‘ব্রেন ফগ’ থেকে মুক্তি মিলবে কী করে?
অসংখ্য মানুষ কোভিডকে পরাজিত করে ফিরে এসেছেন স্বাভাবিক জীবনে। তবে কোভিড থেকে সেরে ওঠার পরেও থেকে যাচ্ছে নানা উপসর্গ। ক্লান্তি, বুকে ব্যথা, চুল ওঠার সমস্যার পাশাপাশি মস্তিষ্কে ধোঁয়াশা বা ‘ব্রেন ফগ’-ও কিন্তু অন্যতম। ‘ব্রেন ফগ’ কথাটি আদতে কোনও বৈজ্ঞানিক শব্দবন্ধ নয়। সাধারণত এই রোগে আক্রান্ত রোগীরা নিজেদের শারীরিক অবস্থা ব্যাখ্যা করার জন্য এই শব্দটি বলে থাকেন। আচমকা ভাবনা-চিন্তা করার গতি শ্লথ হয়ে যাওয়া, মনোযোগের অভাব, স্মৃতিলোপের মতো নানা ধরনের সমস্যাকে এই উপসর্গের অন্তর্গত ধরা হয়। এই প্রকার সমস্যায় অনেক ক্ষেত্রেই কথা বলার সময়েও কথা জড়িয়ে যায়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন, কোভিডের পরেও ছয় থেকে নয় মাস পর্যন্ত এই উপসর্গ থাকতে পারে কোনও কোনও রোগীর।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আতঙ্কিত না হয়ে এই ধরনের সমস্যায় যোগাযোগ করতে হবে চিকিৎসকের সঙ্গে। সাধারণত নিয়মিত শরীরচর্চা, যোগাভ্যাস, পর্যাপ্ত ঘুম এবং সঠিক পথ্য ধীরে ধীরে এই সমস্যাটি কমিয়ে আনতে পারে।
এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কী করণীয়?
খাদ্যাভাসে বদল: ভাজাভুজি বা অতিরিক্ত মিষ্টি খেলে শুধু শরীর নয়, মস্তিষ্কও কিছুটা ক্লান্ত হয়ে পড়ে। ফলে ঘুম পায়। এই সব খাবারের কারণে পেটে এমন কিছু ব্যাক্টেরিয়া জন্মায়, যা এই ক্লান্তির কারণ। কিন্তু তার মানেই এটা নয় যে, পছন্দের সব মিষ্টি বা ভাজাভুজি বাদ দিতে হবে। বরং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিদরা বলছেন, রাতে টানা ১০ ঘণ্টা পেটকে বিশ্রাম দিন। ওই সময়ে কিছু খাবেন না। আর ফল বা স্বাস্থ্যকর খাবারের পরিমাণ বাড়ান রোজের ডায়েটে।
মনের চাপ কমান: সারাদিনের কাজের চাপে মস্তিষ্ক পর্য়াপ্ত বিশ্রাম পায় না। কাজ সেরে উঠলেও সারাদিন মোবাইলে চোখ থাকে। এতে মস্তিষ্ক আরও ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রতিদিন কিছুটা সময় ধ্যান করা যেতে পারে।
সূর্যের আলো: মস্তিষ্কের বা মনের ক্লান্তি দূর করতে ঘুমের বিরাট ভূমিকা আছে। ঘুম ভাল হলে এই ক্লান্তি দ্রুত কাটে। আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিদ্যা বিভাগের জার্নাল বলছে, প্রতি দিন সূর্য ওঠা আর ডোবার সময়ে কিছু ক্ষণ যদি সেই আলোতে দাঁড়ানো যায়, তা হলে ঘুম ভাল হয়। রাতে চট করে ঘুম চলে আসে, আবার দিনের শুরুতে সেই ঘুম ভেঙেও যায়।
শরীরচর্চা: ক্লান্তি কাটাতে শরীরচর্চা কাজে লাগতে পারে। খেলাধুলো বা হালকা ব্যায়াম করলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। ফলে বাড়ে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা। এতে মাথার ক্লান্তিও অনেকটা কাটে।
মাথা খাটানোর খেলা: এমন কিছু খেলা রয়েছে, যা মাথার ব্যায়ামে কাজ করে। শব্দছক, তাসের কিছু খেলা বা দাবার মতো খেলা নিয়মিত খেললে ‘ব্রেন ফগ’-এর সমস্যা কিছুটা হলেও কাটিয়ে ওঠা যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy