মিল্কশেকের নাম শুনলেই বাড়ির খুদে থেকে বড় সকলের মুখে চওড়া হাসি চলে আসে। চলছে উৎসবের মরসুম। স্কুলে ইতিমধ্যেই বড়দিনের ছুটি পড়ে গিয়েছে। বাড়িতে খুদেরা থাকলেই রকমারি মিল্কশেক খাওয়ার বায়না ধরে। কখনও চকোলেট, কখনও কলা দিয়ে মিল্কশেক বানিয়ে দেন মায়েরা। তবে অনেকেই জানেন না, দুধ কলার এই যুগলবন্দি শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর।
পুষ্টিবিদেরা বলছেন, দুধ এবং কলা পুষ্টিকর দু’টি খাবার। কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম। কলা খেলে অনেক ক্ষণ পেট ভর্তি থাকে। অন্য দিকে, দুধে প্রোটিন, ভিটামিন, ক্যালশিয়াম রয়েছে ভরপুর মাত্রায়। কিন্তু দুধ আর কলা এক সঙ্গে খেলে তা পাচনক্রিয়ায় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। দুধে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ বেশি। তাই দুধ হজম করতে বেশ সময় লাগে। অন্য দিকে, কলার গ্লাইসেমিক ইনডেস্ক অনেকটাই বেশি। তাই কলা পরিপাক করতেও বিস্তর সময় লাগা স্বাভাবিক। ফ্যাট এবং শর্করা পরিপাক করতে গিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই বিপাকক্রিয়ার গতি শ্লথ হয়ে যেতে পারে। তাই যাঁদের হজমজনিত কোনও সমস্যা আছে, তাঁদের কলা দিয়ে তৈরি স্মুদি না খাওয়াই ভাল। এ ছাড়া বিপাকহার সংক্রান্ত সমস্যাও দেখা দিতে পারে দুধ এবং কলা একসঙ্গে খেলে।
যাঁদের ডায়াবিটিস রয়েছে, তাঁদের জন্য এই খাবারের জুটি অনেকটা বিষের মতোই কাজ করে। কারণ, কলায় রয়েছে গ্লুকোজ় ও ফ্রুক্টোজ়, আর দুধে রয়েছে ল্যাক্টোজ়। এগুলি আসলে শর্করারই বিভিন্ন প্রকার। তাই যাঁদের আগে থেকেই ডায়াবিটিস রয়েছে, তাঁরা বিপদে পড়তে পারেন। শিশুদের টাইপ ২ ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যেতে পারে।
ভারতীয় পরম্পরায় দুধের সঙ্গে শুধু কলাই নয়, যে কোনও ফলই মিশিয়ে খেতে বারণ করা হয়। যেমন দুধে লেবু মেশালে ছানা কেটে যায়। লেবুতে সাইট্রিক অ্যাসিড আর দুধে ল্যাক্টিক অ্যাসিড থাকে, দুই অ্যাসিড একে অপরের সঙ্গে বিক্রিয়া করে, তাই দুধ কেটে যায়। প্রায় সব ফলেই কোনও না কোনও অ্যাসিড থাকে, যেমন ম্যালিক অ্যাসিড, টারটারিক অ্যাসিড থাকে। তাই দুধের সঙ্গে কোনও ফল মেশালেই রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে টক্সিক বায়োপ্রোডাক্ট তৈরি হয়, যা খাওয়া বিপজ্জনক। ফল মেশানো স্মুদি বা মিল্কশেক খেলে শুধু পেটের সমস্যা নয়, ত্বকেরও সমস্যা হতে পারে।