Advertisement
E-Paper

অল্প বয়সেই স্মৃতি হারিয়েছে ‘সইয়ারা’ ছবির বাণী, কেন অ্যালঝাইমার্স বাড়ছে কমবয়সিদের?

‘সইয়ারা’ কেবল প্রেমের গল্প নয়, কম বয়সে অ্যালঝাইমার্স রোগটি নিয়ে কেন উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত, সে কথাও তুলে ধরা হয়েছে ছবিতে। জীবনে চলার পথে স্মৃতিশক্তি সঙ্গ না দিলে, খানিকটা পিছিয়ে পড়তে হয়। রোজকার কিছু অভ্যাস আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে ব্যাহত করছে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৫ ১৬:৩৯
কেন অল্পবয়সিদের মধ্যে ভুলে যাওয়ার সমস্যা বাড়ছে?

কেন অল্পবয়সিদের মধ্যে ভুলে যাওয়ার সমস্যা বাড়ছে? ছবি: (‘সইয়ারা’ ছবির দৃশ্য)

বিবাহবার্ষিকীর তারিখ হোক বা অফিসের জরুরি মিটিং, বাজারের টুকিটাকি সামগ্রী হোক কিংবা গেটের চাবি কোথায় রেখেছেন— হঠাৎ করে সবটাই যেন কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে। একটা সময়ে ধারণা ছিল, বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই কমে স্মৃতির দৌড়, কিন্তু আধুনিক জীবনযাপনের চাপ সেই তথ্যকে কেবল বইয়ের পাতায় আটকে রেখেছে। কেবল বয়সকালেই নয়, ভুলে যাওয়ার সমস্যায় ভুগছেন এখন অল্পবয়সিরাও। সম্প্রতি অল্পবয়সিদের ‘অ্যালঝাইমার্স’-এর সমস্যাকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে ‘সইয়ারা’ ছবিটি। ছবির নায়িকা ২২ বছর বয়সি বাণীর (অনিত পড্ডা অভিনীত) এই ভুলে যাওয়ার রোগের কারণেই ছবিতে এসেছে ত্রিকোণ প্রেমের ‘টুইস্ট’। ‘সইয়ারা’ কেবল প্রেমের গল্প নয়, কম বয়সে অ্যালঝাইমার্স রোগটি নিয়ে কেন উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত, সে কথাও তুলে ধরা হয়েছে ছবিতে।

স্মৃতিশক্তির সমস্যা সাধারণত অ্যালঝাইমার্স রোগের প্রাথমিক উপসর্গ। শুরুর দিকে অ্যালঝাইমার্স রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সদ্য ঘটা কথোপকথন কিংবা ঘটনাগুলি ভুলে যেতে পারেন। জিনিসপত্র ভুল জায়গায় রাখা, স্থান এবং বস্তুর নাম ভুলে যাওয়া, সঠিক শব্দটি ভাবতে সমস্যা হওয়া এবং বার বার একই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে থাকা— কোনও ব্যক্তির এই উপসর্গগুলি দেখা দিলে সতর্ক হতে হবে।

তা ছাড়া দষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসা, কথার মধ্যে সাযুজ্য না থাকা এই রোগের প্রাথমিক পর্যায়ের সঙ্কেত হতে পারে। সময় ও তারিখ মনে রাখতে না পারাও এই রোগের লক্ষণ। র‌ঙের পার্থক্য বুঝতে না পারা, দুরত্ব বুঝতে অসুবিধা, গাড়ি চালাতে সমস্যা— এই সবই কিন্তু অ্যালঝাইমার্স রোগের লক্ষণ।

জীবনে চলার পথে স্মৃতিশক্তি সঙ্গ না দিলে, খানিকটা পিছিয়ে পড়তে হয়। রোজকার কিছু অভ্যাস আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে ব্যাহত করছে। দিনের পর দিন এই অভ্যাসগুলির কারণেই মস্তিষ্কের ক্ষতি করে চলেছি আমরা। জেনে নিন, কোন কোন অভ্যাসে রাশ টানলে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়বে।

উচ্চস্বরে গান শোনা: কানে হেডফোন গুঁজে ঘণ্টার পর ঘণ্টা উচ্চস্বরে গান শোনা মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি করে। টানা ৩০ মিনিট অতি উচ্চমাত্রার শব্দে থাকলে শ্রোতার শ্রবণশক্তি সম্পূর্ণ রূপে লোপ পেতে পারে। শ্রবণশক্তি লোপ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতিশক্তিও লোপ পেতে পারে। সেই সঙ্গে ব্রেনের টিস্যু নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

স্মৃতিশক্তির সমস্যা সাধারণত অ্যালঝাইমার্স রোগের প্রাথমিক উপসর্গ।

স্মৃতিশক্তির সমস্যা সাধারণত অ্যালঝাইমার্স রোগের প্রাথমিক উপসর্গ।

স্ক্রিন টাইমের আধিক্য: অতিরিক্ত ‘স্ক্রিন টাইম’ও মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি করে। অফিসে গিয়ে সারা ক্ষণ ল্যাপটপের সামনে মুখ গুঁজে বসে থাকা, অবসর সময়ে সমাজমাধ্যমে নজর, বাড়ি ফিরেও মোবাইলে ওয়েব সিরিজ় দেখা— সব মিলিয়ে দিনের বেশির ভাগ সময়টাই কেটে যায় আলোকিত পর্দার সামনে। এতে চোখের ক্ষতি তো হচ্ছেই, সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাও কমে যাচ্ছে। স্ক্রিন টাইম যত বেশি হবে, ততই অন্যদের সঙ্গে কথা কম বলা হবে। অন্য কাজেও মনোযোগ কম দেওয়া হবে। ফলে মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে অচল হয়ে পড়বে।

অতিরিক্ত অন্ধকারে থাকা: অতিরিক্ত অন্ধকারে থাকার অভ্যাস মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি করে। এই অভ্যাস আমাদের মনে বিষণ্ণতা তৈরি করে। এই বিষণ্ণতা মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে মন্থর করে দেয়। প্রাকৃতিক আলোতে থাকলে মস্তিষ্ক ভাল ভাবে কাজ করে। ঘুম থেকে উঠেও সূর্যের আলোয় খানিক ক্ষণ সময় কাটাতে পারলে ভাল, এতে মনমেজাজ ভাল থাকে, মস্তিষ্কের কার্যকারিতাও বাড়ে।

একা থাকার অভ্যাস: এখন ফেসবুকে বন্ধুসংখ্যা হাজার হাজার হলেও নিজেদের জীবনের সব সমস্যা ভাগ করে নেওয়ার জন্য বন্ধুর বড় অভাব। অনেকেই আছেন, যাঁরা কোনও অনুষ্ঠানবাড়িতে যেতে চান না। পারিবারিক অনুষ্ঠান হোক কিংবা অফিসের পার্টি— সব কিছুই এড়িয়ে চলতে ভালবাসেন তাঁরা। এর প্রভাব পড়ে মস্তিষ্কের উপর। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা কাছের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন, তাঁরা অন্যদের তুলনায় হাসিখুশি ও কর্মদক্ষ হন। তাঁদের স্মৃতিশক্তিও অন্যদের তুলনায় বেশি হয়।

অতিরিক্ত চিনি খাওয়া: অতিরিক্ত চিনি খাওয়াও মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর। আবার বার্গার, ভাজাভুজি, আলুর চিপ্‌স বা নরম পানীয়ের মতো খাবার স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার জন্য দায়ী হতে পারে। অন্য দিকে, সবুজ শাকসব্জি, ফল ও বাদাম জাতীয় খাবার মস্তিষ্কের ক্ষতি রোধ করে।

Memory Loss
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy