Advertisement
E-Paper

বছরশেষের হুল্লোড়ে মাতুন, তবে চোখের সংক্রমণ থেকে সাবধান, কর্নিয়ার ক্ষতি করছে কনজাঙ্কটিভাইটিস

শীতের দিনে বাতাসে দূষিত কণার পরিমাণ বেড়ে যায়। ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া, ক্ষতিকর ছত্রাকদের চোখরাঙানিতেই চোখের মণির চারপাশে লাল রং ধরে। সেই সঙ্গে অনবরত জল পড়া, জ্বালা-যন্ত্রণা, পিচুটি, চুলকানির সমস্যা হয়। এই সময়ে চোখের সংক্রমণ থেকে সাবধানে থাকতে হবে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:৩৩
Why conjunctivitis more common in Winter

কনজাঙ্কটিভাইটিস বাড়ছে, ক্ষতি হচ্ছে কর্নিয়ারও, কী ভাবে সতর্ক হবেন? ছবি: ফ্রিপিক।

বড়দিনে ভিড়ের মধ্যে হেঁটেছেন নিশ্চয়ই। সামনেই বছর শেষ ও নতুন বছরের নানা অনুষ্ঠান রয়েছে। সেখানেও জমায়েত, লোকজনের ভিড় হবে। আনন্দ-হুল্লোড়ে যতই মাতুন, চোখের সংক্রমণ থেকে সাবধানে থাকতেই হবে। চারদিকেই কনজাঙ্কটিভাইটিস হচ্ছে। সম্প্রতি ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন’ (এনসিবিআই) এক গবেষণায় দাবি করেছে, এই শীতে বাতাসে দূষণের মাত্রা অস্বাভাবিক রকম বেশি। ফলে ব্যাক্টেরিয়া-ভাইরাসেরও বাড়বাড়ন্ত। কনজাঙ্কটিভাইটিস এমন পর্যায়ে পৌঁছোচ্ছে যে কর্নিয়ারও ক্ষতি করছে। চোখ লাল হয়ে ফুলে ওঠা, অনবরত জল পড়া, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিচ্ছে।

কতটা ভয়াবহ হয়ে উঠেছে কনজাঙ্কটিভাইটিস?

বাতাসে ভাসমান দূষণবাহী কণায় ভর করে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে বহুদূর। খুব বেশি ধুলোধোঁয়া আছে, এমন জায়গায় বেশি ক্ষণ থাকলে যেমন ফুসফুস আক্রান্ত হতে পারে, তেমনই ক্ষতি হতে পারে চোখের কনজাঙ্কটিভারও। বাতাসের কণায় ভর করে ভেসে বেড়ায় অনেক ভাইরাস, যার মধ্যে শক্তিশালী অ্যাডিনোভাইরাস চোখে সংক্রমণ ঘটায়। কর্নিয়ায় ছোট ছোট দানা তৈরি হয়। যার ফলে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়, চোখ দিয়ে অনবরত জল পড়তে থাকে, আঠালো তরল বার হয়, পিচুটি জমে যায় চোখে। একেই বলে কনজাঙ্কটিভাইটিস। কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, সংক্রমণ এমন পর্যায়ে পৌঁছোয় যে, কর্নিয়ায় ক্ষত বা ঘা হয়ে যায়। ফলে দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হতে থাকে।

অ্যালার্জিক কনজাঙ্কটিভাইটিসও উদ্বেগের। চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার জানাচ্ছেন, চোখ ফুলে ওঠে, চোখে চুলকানি, যন্ত্রণার পাশাপাশি হাঁচি, নাক থেকে অনবরত জল পড়ার মতো উপসর্গও দেখা যায়। চোখে বারে বারে জলের ঝাপটা দিয়েও লাভ হয় না। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ‘অ্যান্টি অ্যালার্জি’ বা ‘লুব্রিকেটিং আই ড্রপ’ ব্যবহার করতে হয়।

কী ভাবে সাবধানে থাকবেন?

কনজাঙ্কটিভাইটিস ভাইরাল রোগ, তাই একে আটকানোর তেমন কোনও উপায় নেই। বার বার হাত ধোয়া, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলে ঝুঁকি খানিকটা এড়ানো যায়। তবে একেবারেই এই রোগ হবে না, তা বলা যায় না। এই রোগ না হওয়ার কোনও ওষুধ কিংবা প্রতিষেধক নেই। তাই সাবধানতাই একমাত্র পথ।

চোখে সংক্রমণ হলে দিনে ৪-৫ বার ঈষদুষ্ণ গরম জলে এক চিমটে নুন দিয়ে সেই জলে তুলো ভিজিয়ে চোখ পরিষ্কার করতে পারেন। উষ্ণ জলে তোয়ালে ভিজিয়ে চোখের উপর ভাপ নিতে পারেন। তাতেও আরাম পাওয়া যাবে।

খুব বেশি ভিড়ে না যাওয়াই ভাল। বাইরে বেরোলে সানগ্লাস পরুন। অপরিষ্কার হাত চোখে দেবেন না।

যদি মনে হয় চোখ কড়কড় করছে, বালি পড়েছে বা চোখ থেকে আঠালো তরল বার হচ্ছে, তা হলে দেরি না করে চক্ষু চিকিৎসককে দেখাতে হবে।

চোখে জ্বালা বা চুলকানি হলে কনট্যাক্ট লেন্স পরবেন না। এতে সংক্রমণ আরও বাড়বে।

রোজ এমন খাবার খান, যাতে বেশি মাত্রায় ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট আছে। সবুজ শাকসব্জি, বাদাম, মাছ, গাজর, ব্রোকলি খেতে হবে। ভিটামিন সি আছে এমন ফল বেশি করে খেতে হবে। কমলালেবু, পেয়ারা, পেঁপের মতো ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন।

শরীরে জলের ঘাটতি হলেও চোখের সমস্যা বেড়ে যায়, তাই শরীরে জলের পর্যাপ্ত জোগান দিতে হবে। শীতকালেও দিনে আড়াই থেকে তিন লিটার জল খাওয়া জরুরি।

শীতের পোশাক, অর্থাৎ উল থেকেও কিন্তু অ্যালার্জি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই হয়তো চোখে সমস্যা হয় না। ত্বক থেকে তা ক্রমশ চোখে ছড়ায়।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy