ঘি দিয়ে ঘন করে অড়হড় ডাল রান্না করলে তার স্বাদ হয় দারুণ। আবার যে কোনও নিমন্ত্রণ বাড়িতে ঘন করে মুগ ডাল হবেই। বেশির ভাগ বাঙালি বাড়িতে মুসুর, মুগ বা অড়হড় ডাল ঘুরিয়ে ফিরিয়ে রান্না হয়। ডাল এমনই এক খাবার যা ভাত, রুটি সব কিছুর সঙ্গেই সমান সুস্বাদু লাগে খেতে। নিরামিষ যাঁরা খান, তাঁদের ডায়েটে প্রোটিনের মূল উৎসই হল ডাল। সব রকম ডালেরই রয়েছে নিজস্ব পুষ্টিগুণ। তবে পেটের জন্য কোন ডাল ভাল, তা জেনে রাখা জরুরি।
মুগ ডাল কারা খাবেন?
সহজপাচ্য হওয়ায় পেটের সমস্যা, গ্যাস বা অম্বলের রোগীদের জন্য মুগ ডাল খুবই উপকারী। এতে থাকা ফাইবার হজমের জন্য ভাল। মুগ ডাল রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। যাঁরা পেটের সমস্যায় ভুগছেন, গ্যাস-অম্বলের ধাত রয়েছে বা লিভারের রোগ রয়েছে, তাঁদের জন্য পাতলা করে তৈরি মুগ ডাল খুব ভাল। বিশেষ করে ‘ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম’ থাকলে খাওয়াদাওয়া বুঝেশুনে করতে হয়। সে ক্ষেত্রে মুগ ডালের স্যুপ খেলে হজম ভাল হবে।
আরও পড়ুন:
মুগ ডালে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে, যা রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে। ডায়াবিটিসের রোগীরা নিশ্চিন্তে এই ডাল খেতে পারেন। ইউরিক অ্যাসিডের জন্য মুসুর ডাল খাওয়া বারণ হলে বিকল্প হিসেবে মুগ ডাল খেতে পারেন।
অড়হড় ডাল কাদের জন্য ভাল?
অড়হড় ডালে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন তো আছেই, সঙ্গে রয়েছে আয়রন, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং পটাশিয়াম। নিরামিষ খান যাঁরা, তাঁরা প্রোটিনের জন্য অড়হড় ডাল খেতেই পারেন। এই ডালে প্রচুর পরিমাণে ফোলিক অ্যাসিড আছে, যা অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য ভাল। অড়হড় ডালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে। যাঁরা ওজন কমাতে চাইছেন তাঁরা এই ডাল খেতে পারেন। ১০০ গ্রাম সেদ্ধ অড়হর ডালে প্রোটিনের পরিমাণ ২২ গ্রাম।এই ডাল হার্টের জন্যও ভাল। তবে অড়হড় ডাল মুগ ডালের মতো অত সহজপাচ্য নয়। যাঁদের হজমের সমস্যা বেশি বা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা আছে, তাঁদের বুঝেশুনেই অড়হড় ডাল খেতে হবে। এতে বেশি পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা হজম হতে দেরি হয়।
আরও পড়ুন:
কিডনির সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন বা ক্রনিক কিডনির রোগ আছে, তাঁরা অড়হড় ডাল এড়িয়েই চলবেন। এই ডালে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে যা কিডনির রোগীদের জন্য মোটেই ভাল নয়। অড়হড় ডালে প্রচুর পরিমাণে পিউরিন আছে, যা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। বাতের ব্যথায় যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের জন্যও এই ডাল খুব একটা ভাল নয়।