গ্রীষ্ম যতই ক্লান্তিকর বা বিরক্তিকর হোক না কেন, একটা বিষয়ে সকলে সহমত, রসালো-সুস্বাদু ফল খাওয়ার এই আদর্শ সময়। সেই তালিকায় প্রথমেই নাম আসে আমের। কিন্তু সমস্যা হল আম বেশি ক্ষণ কেটে রাখলেই ভিতরে গাঢ় বাদামি বা কালচে দাগ হয়ে যায়। কখনও আবার আম কাটলেই এমন দাগ দেখা যায়। এমন দাগ থাকলে কি আম খাওয়া যায়? কেনই বা হয় এমনটা?
আম কেটে রাখার পর বাদামি বা কালচে হয়ে যাচ্ছে?
এমনটা কিন্তু আপেল, কলা কেটে রাখলেও হয়। আমের মধ্যে থাকে পলিফেনল-সহ একাধিক উৎসেচক। যা অক্সিজেনের সংস্পর্শে বেশি ক্ষণ থাকলে কালো হয়ে যায়। এর কারণ হল, বাতাসের অক্সিজেনের সংস্পর্শে এলে শুরু হয় অক্সিডেশন বা জারণ প্রক্রিয়া। তার ফলেই আমের শাঁসের উজ্জ্বল কমলা বা হলুদ রং বদলে যায়।
আরও পড়ুন:
আর কোন কারণে হয়?
আম কাটলেন, ভিতরটা দেখলেন নরম হয়ে গলে গিয়েছে বা বাদামি বর্ণ ধারণ করেছে। গন্ধ শুঁকে দেখতে পারেন, যদি বিশ্রী গন্ধ টের পাওয়া যায়, তা হলে বুঝতে হবে আমটি পচে গিয়েছে। সেটি কিন্তু খাওয়া যাবে না।
কী করে আমের শাঁসের রংবদল রোখা যাবে?
১। আম কাটুন ধারালো স্টেনলেস স্টিলের ছুরি দিয়ে। কার্বন স্টিলেরও ছুরি হয়, যেটি কার্বন, আয়রন মিশিয়ে তৈরি করা হয়। এই ধরনের ছুরি দিয়ে আম কাটলে ধাতব বিক্রিয়ায় আমের শাঁসের রং বাদামি হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া, জং ধরা ছুরি ব্যবহার করলেও এমন হতে পারে।
২। যতটা খাবেন, ততটাই কাটুন। এক বা দু’টুকরো আম খেয়ে বাকিটা কেটে রাখলে এমনটা হবেই। তাই যেটুকু দরকার সেটুকু কেটে, বাকি আম বায়ুনিরোধী কৌটোয় ভরে ফ্রিজে রেখে দিন।
৩। আম কেনার সময় দেখে নিন। বেশি নরম বা মজে যাওয়া আম কিনলেও এমনটা হতে পারে। যদি বড় আমের ভিতরের কোনও অংশ কালচে বা বাদামী হয়, সেটি বাদ দিয়ে বাকিটা ভাল থাকলে খাওয়া যেতে পারে।
৪। কাটা আম বাইরে না রেখে বায়ুনিরোধী কৌটোয় ভরে ফ্রিজে রাখুন। এতেও কালচে দাগ হওয়া এড়ানো যাবে।
কী ভাবে গোটা ফল রাখলে ভাল থাকবে?
· একটি প্যাকেটে আম ভরে ভিতরে চারকোলের টুকরো ভরে দিন। অতরিক্ত আার্দ্রতা শুষে নিতে সেটি সাহায্য করবে।
· আমের বোঁটা পেপার টাওয়েল বা কাগজ দিয়ে মুড়ে রাখলেও আম চট করে নষ্ট হয় না।
· স্মুদি খাওয়ার জন্য আম ছোট টুকরো করে কেটে বায়ুনিরোধী কৌটোয় ভরে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। স্মুদি বা আইসক্রিমে ব্যবহারের জন্য হিমায়িত আম ভাল।