অজানা জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। ছবি:সংগৃহীত।
বাইরে বেরোলে দরদর করে ঘাম হচ্ছে। আবার কখনও হঠাৎই ঝেঁপে বৃষ্টি নেমেছে। আবহাওয়ার এই টানাপড়েনে শিশুদের সর্দি-কাশি হওয়া খুবই সাধারণ বিষয়। ঘরে ঘরে অনেক শিশুই জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। শিশুদের সারা বছরই জ্বর, সর্দি-কাশি লেগে থাকে। দু’-এক দিনে তা সেরেও যায়। কিন্তু এই মরসুমে তেমনটা হচ্ছে না। জ্বরের উপসর্গও বেশ সক্রিয়। কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসছে। সেই সঙ্গে শরীরের তাপমাত্রা ওষুধ খাওয়ার পরেও কমছে না। তবে সবচেয়ে বেশি ভীতিজনক হল, রক্তে অনুচক্রিকার সংখ্যা কমে যাচ্ছে। সন্তানের শরীর খারাপ হলে এমনিতেই মা-বাবারা চিন্তায় পড়েন। তার উপর প্লেটলেট কমে যাওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন অনেকেই। তবে অনুচক্রিকার সংখ্যা কমে গেলেও ডেঙ্গির কিন্তু কোনও লক্ষণ নেই। শারীরিক পরীক্ষাতেও ডেঙ্গি ধরা পড়ছে না। ফলে অনেকেই বুঝতে পারছেন না আসলে জ্বরের কারণটি কী। এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক সুর্বণ গোস্বামী বলেন, ‘‘এ সময় শিশু, বড় সকলেরই ভাইরাল সংক্রমণের বাড়াবাড়ি হয়। তবে এ বছর এই সংক্রমণ একটু বেশি ছড়িয়েছে। এই ভাইরাস শ্বাসনালির সংক্রমণ ঘটাচ্ছে। সেখান থেকেই হাঁচি, কাশি নানা রকম সমস্যা দেখা দিচ্ছে। কারও আবার ডায়েরিয়া, বমিও হচ্ছে। আসলে এর কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। মারণক্ষমতাও নেই। পাঁচ-সাত দিন ভুগতে হয়। তবে শিশু কিংবা বয়স্কের যদি কো-মর্বিডিটি থেকে থাকে, সে ক্ষেত্রে খানিকটা চিন্তার।’’ ডেঙ্গি জ্বর নয়, অথচ প্লেটলেট কমে যাচ্ছে। কেন? চিকিৎসকের কথায়, ‘‘ডেঙ্গিও তো একটা ভাইরাস। তেমনি আরও অনেক ভাইরাল সংক্রমণের ক্ষেত্রেও প্লেটলেট কমে যেতে পারে। ভাইরাস যখন আবার মারা যায়, তখন প্লেটলেটের সংখ্যা বাড়তে থাকে।’’
সুস্থ থাকার উপায় কী? সুর্বণ বলেন, ‘‘কোভিডকালে যে সুরক্ষা-বিধি মেনে চলতে হত, এ ক্ষেত্রেও সেইগুলি মেনে চলা জরুরি। মাস্ক পরা, বেশি জমায়েতে না যাওয়া, স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, হাত ধুয়ে খাবার খাওয়ার মতো বিষয়গুলিতে নজর দিতে হবে। সেই সঙ্গে জ্বর যদি দু’দিনের বেশি থাকে, তা হলে অবশ্যই এক বার চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া জরুরি।’’
জ্বর না কমলে অনেক সময়ে বাবা-মায়েরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। শিশুর জ্বর এলে মাথা ঠান্ডা রেখে তাকে সারিয়ে তোলা জরুরি। কী ভাবে যত্ন নিলে দ্রুত সেরে উঠবে শিশু?
১) স্নান পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হবে না। চিকিৎসকেরা বলেন, শুধু জ্বর নয়, যে কোনও রোগের ক্ষেত্রেই পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জরুরি। তাই স্নান না করলেও গরম জলে গা স্পঞ্জ করিয়ে দেওয়া উচিত।
২) জ্বর হয়েছে বলে শিশুকে আপাদমস্তক গরম পোশাকে মুড়িয়ে রাখা কাজের কথা নয়। চিকিৎসকেরা বলেন, একাধিক গরম পোশাক পরালেই যে জ্বরের সময় শিশুরা খুব আরাম পাবে, তেমনটা কিন্তু নয়। দেহের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে তার উপর বেশি পোশাক চাপিয়ে রাখলে বরং শিশুর কষ্ট বাড়তে পারে।
৩) জ্বর এলে নিজে থেকে ওষুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে তবেই ওষুধ খাওয়ান। নিজে থেকে কোনও ওষুধ খাওয়ানোর দরকার নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy