মাত্র ১০০ গ্রাম! ওইটুকু ওজন বাড়তি হওয়ায় প্যারিস অলিম্পিক্সের ফাইনাল থেকে ছিটকে গেলেন কুস্তিগির বিনেশ ফোগাট। বিনেশকে ঘিরে অলিম্পিক্সে সোনাজয়ের স্বপ্ন দেখেছিল ভারত। সেই স্বপ্ন এ বারের মতো অধরা। কিন্তু কড়া ডায়েট, রাত জেগে শরীরচর্চা, চুল কেটে বাদ দেওয়ার পরেও তিনি প্রতিযোগিতায় নামার জন্য নির্ধারিত ওজনে ফিরতে পারলেন না কেন? দিনের এক এক সময়ে ওজন যন্ত্রে এক এক রকম ওজন দেখানোর কারণই বা কী?
অলিম্পিক্সের মতো প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে গেলে আলাদা প্রস্তুতি থাকে। সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে যে যে কারণে চট করে ওজন বেড়ে যেতে পারে, এ ক্ষেত্রে তেমনটা হওয়ার কথা নয়। এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলছেন, “খাবারের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে এমনটা হতে পারে। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার মানসিক চাপ, উদ্বেগ থেকেও এই ধরনের সমস্যা দেখা যায়। তবে তা খুব সামান্যই। বিনেশের ক্ষেত্রে ঠিক কী ঘটেছিল সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়।”
আরও পড়ুন:
ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে ভারতীয় দলের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে যে, কুস্তিতে মহিলাদের ৫০ কেজির ফাইনাল থেকে বিনেশ ফোগাট বাতিল হয়ে গিয়েছেন। ভারতীয় দলের পক্ষ থেকে সারা রাত ধরে চেষ্টা করা হয়েছিল বাড়তি ওজন কমানোর। কিন্তু আজ সকালে ৫০ কেজির থেকে কিছু গ্রাম বেশি ওজন হয়েছে ওঁর।’’
আরও পড়ুন:
প্রতিপক্ষ জাপানের ইউ সুসাকি, ইউক্রেনের ওকসানা লিভাচ এবং কিউবার ইয়ুসনেলিসকে হারানোর খেলায় অংশগ্রহণ করার আগে পর্যন্ত নিয়ম অনুযায়ী বিনেশের ওজন সঠিক ছিল। মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ বিনেশের ওজন কিছুটা বেশি দেখায়। সারা রাত না ঘুমিয়ে ঘাম ঝরানো, খাবার, পানীয় না খেয়েও বাড়তি ওজন কমেনি। উল্টে শরীরে জলের ঘাটতি হওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালেও ভর্তি করানো হয় বিনেশকে। চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, “রাতারাতি ওজন বৃদ্ধি করা বা ঝরানো দু’টিই শরীরের জন্য খারাপ। শুধু শরীরচর্চা আর ডায়েট করলে হবে না। সঙ্গে পর্যাপ্ত ঘুমেরও প্রয়োজন রয়েছে। রাতে ঘুমোনোর সময়েই সাধারণত ওজন ঝরে। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে ওজন মাপলে খানিকটা হলেও কম দেখায়। তা ছাড়া, প্রাতঃকৃত্যের পরেও দেহের ওজন মাপলে খানিকটা কম দেখাতে পারে।”
অর্থাৎ, যে কোনও মানুষেরই দিনের এক এক সময়ে এক এক রকম ওজন থাকতে পারে। কিন্তু বিনেশের ক্ষেত্রে ঠিক কী ঘটেছে, তা তদন্তসাপেক্ষ বিষয়।