শীত পড়তে শুরু করলেই ঘন ঘন সর্দি-কাশি ভোগাবে। যথেষ্ট সতর্ক ভাবে চলছেন, ঠান্ডাও লাগাচ্ছেন না, তবুও রাতে ঘুমোতে গেলেই নাক বন্ধ হয়ে আসবে, শ্বাস নিতে কষ্ট হবে। সকালে উঠে দেখবেন মাথাব্যথা শুরু হয়েছে, ঘন ঘন হাঁচি হচ্ছে। ঋতু বদলের সময়ে সর্দি-কাশি হয়েই থাকে। তবে তা যদি ক্রনিক হয়ে যায়, তখন বিষয়টি চিন্তার। সাধারণ সর্দি-কাশির চেয়ে অনেকটাই মারাত্মক হয়ে ওঠে সাইনাসাইটিস। শীতের সময়ে এর লক্ষণগুলি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
ঠান্ডায় কেন বাড়ে সাইনাস?
কম তাপমাত্রা, শুষ্ক আবহাওয়ায় শ্বাসনালির ভিতরে প্রদাহ বেড়ে যায়। তার উপর যদি দূষণের প্রকোপ বেশি থাকে এবং ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে, তা হলেও সাইনাসের সমস্যা বাড়তে পারে। সাধারণত নাকে, কপালে, নাকের ঠিক দু’পাশে অনেকগুলি গহ্বর থাকে। এই গহ্বরগুলিকে সাইনাস বলা হয়। এই গহ্বরগুলিতেও মিউকাস জমে থাকে। যদি কোনও কারণে এই গহ্বরগুলিতে মিউকাসের পরিমাণ বাড়ে বা তরল জমা হতে থাকে, তখন প্রদাহ শুরু হয়। জমা তরলে ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়ার বংশবৃদ্ধিও হয়, ফলে অ্যালার্জির সংক্রমণ ঘটে। তখন ঘন ঘন নাক বন্ধ, গলাব্যথা, মাথাব্যথা, এমনকি শ্বাসকষ্ট হতে দেখা যায়।
উপশমের উপায় কী?
অ্যান্টিবায়োটিক মুঠো মুঠো খেলে সাইনাস সারে না। বরং হিতে বিপরীত হয়। তাই নাক, গলায় ব্যথা, অ্যালার্জি, হাঁচি-কাশি বাড়লে চিকিৎসকের কাছে যাওয়াই শ্রেয়।
বাড়িতে গরম জলে ভেপার নিলে আরাম পেতে পারেন। রোজই ঘুম থেকে উঠে ও রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে জল গরম করে বাষ্প নিতে পারেন।
সাইনাস বাড়লে ঘন ঘন জ্বর আসতে পারে, চোখে ব্যথা হবে, মাথায় যন্ত্রণা হতে পারে। তাই এই সময়ে ঠান্ডা লাগানো যাবে না। বাইরে বেরোলে মাস্ক পরতে হবে, কান-গলা যতটা সম্ভব ঢেকে রাখুন।
নাক দিয়ে জল টানলে উপকার হতে পারে। এর জন্য জল ফুটিয়ে ঠান্ডা করে তাতে অল্প নুন মিশিয়ে নিন। দুই নাকেই এই জল টানতে হবে ও ছাড়তে হবে। এতে সাইনাসের পথ পরিষ্কার হবে। অতিরিক্ত মিউকাস বেরিয়ে যাবে।
শরীরকে আর্দ্র রাখতে বেশি করে জল ও তরল খাবার খেতে হবে। তুলসীপাতা ফোটানো চা, আদা-দারচিনি-লবঙ্গ ফুটিয়ে চা বানিয়ে খেতে পারেন। তেলমশলা দেওয়া খাবার কম খেতে হবে, বদলে নানা রকম মরসুমি সব্জি দিয়ে হালকা স্যুপ বানিয়ে খেতে পারেন।
এক চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার, হাফ চামচ হলুদ, সামান্য আদা কুচি, পাতিলেবু, সামান্য গোলমরিচ, তিন চার কোয়া রসুন জলে ফেলে দিন। জল ফুটে গেলে সেই মিশ্রণ আসতে আসতে চুমুক দিয়ে খান। এতে মধুও দিতে পারেন। সাইনাসের সঙ্গে লড়তে এই দাওয়াই বেশ কাজের।
অনেকেই বাজারচলতি নেজ়াল ড্রপ ব্যবহার করে থাকেন। এই ধরনের ড্রপ টানা তিন দিনের বেশি ব্যবহার করা ঠিক নয়। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।