Advertisement
E-Paper

ছোলা থেকে তৈরি হয় ছাতু, বেসনও বানানো হয় ছোলা পিষেই, দু’টিই কি সমান উপকারী?

ভরা বর্ষার মরসুমে খিচুড়ি বা ডাল-ভাতের সঙ্গে একটু মুচমুচে ভাজা খাওয়ার ইচ্ছে যখন তখন জাগতে পারে। তার জন্য বাঙালি রান্নাঘরে সব সময় মজুত থাকে বেসন। যা কি না ছাতুর মতোই ছোলা থেকে তৈরি। পুষ্টিগুণও আছে। কিন্তু উপকারী কি?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৫ ১৪:১৯

ছবি: সংগৃহীত।

বাঙালির রান্নাঘরে ছাতু না পাওয়া যেতেই পারে। কিন্তু বেসন পাওয়া যাবে না, এমন হতে পারে না! বিশেষ করে এই ভরা বর্ষার মরসুমে খিচুড়ি বা ডাল-ভাতের সঙ্গে একটু মুচমুচে ভাজা বেগুনি, আলুর বড়া কিংবা সন্ধ্যায় চায়ের সঙ্গে পেঁয়াজি খাওয়ার ইচ্ছে যখন তখন জাগতে পারে। তার জন্য রান্নাঘরে প্রস্তুতি রাখতেই হয়। এখন প্রশ্ন হল এই বেসন, যা কি না ছোলাকে মিহি ভাবে পিষে বানানো হয়, তা শরীরের জন্য কতটা উপকারী?

পুষ্টিগুণে ছাতুকে সমান টক্কর দিতে পারে বেসন!

বেসনের মতোই ছোলা পিষে তৈরি করা হয় ছাতু। যে ছাতুকে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে মনে করেন স্বাস্থ্য সচেতনেরা। যাতে প্রোটিন এবং ফাইবার বেশি আছে বলে মনে করেন পুষ্টিবিদেরাও। যার জন্য ওজন কমানোর ডায়েটেও রাখা হয় ছাতু। ছোলা থেকে তৈরি ছাতুতে যদি প্রোটিন এবং ফাইবার থাকে তা হলেও বেসনেও কি তা থাকার কথা নয়? পুষ্টিবিদ অনন্যা ভৌমিক জানাচ্ছেন, থাকে। শুধু তা-ই নয়, ছাতুর মতোই বেসনেও রয়েছে সমপরিমাণে প্রোটিন, প্রায় সমপরিমাণ আয়রন, কাছাকাছি মাত্রার ফ্যাট এমনকি, দু’টি খাবারেই ক্যালোরির মাত্রাও প্রায় সমান। বরং বেসনে ক্যালোরি সামান্য হলেও কম থাকে ছাতুর থেকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বেসনের বদলে ছাতু খেতেই উৎসাহ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদ!

ছাতু কোথায় আলাদা?

বেসনের সঙ্গে ছাতুর তফাত ঘটে যায় একেবারে মূলে। কারণ ছাতু বানানোর জন্য ছোলাকে শুকনো খোলায় ভেজে, তাকে খোসা সমেত গুঁড়নো হয়। অন্য দিকে, বেসন বানানোর জন্য ছোলাকে চড়া আঁচে ভাজার প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় না। খোলা ছাড়ানো শুকনো ছোলার ডালকে মিহি করে পিষে নেওয়া হয়। এতে দু’টি বড় তফাত হয়ে যায়। এক, ছাতুতে যেহেতু খোলা থাকে এবং খুব মিহি ভাবে পেষাই করা হয় না, তাই এতে ফাইবারের মাত্রা থাকে বেশি। দুই, বেসন যেহেতু গুঁড়োনোর আগে ভেজে নেওয়া হয় না, তাই এটি হজমের সমস্যা তৈরি করে।

অনন্যা বলছেন, ‘‘ছাতু হজম করা সহজ। ছাতু জলে গুলে বা মেখে সরাসরি খাওয়া যেতে পারে। কিন্তু বেসন রান্না না করে খাওয়া উচিত নয়। এমনকি, রান্না করে খেলেও অনেক সময় বেসন থেকে পেট ফাঁপা বা ব্লোটিংয়ের সমস্যা হতে পারে। আমি তাই ব্যক্তিগত ভাবে ছাতু খাওয়ারই পরামর্শ দিই। তার আরও একটা বড় কারণ হল, ছাতুতে ফাইবারের মাত্রা বেশি থাকায় এটি ডায়াবিটিসের রোগীদের জন্যও নিরাপদ।’’

বেসন কি ডায়াবিটিসের রোগীদের জন্য খারাপ?

ছাতুতে প্রতি ১০০ গ্রামে ফাইবারের মাত্রা থাকে ১০-১২ গ্রাম। অর্থাৎ তা রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যেতে দেবে না। এ কারণেই ছাতুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। অন্য দিকে, বেসনে ফাইবার থাকে ছাতুর প্রায় অর্ধেক— ৫-৬ গ্রাম। ফলে তার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি। বেসন খেলে রক্তে শর্করা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। তা ছাড়া বেসনে যে ফ্যাট থাকে, তা-ও ছাতুর থেকে কম স্বাস্থ্যকর বলেও জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদ। তবে একই সঙ্গে তিনি জানাচ্ছেন সুস্থ মানুষ বেসন দিয়ে চিলা বা তরকারি রান্না করার সময় বেসন ছড়িয়ে নিতে পারেন। তাতে খাবারে প্রোটিনের মাত্রা বাড়বে।

কারা বেসন বা ছাতু, কোনওটিই খাবেন না?

অনন্যা জানাচ্ছেন, কারও যদি ইরিটেব্‌ল বাওয়েল সিন্ড্রোম বা আইবিএস-এর সমস্যা থাকে অথবা হজমের সমস্যা থাকে, তবে ছাতু বা বেসন কোনওটিই খাওয়া উচিত নয়। তা ছাড়া ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা থাকলে, কিডনির অসুখ থাকলেও এই দু’টি খাবার এড়িয়ে চলাই ভাল। এক বছরের থেকে ছোট শিশুদেরও ছাতু না দেওয়াই ভাল বলে জানাচ্ছেন অনন্যা।

Besan Health Benefits Sattu Besan Sattu Benefits
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy