Advertisement
E-Paper

ওজন বেশি হলেই কি জরায়ুতে সিস্ট হতে পারে? কাদের ঝুঁকি বেশি, কোন বয়স থেকে মেয়েদের সাবধান হতে হবে?

স্থূলত্ব যেমন একটি কারণ, তেমন আরও অনেকগুলি কারণ রয়েছে। ওজন বেশি মানেই সিস্টের ঝুঁকি বেশি, এমন নয়। তাই জরায়ুতে সিস্ট কাদের হতে পারে, সে নিয়ে স্বচ্ছ ধারণা থাকা জরুরি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৫ ১২:১৪
Who are at higher risk for uterine cysts

ওভারিয়ান সিস্টের ঝুঁকি কাদের বেশি? ফাইল চিত্র।

ওজন অত্যধিক বেশি বা স্থূলত্ব রয়েছে, এমন মহিলাদেরই জরায়ুতে সিস্ট হওয়ার ঝুঁকি বেশি, এই ধরনের কথা প্রায়ই শুনবেন। অনেকে আবার ভেবে ফেলেন, জরায়ুতে সিস্ট যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ‘ওভারিয়ান সিস্ট’, এর কারণে ক্যানসারও হতে পারে। আসলে জরায়ুতে কেন সিস্ট হয়, তার কারণ অনেক। স্থূলত্ব যেমন একটি কারণ, তেমন আরও অনেকগুলি কারণ রয়েছে। ওজন বেশি মানেই সিস্টের ঝুঁকি বেশি, এমন নয়। তাই জরায়ুতে সিস্ট কাদের হতে পারে, তা নিয়ে স্বচ্ছ ধারণা থাকা জরুরি।

ওভারিয়ান সিস্টের ঝুঁকি কাদের বেশি?

‘ওভারিয়ান সিস্ট’ ডিম্বাশয়ের ভিতরে হয়। থলির মতো মাংসল পিণ্ড তৈরি হয় যার ভিতরে রক্ত বা যে কোনও ধরনের ফ্লুইড থাকতে পারে। চিকিৎসক মল্লিনাথ মুখোপাধ্যায়ের মতে, সিস্ট মানে টিউমারের মতো গ্রোথ, তবে তা ক্যানসার নয়। টিউমার ম্যালিগন্যান্ট (ক্যানসার) ও বিনাইন (ক্যানসারহীন) দু’রকমেরই হয়। যদি তা ক্যানসারের দিকে বাঁক নেয়, তা হলে সিস্টের ভিতরের দেওয়াল পুরু হয়ে উঠবে ও সেখানকার কোষের অনিয়মিত বিভাজন শুরু হবে। সিস্টের থলি ফেটে গিয়ে পুঁজ বা রক্ত বেরোতে থাকবে।

বয়ঃসন্ধিকালে ঋতুস্রাব শুরুর সময় থেকেই মেয়েদের জরায়ুতে সিস্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে সিস্ট যদি হয়, তা তাড়াতাড়ি সেরেও যায়। সমস্যা তৈরি হয় রজোনিবৃত্তির পরে গিয়ে। সে সময়ে মহিলাদের শরীরে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোনের পরিমাণ কমে যায়। তাই হরমোনের গোলমালের কারণে সিস্ট হলে তখন পরিস্থিতি সঙ্কটনজনক হয়ে ওঠে। রজোনিবৃত্তির পরেও রক্তপাত শুরু হতে পারে।

পিসিওএস (পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম) যাঁদের আছে, তাঁদের ‘ওভারিয়ান সিস্ট’ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। পিসিওএস-এ ওজন অতিরিক্ত বেশি হয়ে গেলে, তখন ঝুঁকি বাড়ে।

এন্ডোমেট্রিওসিস থাকলেও সিস্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। জরায়ুর ভিতরে এন্ডোমেট্রিয়াম নামে একটি স্তর থাকে। প্রত্যেক মাসে ঋতুস্রাবের পর এই স্তরটি সন্তান ধারণের জন্যে তৈরি হয়। সেই সময়কালে অন্তঃসত্ত্বা না হলে এন্ডোমেট্রিয়াম লাইনিং ধীরে ধীরে খসে যায়। ২৮ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে এন্ডোমেট্রিয়াম জরায়ু থেকে খসে গেলেই শুরু হয় ঋতুস্রাব। জরায়ু থেকে ছিঁড়ে আসে বলে ঋতুস্রাবের দু-তিন দিন আগে থেকে তলপেটে অল্পস্বল্প ব্যাথা হয়। কিন্তু যদি দেখা যায় জরায়ুর ভিতরে ছাড়াও এর বাইরের দিকে, ফ্যালোপিয়ান টিউবে এমনকি, কখনও কখনও মলাশয়েও এন্ডোমেট্রিয়াম স্তর তৈরি হয়। তখন সেখান থেকেও রক্তপাত হতে থাকে ও সিস্ট হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

হরমোন থেরাপি যাঁরা করিয়েছেন বা করাচ্ছেন, তাঁদেরও জরায়ুতে সিস্ট হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

ডায়াবিটিস ও উচ্চ রক্তচাপ আছে এবং মাসিক ঋতুচক্র অনিয়মিত হয়, এমন মহিলাদেরও সিস্ট হওয়ার আশঙ্কা বেশি।

স্তন ক্যানসারের ওষুধ খান বা আগে রেডিয়োথেরাপি বা কেমোথেরাপি হয়েছে, এমন মহিলারাও রয়েছেন ঝুঁকিতে।

ডিম্বাশয়ের সিস্ট থাকলে ডিম্বাণু বেরোনোর ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। ফলে গর্ভধারণে অসুবিধে হয়। তবে তারও চিকিৎসা রয়েছে। ক্যানসার হলে বা বড় সিস্ট আশপাশের অঙ্গের ক্ষতি করে বলে, তা বাদ দিতে হয়। সিস্ট ভয়ের কি না, তা জানতে কিছু টিউমার মার্কার টেস্ট করা হয়। ডিম্বাশয়ের সিস্ট বিনাইন না ম্যালিগন্যান্ট জানতে সিএ১২৫ রক্ত পরীক্ষা করা হয়। আলট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে সিস্টের জল বার করে নেওয়া হয়। ক্যানসার হলে সার্জারি করে সিস্ট বাদ দিতে হয়। তবে সিস্ট হলেই অস্ত্রোপচার নয়। শরীরের অনেক জায়গাতেই ছোট সিস্ট থাকে। সেগুলি বাদ দিতে গেলে আদতে বেশি ক্ষতি হয়। সে ক্ষেত্রে ওষুধ দিয়েই চিকিৎসা করা হয়।

Ovarian Cysts PCOS Endometriosis
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy