয়াকে খুব বেশি সমর্থন করছেন না পুষ্টিবিদেরা।

ভাত খেয়েও ওজন বাড়বে না কী করে?

পুষ্টিবিদদের মতে ‘পোর্শন কন্ট্রোল’ করলে ভাত খেয়েও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। সহজ ভাষায় যাকে বলে, মেপে ভাত খাওয়া। ভাতের পরিমাণ কমিয়ে দিলেই অনেকটা সমস্যা কমে যাবে। অনেকেই সাদা ভাতের বদলে ডায়েট করার সময়ে ব্রাউন রাইস খাওয়া শুরু করেন। কিন্তু সে সব না করে একটা সহজ নিময় মানলেই চলবে। ধরুন, আপনি রোজ দু’মুঠো ভাত খেতেন। তার বদলে এখন থেকে রোজ এক মুঠো ভাত খান। তার সঙ্গে বাকি ডাল-তরকারির পরিমাণ একটু বাড়িয়ে দিন। তা হলেই অনেক উপকার পাবেন। ভাতের সঙ্গে যদি বেশি পরিমাণে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন, তা হলে ওজন কমাতে আরও সুবিধা হবে। স্যালাডে ভরপুর মাত্রায় ফাইবার থাকে। তাই ভাতের সঙ্গে এক বাটি স্যালাড খেতেই পারেন। ভাত সেদ্ধ করে ফ্যান ফেলে দেবেন। প্রেশার কুকারে রান্না করা ভাত খেলে তাতে স্টার্চের মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। এই ভাত নিয়মিত খেলে ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তাই খোলা পাত্রে ভাত রান্না করাই ভাল। ভাজা ভাত, ক্রিম বা চিজ় দিয়ে ভাত রান্না করা এড়িয়ে চলুন।

Weight Loss Tips Bone Health Low Carb Diet
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy