Advertisement
E-Paper

রাতে ঘুমের সমস্যার কারণ ওয়াইফাই নয় তো? এক সপ্তাহ রাতে রাউটার বন্ধ রাখলে কী প্রভাব পড়বে?

বাড়িতে ওয়াইফাই রাউটার নিশ্চয়ই দিনভর চলে। রাতেও চালু থাকে। অতএব সারা রাতই রাউটার থেকে বেরোনো তড়িচ্চুম্বকীয় তরঙ্গ আপনার শরীরে ঢুকতে থাকে। এতে ক্ষতি হয় কতটা?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২৫ ১২:২৭
What really happens to body if you turn off Wi-Fi router for 7 days at night

ওয়াইফাই কি সত্যিই শরীরের জন্য ক্ষতিকর? কী বলছেন গবেষক-চিকিৎসকেরা? ফাইল চিত্র।

রাতে ঘুম আসতে চায় না? তাই রাত জেগে মোবাইলে চ্যাট বা ওয়েব সিরিজ় দেখে কাটিয়ে দেন? তাতে কি সমস্যা কমে? বরং সকাল থেকেই মাথা যন্ত্রণা, ক্লান্তি ভাবে কাজে উৎসাহই হারিয়ে যায়। এই যে ঘুম কম হওয়ার সমস্যা, যখন-তখন মাথাব্যথা, অতিরিক্ত ঝিমুনি ভাব— এ সব কিছুর কারণ আপনার ওয়াইফাই নয় তো! বাড়িতে ওয়াইফাই রাউটার নিশ্চয়ই দিনভর চলে। রাতেও চালু থাকে। অতএব সারা রাতই রাউটার থেকে বেরোনো তড়িচ্চুম্বকীয় তরঙ্গ আপনার শরীরে ঢুকতে থাকে। এতে ক্ষতি হয় কতটা?

ওয়াইফাই রাউটার থেকে নানা জটিল রোগ হতে পারে, এমনকি ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ে, এমন নানা মতামত বিভিন্ন সময়ে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কয়েক মাস আগেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছিল, মাথার কাছে রাতভর ওয়াইফাই রাউটার চললে, যে তড়িচ্চুম্বকীয় তরঙ্গ শরীরে ঢোকে তার থেকে ক্যানসার বা ব্রেন টিউমারের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। তবে এ দেশের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ’ (এনআইএইচ)-এর তথ্য বলছে, ওয়াইফাই রাউটার থেকে যে তরঙ্গ বার হয় তার কম্পাঙ্ক খুবই কম। শরীরের জন্য তেমন ক্ষতিকর নয়। তবে যদি একদম মাথার কাছেই রাউটার থাকে, তা হলে ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ওয়াইফাই রাউটারের ভালমন্দ

ওয়াইফাই চালু রেখে মাথার কাছে ফোন নিয়ে ঘুমোলে, অনিদ্রা, মাথা যন্ত্রণা বা মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা দিতেই পারে, এমনটাই জানালেন স্নায়ুরোগ চিকিৎসক অনিমেষ কর। তাঁর মতে, ওয়াইফাইয়ের তরঙ্গ হল ‘নন-আয়নাইজ়িং’। সাধারণত রাউটার থেকে যে তরঙ্গ বার হয় তার কম্পাঙ্ক ২.৪ থেকে ৫ গিগাহার্ৎজ। এই মাত্রার কম্পাঙ্ক থেকে শরীরের বড়সড় ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। ব্রিটেনের ক্যানসার রিসার্চ সেন্টারও একই কথা জানিয়েছে। ওয়াইফাই থেকে ক্যানসার হওয়ার কোনও রকম ঝুঁকিই নেই।

বৈদ্যুতিন যন্ত্র মানে তার ভাল এবং খারাপ দুই দিকই থাকবে। রাউটারের তড়িচ্চুম্বকীয় বিকিরণ ক্যানসারের কারণ না হলেও, ‘স্লিপিং ডিজ়অর্ডার’-এর কারণ হতেই পারে। নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট পরিষেবা পেলে রাতভর মোবাইলে চোখ রাখা, মাথার কাছে ফোন নিয়ে ঘুমোনোর কারণে ঘুমের সমস্যা দেখা দেবে। যার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে চোখের। ফোন বা ল্যাপটপের নীল রশ্মি রেটিনার ক্ষতি করবে। চোখে জ্বালা, চোখ থেকে জল পড়া এবং চোখ শুষ্ক হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা বেড়ে যাবে।

উচ্চ গতিসম্পন্ন ইন্টারনেট পরিষেবা আঠার মতো মানুষকে আটকে রাখে। একের পর এক সিনেমা, সিরিজ় শেষ করতে গিয়ে ঘুম নষ্ট হয়। দীর্ঘ দিন ধরে এই অভ্যাস চলতে থাকলে ‘স্লিপ ডিজ়অর্ডার’ এবং ইনসমনিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘নারকোলেপ্সি’। এই সমস্যায় রাতে ঘুম আসতে চায় না, আর দিনের বেলায় প্রচণ্ড ক্লান্তি ও ঝিমুনি আসে।

আরও একটি সমস্যা হতে পারে, তা হল স্মৃতিশক্তি কমে আসা। নানা গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা দিবারাত্র মোবাইল, ল্যাপটপে বুঁদ হয়ে থাকেন, তাঁদের স্মৃতিশক্তি ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়বে। পরবর্তী সময়ে অ্যালঝাইমার্সের ঝুঁকিও বাড়তে পারে।

কাজেই শরীর ও মন যদি ঠিক রাখতে হয়, তা হলে রাতে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রাখাই ভাল। ফোনটি মাথার কাছে নিয়ে শোবেন না। অনেকটা দূরে রেখে দিন। রাউটারও যেন মাথার কাছাকাছি না থাকে। রাতভর মোবাইলে চোখ রাখা বন্ধ করলে বিপদ অনেক কমবে।

wifi Internet Connection Health issues
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy